ব্রডকাস্টিং নিউজ কর্পোরেশন: সিলেট, সুনামগঞ্জসহ উত্তরবঙ্গের দেশের প্রায় ১১টি জেলায় বন্যায় লাখ লাখ মানুষ পানি-বন্দী হয়ে অসহায় অবস্থায় মানবেতর জীবন যাপনে বাধ্য হয়ে মানবিক বিপর্যয়ের সম্মুখীন। বন্যা পরিস্থিতি দিন দিন অবনতি হচ্ছে। পানি-বন্দী এলাকায় বিশুদ্ধ খাবার পানি, শুকনো খাবার এবং আশ্রয়ের অভাবে মানুষ অবর্ণনীয় কষ্টের মধ্যে দিনযাপন করছেন। স্মরণকালের ভয়াবহ এই বন্যায় মানুষ অত্যন্ত অসহায় হয়ে পড়েছে। স্কুল, কলেজ, হাট-বাজার, হাসপাতাল বন্ধ, বিমান, রেল, মহাসড়কসহ সকল ধরনের যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। গ্যাস, বিদ্যুৎ, মোবাইল নেটওয়ার্ক ইত্যাদি সেবা প্রায় বন্ধ। চট্টগ্রাম মহানগরীতে অবিরাম বৃষ্টিপাতের কারণে সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় পুরো নগরী তলিয়ে গেছে। পাহাড় ধ্বস বেশ কিছু প্রাণহানিও ঘটেছে। এ অবস্থায় বন্যা উপদ্রুত এলাকায় ৫০ টাকার নৌকার ভাড়া ৫০ হাজারে, ১০ টাকার মোমবাতি ১০ টাকায়, ৫০ টাকার পাউরুটি ৫০০ টাকায় হাঁকা হচ্ছে। এ অবস্থায় ব্যবসায়ীদের সামাজিক দায়বদ্ধতার আওতায় ত্রাণ বিতরণের চেয়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্য ও সেবায় জনগণের পকেট কাটার উৎসব বন্ধের আহবান জানিয়েছেন দেশের ক্রেতা-ভোক্তাদের স্বার্থ সংরক্ষণকারী জাতীয় প্রতিষ্ঠান কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম বিভাগ ও মহানগর কমিটি।
সোমবার (২০ জুন) বন্যা উপদ্রুত এলাকায় খাদ্য ও নিত্যপন্যের অতিরিক্ত মূল্য আদায়ের খবরে উদ্বেগ প্রকাশ করে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে ক্যাব কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন, সাধারন সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, মহানগর সভাপতি জেসমিন সুলতানা পারু, সাধারন সম্পাদক অজয় মিত্র শংকু, দক্ষিণ জেলা সভাপতি আলহাজ্ব আবদুল মান্নান প্রমুখ উপরোক্ত দাবি জানান। বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, একশ্রেণীর অসাধু গুটিকয়েক ব্যবসায়ী মানুষের সংকটকে পুঁজি করে জনগণের পকেট কেটে কোটিপতি হবার বাসনায় উন্মাদ হয়ে যান। তখন মানবতা পেছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে যায়। সেকারণে আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা অক্সফাম এর তথ্য মতে বিশ্বে করোনা মহামারী-কালে ধনী ব্যবসায়ীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। “দুর্যোগ মহামারী কারো জন্য পৌষ মাস আবার কারো জন্য সর্বনাশ”। দেশে করোনা মহামারী-কালেও জীবন রক্ষাকারি ওষুধের দুষ্প্রাপ্যতা ও অগ্নিমূল্য, ক্লিনিকে চিকিৎসায় অতিরিক্ত অর্থ আদায়সহ অক্সিজেন সিলিন্ডারের অগ্নিমূল্য আদায়ের বিষয়টি জাতি এখনও ভুলতে পারেনি। নেতৃবৃন্দ আরও বলেন যে কোন পূজা, পার্বণ, ঈদ উৎসবে আমাদের ব্যবসায়ীরা যেভাবে অতিরিক্ত-মূল্য আদায়ে একযোগে সোচ্চার হন তা কতটুকু নৈতিক ও যুক্তিসংগত? আন্তর্জাতিক বাজারের দোহাই দিয়ে পণ্য-মূল্যের দাম একযোগে বাড়ালেও আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমার পরে “আমার উল্টো সুর বেশী দামে কেনা” এ সমস্ত বিষয়গুলো কোনধরনের মানবিক ও নৈতিকতা-পূর্ণ। তাই সাধারণ ভোক্তাদেরকে সংকট-কালীন সময়ে জিম্মি করে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করে সংকটাপন্ন ও বন্যাদুর্গত মানুষের মাঝে মানবিক সহায়তা প্রদানের পরিবর্তে ব্যবসায়ী নীতি ও নৈতিকতা মেনে লাভ করে দেশের ব্যবসায়ী সমাজ, বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠন, কর্পোরেট হাউসসহ দেশের বিত্তবানদের বন্যার্তদের সাহায্যে এগিয়ে আসার জন্য আহ্বান জানান। সংবাদ বিজ্ঞপ্তির।