দেশের চাহিদা মিটিয়ে চা রপ্তানির পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে : বাণিজ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত : জুন ৪, ২০২২ , ৯:১২ অপরাহ্ণ

ঢাকা, ব্রডকাস্টিং নিউজ কর্পোরেশন: বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, দেশের চাহিদা মিটিয়ে চা বিদেশে রপ্তানির পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। বাংলাদেশের চা এর মান উন্নত হবার কারণে বিশ্ববাজারে প্রচুর চাহিদা রয়েছে। দেশে চা এর উৎপাদন বাড়ছে, একই সাথে অভ্যন্তরীন চাহিদা বাড়ছে। সেজন্য প্রত্যাশা মতো চা রপ্তানি করা সম্ভব হচ্ছে না। ২০০৯ সালে দেশে চা উৎপাদন হতো ৬০ মিলিয়ন কেজি, ২০২১ সালে বেড়ে উৎপাদিত হয়েছে ৯৬ দশমিক ৫১ মিলিয়ন কেজি। তারপরও তেমন রপ্তানি করা সম্ভব হচ্ছে না। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরামর্শে দেশের উত্তরাঞ্চলে চা উৎপাদন শুরু হয়। ২০২১ সালে সেখানে ১৪ দশমিক ৫৫ মিলিয়ন কেজি চা উৎপাদিত হয়েছে। উত্তরাঞ্চলের পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম জেলায় এখন চা উৎপাদন হচ্ছে, এ অঞ্চলের মানুষ চা উৎপাদনে মনোযোগী হয়েছেন। সেখানে অনেক পতিত জমিতে চা উৎপাদন করা হচ্ছে। আজ দেশের উত্তরাঞ্চলে চা উৎপাদন না হলে বিদেশ থেকে চা আমদানি করতে হতো। চা এর উৎপাদন আমাদের আরও বাড়াতে হবে। এজন্য সরকার প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করছে। মন্ত্রী শনিবার ঢাকায় ওসমানী মিলনায়তনে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ টি বোর্ডের উদ্যোগে “২য় জাতীয় চা দিবস-২০২২” উদযাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ। এবারের জাতীয় চা দিবসের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে “চা দিবসের সংকল্প, সমৃদ্ধ চা শিল্প”। মন্ত্রী বলেন, চা এর নতুন জাত উদ্ভাবন, উৎপাদন বৃদ্ধি, নিলাম, বাজারজাতকরণসহ প্রয়োজনীয় সকল ক্ষেত্রে সরকার সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। দেশের মানুষ অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী হয়েছেন, ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে, ফলে দিন দিন চা এর চাহিদা বাড়ছে। চা শিল্পের সাথে জড়িত মানুষের জীবনযাত্রায়ও পরিবর্তন এসেছে। চা এর উৎপাদন বাড়াতে এবং রপ্তানি বৃদ্ধি করতে চা শিল্পের সাথে জড়িত সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী বলেন, চা আমাদের গুরুত্বপূর্ণ অর্থকরী ফসল। একসময় রপ্তানি ক্ষেত্রে আমাদের চা ছিল দ্বিতীয় স্থানে। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় পরাজিত শক্তি চা শিল্পের ব্যাপক ক্ষতি সাধন করেছিল। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান চা শিল্পকে নতুন করে গড়ে তোলার জন্য ব্যাপক কার্যক্রম হাতে নিয়েছিলেন। তারই ফলে আমাদের চা শিল্প আজ এ অবস্থানে এসেছে। চা শিল্পের রিটার্ন খুব তাড়াতাড়ি পাওয়া যায় না। একটি চা বাগান থেকে চা পাতা আহরণে সময় লাগে ৪ থেকে ৫ বছর। চা শিল্প থেকে উৎপাদন পেতে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়। এজন্য চা শিল্পের উন্নয়নের জন্য দীর্ঘমেয়াদের আর্থিক সহায়তা দরকার। উল্লেখ্য, এবছর দেশে দ্বিতীয়বারের মতো জাতীয় চা দিবস উদযাপিত হচ্ছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৫৭ সালের ৪ জুন থেকে ১৯৫৮ সালের ২৩ অক্টোবর পর্যন্ত টি বোর্ডের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর জন্মশতবার্ষিকীতে চা শিল্পে অসামান্য অবদান এবং চা বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে যোগদানের তারিখকে স্মরণীয় করে রাখতে ৪ জুন জাতীয় চা দিবস পালন করা হচ্ছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন এফবিসিসিআই’র প্রেসিডেন্ট মো. জসিম উদ্দিন, টি ট্রেডার্স এসোসিয়েশন অভ্ বাংলাদেশের সভাপতি ওমর হান্নান, বাংলাদেশীয় চা সংসদের সভাপতি এম শাহ আলম এবং অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ টি বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. আশরাফুল ইসলাম।

[wps_visitor_counter]