সরকারি ঘর দেয়ার নামে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

প্রকাশিত : জুন ৬, ২০২৩ , ১১:১৫ অপরাহ্ণ

ডিজার হোসেন বাদশা, নিজস্ব প্রতিনিধি, পঞ্চগড়, ব্রডকাস্টিং নিউজ কর্পোরেশন: পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় সরকারি ঘর দেয়ার নামে প্রতারণা করার অভিযোগ উঠেছে সুইটি নামে এক নারীর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় অবৈধ ভাবে প্রতারণা করে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে তাকে অবরুদ্ধ করেছে স্থানীয়রা। সোমবার (০৫ জুন) সন্ধ্যায় পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার মাঝিপাড়া শালবাহান রোড এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটে। সুইটি তেঁতুলিয়ার সদর ইউনিয়নের সাহেবজোত গ্রামের মোহাম্মদ আলীর মেয়ে।
সূত্রে জানা গেছে, মাঝিপাড়া এলাকার স্থানীয় দুইটি পরিবারকে সরকারি ঘর পাইয়ে দেয়ার কথা বলে ৬০ হাজার টাকা ও সরকারি খাস জমি বন্দোবস্ত এবং জমির কাগজ ঠিক করে দেয়ার কথা বলে বিভিন্ন সময় প্রতারণা করে বিভিন্ন উপায়ে প্রায় ৪ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। টাকা নেয়ার পর ভুয়া কাগজ হাতে ধরিয়ে দিয়ে কোনো কাজ না করায় পুনরায় টাকা চাইতে গেলে তাকে অবরুদ্ধ করে স্থানীয়রা। খবর পেয়ে প্রতারণার শিকার আরেক ভুক্তভোগী উপজেলার কালান্দিগছ এলাকা থেকে ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে অভিযোগ করলে সুইটি নামে ওই নারী ভুক্তভোগী যুবকে সজোরে থাপ্পড় মারে। পরে স্থানীয়রা জাতীয় কল সেবা ৯৯৯- এ ফোন দিয়ে তেঁতুলিয়া মডেল থানা পুলিশকে অবহিত করলে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে। পরে সুইটি নামের ওই নারীর জবানবন্দি নিয়ে ছেড়ে দিন। ভুক্তভোগী মাঝিপাড়া এলাকার মৃত নজরুল ইসলামের স্ত্রী আলেমা অভিযোগ করে বলেন, সুইটি আমাদের মত সহজ সরল মানুষদের ফাঁসিয়ে টাকা লুট করে নিচ্ছে। এখন পর্যন্ত প্রায় ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা নিছে সে। সর্বশেষে সরকারি ঘর দেয়ার নামে ৩০ হাজার টাকা নিছে। এখন কোন কিছু দিচ্ছে না, উল্টো আবার টাকা নেয়ার জন্য বাড়িতে আসছে। এ সময় ক্ষিপ্ত হয়ে সে আমাদের উপর হামলা করে। একই অভিযোগ করে উপজেলার ভজনপুর ভেলুপাড়া এলাকার মৃত আলিমদ্দিনের ছেলে নিজাম। মাঝিপাড়া এলাকার মৃত মফিজুলের ছেলে সুজন বলেন, গ্রামের সাধারণ মানুষকে ফাঁদে ফেলে প্রতারণা করে দিনের পর দিন টাকা লুট করে খাচ্ছে সুইটি। কেও কিছু বললে বিভিন্ন রকম ভয় দেখাচ্ছে। তার এই আচরণের শিকার অনেক মানুষ। তাকে দ্রুত আইনের আওতায় আনা না হলে অনেক মানুষের সর্বনাশ হবে। এর আগে অবরুদ্ধের খবর পেয়ে রাতেই গণমাধ্যম কর্মীরা ঘটনাস্থলে ছুটে গেলে এসময় ওই নারী অর্থ আত্মসাতের বিষয়টি অস্বীকার করে নিজেকে তেঁতুলিয়া সাব রেজিস্ট্রি অফিসে কর্মরত সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে পরিচয় দেন। একই সময় ওই নারী স্থানীয়দের উপর চড়াও হয়ে মার মুখি ও খারাপ আচরণ শুরু করে। এদিকে মঙ্গলবার (০৬ জুন) তেঁতুলিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে গিয়ে সুইটির হামলার শিকার হয়েছে ভুক্তভোগী আলেমা বলে আরো অভিযোগ উঠেছে। তেঁতুলিয়া সাব রেজিস্টার সিরাজুল ইসলাম এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাংবাদিকদের জানান, নকল নবিশ পদ-ধারী সুইটি কোনো সরকারি কর্মচারী নয়। সুইটির বিরুদ্ধে অনেক প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে। তাই তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এদিকে তেঁতুলিয়া মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জাহাঙ্গীর আলম বলেন, খবর পেয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে ওই নারীকে সেখান থেকে উদ্ধার করে বাড়ি পাঠানো হয়েছে। ওই নারীর বিরুদ্ধে এর আগেও অনেক অভিযোগ পাওয়া যায়। তেঁতুলিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু সাঈদ চৌধুরী বলেন, এ বিষয়ে থানায় এখন পর্যন্ত কেও অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

[wps_visitor_counter]