সনজিত কর্মকার, চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রতিনিধি, ব্রডকাস্টিং নিউজ কর্পোরেশন:চুয়াডাঙ্গার জীবননগর টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজের কার্যক্রম চালু হওয়ায় এ অঞ্চলের শিক্ষা ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আসতে শুরু করেছে। কারিগরি ও সাধারণ শিক্ষা গ্রহণ করতে পারায় শিক্ষার্থীরা এখানে লেখাপড়া করতে আগ্রহ দেখাচ্ছে। বিশ্বের সাথে তাল-মিলিয়ে বর্তমান সরকার দক্ষ জনশক্তি তৈরির লক্ষ্যে কারিগরি শিক্ষা ব্যবস্থা তৃণমূল পর্যায়ে নিতে কাজ করছে। চুয়াডাঙ্গা-জীবননগর মহাসড়কের মনোহরপুরে দেড় একর জমির উপর গড়ে উঠেছে জীবননগর টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ। এখানে রয়েছে দৃষ্টিনন্দন ৫ তলা ২৫ টি কক্ষ বিশিষ্ট একাডেমিক ভবন, এ ভবনের প্রতিটি ফ্লোরে রয়েছে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য পৃথক ওয়াশ ব্লকসহ উভয় পাশে অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা, ১৮ কক্ষের ৪ তলা বিশিষ্ট প্রশাসনিক ভবন ও ১ তলা বিশিষ্ট সার্ভিস সেড। ২০২১ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি ১০ম শ্রেণীর ১২ জন ছাত্র নিয়ে জেনারেল মেকানিক্স ট্রেডে এ প্রতিষ্ঠানের একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয়। বর্তমানে ৬ষ্ঠ থেকে ৮ম শ্রেণী পর্যন্ত সাধারণ শিক্ষা ও নবম শ্রেণীতে কারিগরি শিক্ষা চালু রয়েছে। শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৩৬১ জন। এর মধ্যে সাধারণ শিক্ষায় ২০৭ জন ও কারিগরি শিক্ষায় ১৫৪ জন অধ্যয়নরত আছে। প্রতিষ্ঠানে আছে আইটি বেসিস, জেনারেল ইলেক্ট্রনিক্স, ওয়েল্ডিং ও মেশিন অপারেশন ট্রেড। ১৩টি ল্যাবে আধুনিক যন্ত্রপাতি দিয়ে কর্মদক্ষতা অর্জনে শিক্ষকরা কাজ শেখাচ্ছেন ছাত্র-ছাত্রীদের। কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে কর্মদক্ষ করে তোলা হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। এখানে ছাত্র-ছাত্রীদের উপবৃত্তি প্রদান ও বিনা খরচে পাঠদানের ব্যবস্থা রয়েছে। জীবননগর টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থী তৃষ্ণা সুলতানা ইয়াসমিন জানান, এ অঞ্চলে এরকম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হওয়ায় আমরা খুশি। এখান থেকে সাধারণ শিক্ষার পাশাপাশি হাতে কলমে কারিগরি শিক্ষায় দক্ষ হয়ে দেশের জন্য অনেক অনেক অবদান রাখতে চায়।
জীবননগর টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজের বাংলা বিভাগের ইন্সট্রাক্টর ইউনুচ আলী জানান, কারিগরি শিক্ষা নিয়ে বেকারত্ব দূর করা সম্ভব। বহির্বিশ্বের সাথে তাল-মেলাতে কারিগরি শিক্ষার বিকল্প নেই। জীবননগর টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজের অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) প্রকৌশলী মো. ইমরুল কাদির জানান, এখানে সব ধরনের শিক্ষার্থীরা শিক্ষার পাশাপাশি কারিগরি শিক্ষা গ্রহণ করছে। এই প্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষা নিয়ে কেই উদ্যোক্তা হবে, কেউ উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হবে, কেউ চাকুরী করবে, আবার কেউ বিদেশে যাবে। সেখান থেকে উপার্জন করে এদেশে রেমিট্যান্স পাঠাবে। সেই রেমিট্যান্সে আমাদের দেশ আরো স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে সমৃদ্ধি দিকে এগিয়ে যাবে। তিনি আরও জানান, দৃষ্টিনন্দন জীবননগর টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ নির্মাণ কাজে ব্যয় হয় ১৮ কোটি টাকা। বাংলাদেশ কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর বাস্তবায়িত এ প্রকল্পের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর।