নোয়াখালীতে ইটভাটা দখলমুক্ত করতে জেলা প্রশাসককে হাইকোর্টের নির্দেশ

প্রকাশিত : ফেব্রুয়ারি ৯, ২০২৩ , ১১:০৬ অপরাহ্ণ

ইয়াকুব নবী ইমন, নিজস্ব প্রতিনিধি, নোয়াখালী, ব্রডকাস্টিং নিউজ কর্পোরেশন: নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার লাউতলী এলাকায় মামুনুর রশিদের মালিকানাধীন হারুন ব্রিকস ম্যানুফাকচারিং নামের প্রতিষ্ঠানটি জোরপূর্বক দখল করে তামান্না ব্রিক ফিল্ড নামে পরিচালনা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে তিনি হাই কোর্টের শরণাপন্ন হলে হাইকোর্ট ইটভাটাটি অবৈধ দখলমুক্ত করতে নোয়াখালী জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দিয়েছেন। মামলা সূত্রে জানা যায়, রসুলপুর ইউনিয়নের ইয়ারপুর গ্রামের হারুনুর রশীদের পুত্র মামুনুর রশিদ গত ১৭-০৮-২০০৭ ইং তারিখ আব্দুল্লাহ-আল- মামুন এর কাছ থেকে নগদ ১০ লক্ষ টাকার বিনিময়ে লাউতলীতে অবস্থিত একটি পরিত্যক্ত ইট ভাটা ক্রয় করেন। এরপর বিগত ২২-০৬-২০১০ ইং তারিখ তিনি পরিবেশ অধিদপ্তর, নোয়াখালী জেলা কার্যালয় থেকে পরিবেশ ছাড়পত্র নং পরিবেশ/চ বি ছাড়পত্র- ১২৬৯৯/২০০৮/৪২৬৮ গ্রহণ করেন এবং বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস এন্ড টেস্টিং ইন্সটিটিউশন হতে আবেদন এর প্রেক্ষিতে বিএসটিআই লাইসেন্স নং- সি- ১৩৭৯/জি-১৮/২০১২ প্রাপ্ত হয়ে জেলা প্রশাসক এর নিকট ইট পোড়ানোর লাইসেন্স এর জন্য আবেদন করেন। উক্ত আবেদনের প্রেক্ষিতে গত ১৬-০৭-২০১৪ ইং তারিখে মামুনুর রশিদ ইট পোড়ানোর লাইসেন্স প্রাপ্ত হন। যার লাইসেন্স নং-১২০/২০১৪। একই সাথে উক্ত ইট ভাটা পরিচালনার জন্য স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ট্রেড লাইসেন্স নেন তিনি। উক্ত লাইসেন্স প্রাপ্তির পর মামুনুর রশিদ এই পরিত্যক্ত ইট ভাটাটিকে আধুনিক পরিবেশ বান্ধব জিকজ্যাক ভাটায় রূপান্তরিত করে মেসার্স হারুন ব্রিকস ম্যানুফাকচারিং নামে পরিচালনা এবং পোড়ানোর কাজ শুরু করেন। তারপর ইট ভাটাসহ জমি ইজারা নবায়ন করে ভূমি উন্নয়ন কর, খাজনা ও যাবতীয় আয়কর, ভ্যাট, বিদ্যুৎ বিল মামুনুর রশিদ নিজ নামে পরিশোধ করে ব্যবসা পরিচালনা করা অবস্থায় মোঃ আবু তাহের, মোঃ আব্দুর রব, মোঃ মোস্তফা পরস্পর যোগসাজশে অন্যায় ভাবে ভয় ভীতি দেখিয়ে মামুনুর রশিদকে উক্ত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে উৎখাত করে বেদখল করে নেয়। শুধু তাই নয়, তারা ইট ভাটা পরিচালনার কোন ধরনের পরিবেশ ছাড়পত্র, জেলা প্রশাসকের নিকট হতে প্রাপ্ত ইট পোড়ানোর লাইসেন্স ব্যতীত অন্যায় ভাবে মামুনুর রশিদের নামের বিদ্যুৎ সংযোগ ব্যবহার করে অবৈধ উপায়ে ব্যবসা পরিচালনা করছে এবং যা ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন ২০১৩ (সংশোধিত ২০১৯) এর ধারা ৪ এর পরিপন্থী। এদিকে মামুনুর রশিদ এ নিয়ে হাইকোর্টে রিট পিটিশন নং-৭০৫/২০২৩ইং করলে আদালত বিষয়টি আমলে নিয়ে উক্ত ৪ ধারা মতে আপাতত বলবত অন্য কোনও আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, ইটভাটা যে জেলায় অবস্থিত সেই জেলার জেলা প্রশাসকের নিকট হতে লাইসেন্স গ্রহণ ব্যতিরেকে কোনও ব্যক্তি ইটভাটা স্থাপন ও ইট প্রস্তুত করিতে পারিবে না বলে জেলা প্রশাসক বরাবর আদেশ জারী করেন। এমতাবস্থায় পরিবেশ ছাড়পত্র ও ইট পোড়ানোর লাইসেন্স বিহীন আইনের ব্যত্যয় ঘটিয়ে ইট ভাটাটির কার্যক্রম চলতে থাকলে পরিবেশ ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হওয়ারও আশঙ্কা রয়েছে। এমতাবস্থায় লাইসেন্স বিহীন ইট ভাটাটির কার্যক্রম সম্পূর্ণ রূপে স্থগিত করে, বৈধ লাইসেন্সধারী মামুনুর রশিদকে ভাটা বুঝিয়ে দেয়াসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশন দেন আদালত। এদিকে হারুন ব্রিকস ম্যানুফাকচারিং এর মালিক মামুনুর রশিদ জানান, তারা আমার হারুন ব্রিকস ম্যানুফাকচারিং ব্রিক ফিল্ডটি দখল করে নাম পরিবর্তন করে এখন তামান্না ব্রিক ফিল্ড নাম দিয়ে অবৈধ ব্যবসা করছে। আমি ন্যায় বিচার চাই। অপরদিকে এ বিষয়ে কথা বলতে প্রধান অভিযুক্ত আবু তাহেরকে মোবাইলে কল করলেও পাওয়া যায়নি।

[wps_visitor_counter]