নারী দিবসে জাতীয় মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যানকে সম্মাননা

প্রকাশিত : মার্চ ৮, ২০২৩ , ৯:৩৭ অপরাহ্ণ

হেলালী ফেরদৌসী, নিজস্ব প্রতিনিধি, ঝিনাইদহ, ব্রডকাস্টিং নিউজ কর্পোরেশন: আন্তর্জাতিক নারী দিবসে জাতীয় মহিলা সংস্থা ঝিনাইদহ জেলা ইউনিট চেয়ারম্যান দীপ্তি রহমানকে সম্মাননা দিল হরিণাকুন্ডু উপজেলা পরিষদ। বুধবার দুপুরে উপজেলা পরিষদ সম্মেলন-কক্ষে এক জনাকীর্ণ সমাবেশে দীপ্তি রহমানকে ক্রেস্ট, সার্টিফিকেট ও সম্মাননা স্মারক তুলে দেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সুস্মিতা সাহা। “শেখ হাসিনার দর্শন মানবতার উন্নয়ন,শেখ হাসিনার বারতা নারী পুরুষ সমতা,‘ডিজিটাল প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন, জেন্ডার বৈষম্য করবে নিরসন’সময় এখন নারীর:উন্নয়নে তারা,বদলে যাচ্ছে গ্রাম-শহরের ধারা কর্মজীবন ধারা, এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে আজ বুধবার (৮ মার্চ) ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডুতে পালিত হয়েছে আন্তর্জাতিক নারী দিবস।
আন্তর্জাতিক নারী দিবসের অনুষ্ঠানে বুধবার দুপুরে ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু উপজেলা প্রশাসন এবং উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে জাতীয় মহিলা সংস্থা ঝিনাইদহ জেলা শাখার চেয়ারম্যান ঝিনাইদহ জেলা মহিলা শ্রমিক-লীগের সভাপতি ও হরিণাকুন্ডুর কৃতি-সন্তান জেলা নারী সমাজ কল্যাণ সমিতির সভাপতি ও জেলার শ্রেষ্ঠ জয়িতা পুরস্কার বিজয়ী দীপ্তি রহমানকে জমকালো সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে। উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে আন্তর্জাতিক নারী দিবস ২০২৩ উপলক্ষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুস্মিতা সাহার সভাপতিত্বে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রেশমা খাতুন, হরিণাকুন্ডু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম, উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা উজ্জল কুমার কুণ্ডু, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা শেউলী রানী বিশ্বাস, পুলিশ উপ-পরিদর্শক মনিরা খাতুন প্রমুখ। সালেহা খাতুন মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ জামাল উদ্দিনের সঞ্চালনায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মুন্সী ফিরোজা সুলতানা। এ সময় বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি অফিস প্রধান,ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান-গন, সুশীল সমাজের সদস্য, গণমাধ্যম-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। ইউএনও সুস্মিতা সাহা এবং আলোচকরা বলেন, আমাদের সমাজে কণ্যাশিশুরা জন্মের পর থেকেই তার পরিবার, বিশেষ করে মায়ের হাতে প্রথম বঞ্চনার শিকার হয়। বালক শিশুর মত পরিবারের যত্ন, খাবার, পোশাক এমনকি মানসিক মর্যাদাটুকু থেকেও তারা বঞ্চিত হয়। পরিবারের সদস্যরা বিশেষ করে তার মা মনে করেন, বড় হলেই মেয়েটি তা পথের কাঁটা হবে । তাই যত দ্রুত সম্ভব অল্প বয়সেই বসিয়ে দেয় বিয়ের পিঁড়িতে। আর এতেই তার যত সর্বনাশ যা রোধ করার মত অবস্থা আর থাকে না। অথচ, শুধু দেশেই নয়, আমাদের নারীরা আজ বিদেশেও তাদের প্রতিভার স্বাক্ষর রাখছেন, দেশের মুখ উজ্জ্বল করছেন। তাই নারী শিশুদের বোঝা না ভেবে তাদের উপযুক্ত মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে পারলেই দেশে একদিন নারী-পুরুষের সমতার সমাজ প্রতিষ্ঠা হবে। এজন্য নারী-পুরুষ সবাইকে এগিয়ে আসার আহবান জানান তারা। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আগে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে উপজেলা প্রশাসন, উপজেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর এর যৌথ আয়োজনে হরিণাকুন্ডুতে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ উপলক্ষে বুধবার সকালে হরিণাকুন্ডু উপজেলা প্রশাসনের কার্যালয়ের সামনে থেকে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। উপজেলা শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষের সামনে গিয়ে শেষ। পরে উপজেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুস্মিতা সাহা’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। নারী দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় হরিণাকুন্ডু উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুস্মিতা সাহা বলেন, নারী-পুরুষের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় গড়ে উঠেছে আজকের পৃথিবী। আধুনিক বিশ্বে নারী-পুরুষ সমান অধিকার নিয়ে একই সঙ্গে সব স্তরে কাজ করছে। তবে নারীর ন্যায্য অধিকার নিয়ে কর্মস্থলে সফলভাবে কাজ করতে পারার পেছনে রয়েছে এক সাহসী সংগ্রামের ইতিহাস।ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে নারী-পুরুষ সবাইকে সম্মিলিতভাবে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।
উল্লেখ্য: ১৮৫৭ সালের কথা। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে সুতা কারখানার নারী শ্রমিকরা তাদের কাজের সময় ১২ ঘণ্টা থেকে ৮ ঘণ্টায় কমিয়ে আনার দাবি এবং বৈষম্যহীন ন্যায্য মজুরি আদায়ের জন্য পথে নামেন।

[wps_visitor_counter]