ঝিনাইদহে ছড়িয়েছে লাম্পি স্কিন ডিজিজ : দিশেহারা গরু খামারিরা

প্রকাশিত : সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২২ , ৮:৪৬ অপরাহ্ণ

হেলালী ফেরদৌসী, নিজস্ব প্রতিনিধি, ঝিনাইদহ, ব্রডকাস্টিং নিউজ কর্পোরেশন: জেলার ৬টি উপজেলায় ব্যাপকভাবে দেখা দিয়েছে ‘লাম্পি স্কিন ডিজিজ’ নামে প্রাণঘাতী এক রোগ। এতে সংক্রমিত হয়েছে অন্তত ১০ হাজার গরু। ইতোমধ্যে মারা গেছে প্রায় অর্ধশত গরু। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে খামারি ও কৃষকদের মধ্যে। প্রানীসম্পদ অফিস ও স্থানীয় পশু চিকিৎসকদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, ‘লাম্পি স্কিন ডিজিজ’-এ এখন পর্যন্ত জেলার অন্তত ১০ হাজার গরু আক্রান্ত হয়েছে। যার মধ্যে মারা গেছে অর্ধশত গরু।
ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার যাদপপুর গ্রামের সাহেব আলী। তার ৫টি গরুর মধ্যে ২টি ভুগছে ‘লাম্পি স্কিন ডিজিজ’ রোগে। গরুগুলোকে সুস্থ করতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। গত প্রায় ১ মাস তার চোখে ঘুম নেই। শেষ পর্যন্ত কি হবে তাও তিনি জানেন না। একই গ্রামের হাসনা বানু নামের এক গৃহবধূ এনজিও থেকে টাকা নিয়ে গরু কিনেছিলেন ৩টি। সংক্রমিত হয়েছে এর মধ্যে ১টি গরু। ঋণের কিস্তি পরিশোধের আগেই সংক্রমণে তিনি আজ দিশেহারা। কীভাবে এ রোগ থেকে পরিত্রাণ পাবেন তাও তিনি বুঝতে পারছেন না। জানা যায়, জেলায় তাদের মতো অনেকেই সংসারে সচ্ছলতা আনার আশায় গরু পালন করছেন বছরের পর বছর। কিন্তু হঠাৎ দেখা দেওয়া গরুর ‘লাম্পি স্কিন ডিজিজ’ রোগে সর্বস্বান্ত হয়ে যাচ্ছে পরিবারগুলো। চিকিৎসা করালেও শেষ পর্যন্ত মারা যাচ্ছে একের পর এক গরু। খামারি ও কৃষক জাহানারা বেগম, ছবেদা বেগম, ওয়ারেশ আলী, মখলেস শেখ জানান, এই রোগ খুব ভয়াবহ। প্রথমে গরুর গা গরম হয়ে যায়। তারপর শরীর-জুড়ে ছোট ছোট মাংসপিণ্ডের মতো ফুলে ওঠে। অনেকটা পক্সের মতো। কিছুদিন পর সেগুলো ফেটে রক্ত বের হয়। এ সময় গরু খাবার না খাওয়ায় রোগা হতে শুরু করে। স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দিলেও কোনও সুফল পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ তাদের। ঝিনাইদহ জেলা প্রানীসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মনোজিৎ কুমার সরকার, অসুস্থ প্রাণীটিকে প্রথমেই আলাদা করতে হবে। মশারি টানিয়ে রাখতে হবে যাতে মশা বা মাছি তার শরীরে না বসে। কেননা, মশা বা মাছি অসুস্থ গরুটিকে কামড় দিয়ে আবার যদি সুস্থ কোনও গরুকে কামড় দেয় তাহলেও সেটিও অসুস্থ হয়ে পড়বে।
তিনি আরও জানান, আমরা ডিপার্টমেন্ট থেকে ভ্যাক্সিনেশন শুরু করেছি। ৬ উপজেলার ঝিনাইদহ সদর, শৈলকুপা আর হরিণাকুন্ডু উপজেলায় এ রোধ বেশি ছড়িয়েছে।

[wps_visitor_counter]