ইয়াকুব নবী ইমন, নিজস্ব প্রতিনিধি, নোয়াখালী, ব্রডকাস্টিং নিউজ কর্পোরেশন: নোয়াখালী সদর উপজেলার পশ্চিম মান্দারতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রীদের শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছে প্রধান শিক্ষকের এ ঘটনা ষড়যন্ত্র বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান শিক্ষক। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যকর বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনা তদন্তে তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ফেরদৌসী বেগম। কয়েকটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লেও ঘটনার অনেকদিন অতিবাহিত হলেও প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা বলে জানান এলাকাবাসী। ঘটনার প্রতিবাদ করায় স্থানীয় এক যুবককে চাঁদাবাজিসহ মামলায় ফাঁসানো হয়েছে বলেও জানান স্থানীয়রা। গেলো সেপ্টেম্বরে মাসে এসব ঘটনা স্কুলে ঘটে বলে জানান ভুক্তভোগী ছাত্রী ও স্থানীয়রা। স্থানীয় আবদুর রশিদ জানান, প্রধান শিক্ষক রসূল আমিন বাহার প্রভাবশালী হওয়ায় সবাইকে ম্যানেজ করে ঘটনা ধামাচাপা দিচ্ছে। যে যে ছাত্রীরা প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে তাদের বাবা- মা ও তাদের হুমকি ধমকি দিচ্ছে। বিভিন্ন ভয়-ভীতি দেখিয়ে এসব সত্য কথা না বলার জন্য ছাত্রী ও অভিভাবকের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। প্রকৃত সত্য ঘটনা আড়াল করে ভিন্নখাতে নেওয়ার চেষ্টা করছে। আমি প্রতিবাদ করেছি তাই উল্টো আমার নামে সুধারাম থানায় চাঁদাবাজি মামলা করেছে। তবে সেদিন স্কুলে আসা ঘটনা দেখা ছাত্রী জানান, সেদিন সে ও তার ভাইসহ স্কুলে এসেছিলো। ক্লাসে ঢুকে সেই ভুক্তভোগী ছাত্রীর গায়ের জামার ভিতরে হেড স্যারের হাত ছিলো বলে জানান এ ছাত্রী। পরে তাদেরকেও এ ঘটনা কাউকে না জানার জন্য বলে। এসব কথা না বলার জন্য বাড়ি থেকে নিষেধ আছে বলে জানান এ ছাত্রী। ভুক্তভোগী অপর ছাত্রী জানান, প্রতিদিনের মত সে স্কুলে এসেছিলো। ছাত্রছাত্রী না থাকায় হেড স্যার জামার ভিতর দিয়ে স্পর্শকাতর জায়গাগুলোতে হাত দেয়। বিষয়টি কাউকে না জানার জন্য স্যার বলে। পরে এ ঘটনা তার দুই ক্লাসমেট দেখে বলেও মন্তব্য করেন। এছাড়া অপর এক ভুক্তভোগী ছাত্রী জানান, হেড স্যার অপকর্ম করে। গায়ে ও বুকে হাত দেয়। শরীরের নিচের স্পর্শকাতর জায়গায় হাত দেওয়ার চেষ্টা করে। বাড়িতে তার বাবা মাকে বিষয়টি জানিয়েছে। পরে তার বাবা মা স্থানীয় মেম্বারকে জানায়। তাকে এখন আর স্কুলে যেতে দেয় না তার বাবা মা। এ বিষয়ে মান্দারতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রসুল আমিন বাহারের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, এ ধরনের কোনও ঘটনাই ঘটেনি। তাকে হেনস্তা ও সামাজিকভাবে সম্মান ক্ষুণ্ণ করার জন্য এসব কথা পরিকল্পিতভাবে রটানো হয়েছে। জায়গা সম্পত্তি নিয়ে ঝামেলা কারণে কয়েকজন লোক তারা এসব পরিকল্পনা করছে। বরিশালের এক মামলা দিয়েও তাকে হয়রানি করিয়েছে। যারা এসব রটাচ্ছে তারা চাঁদা চেয়েছিলো বলেও জানান তিনি। এক পর্যায়ে এ শিক্ষক বলেন অনেক সাংবাদিক তাকে ফোন দিয়ে জ্বালা যন্ত্রণা করছে। এর উপর আর জ্বালা যন্ত্রণা নাই। কত নাম্বার থেকে ফোন দেয়। ফোন ধরে তিনি বলেন সারা বাংলাদেশ থেকে আপনারা ব্যবসা পাতিয়েছেন। নোয়াখালী প্রেসক্লাব থেকেও এক সাংবাদিক ফোন দিয়েছিলো। এসব ঘটনা পরিকল্পিত ও সাজানো বলে মন্তব্য করেন এ প্রধান শিক্ষক। এ বিষয়ে কালাধরপ ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য তাহেরের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান, ঘটনাটি এক ছাত্রীর মা, বাবা তাকে জানান।পরে তিনি চেয়ারম্যানকে বিষয়টি অবগত করেন। ছাত্রীদের মা বাবার সাথে ঘটনার সমাধানের কথা বললে তারা এড়িয়ে চলেন বলে জানান তিনি।
নোয়াখালী সদর উপজেলার ৯নং কালাধরপ ইউনিয়ন পরিষদ সেলিম চেয়ারম্যানের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান, ঘটনাটি তিনি শুনেছেন। অভিভাবকরা বিষয়গুলো নিয়ে সমাধানের জন্য আর যোগাযোগ করছে না। তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও ছেড়ে দেওয়া ও সম্মান ক্ষুণ্ণ হওয়ার প্রধান শিক্ষকের করা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পুলিশ পরিদর্শক তৃণব বড়ুয়া বলেন,মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে।আদালতের মাধ্যমে সিআইডিতে তদন্ত করার জন্য আর্জি করা হবে। এ বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ফেরদৌসী বেগম জানান, ঘটনা তদন্তে তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানানো হবে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।