হেলালী ফেরদৌসী, নিজস্ব প্রতিনিধি, ঝিনাইদহ, ব্রডকাস্টিং নিউজ কর্পোরেশন: ঝিনাইদহ সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক সিরাজুল কবির জুড়োন এর বিরুদ্ধে বহু-নির্বাচনী পরীক্ষার হলে ১০ম শ্রেণির ছাত্র মোঃ রিদওয়ানুল ইসলাম সম্রাটকে বেপরোয়া পেটানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার (২০অক্টোবর)ধর্ম পরীক্ষার দিন সাড়ে বারটার সময় সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। আহত শিক্ষার্থী মোঃ রিদওয়ানুল ইসলাম সম্রাট সদর উপজেলার আরাপপুর এলাকার মোঃ রবিউল ইসলাম ছেলে।এ ঘটনায় ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক বরাবর আহত ছাত্রের বাবা শিক্ষককে অভিযুক্ত করে লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযোগ সূত্রে এবং শিক্ষার্থীর বাবা’র নিকট থেকে জানা গেছে,শিক্ষার্থী মোঃ রিদওয়ানুল ইসলাম সম্রাট ঝিনাইদহ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির একজন নিয়মিত ছাত্র এবং তার ক্লাস রোল নং- ০৯ ও শাখা ‘খ’, শিফট-দিবা। গত ইং ২০/১০/২০২২ তারিখ বৃহস্পতিবার অত্র বিদ্যালয়ের রুম নং ২০৩ এ ধর্ম পরীক্ষার দিন অনুমান ১২:৩০ মিনিটের সময় বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক সিরাজুল কবির জুড়োন পরীক্ষার শেষ ঘন্টা দিয়ে দিলে উক্ত শিক্ষক জুড়োন শিক্ষার্থীর নিকট থেকে পরীক্ষার খাতা নিতে আসলে তখন ছাত্র বলে স্যার আমার একটা সৃজনশীল প্রশ্ন ‘সুন্নত কাকে বলে’ প্রশ্নের উত্তর লিখতে বাকী আছে। তখন উক্ত স্যারের নিকট বলে স্যার ১০ সেকেন্ড মত সময় লাগবে বলে ছাত্র উত্তরটি লিখে দিতে চাই। তখন উক্ত স্যার চুপ থাকে, কোন কথা না বলায় শিক্ষার্থী উত্তর লিখতে শুরু করে। ঠিক তখনিই শিক্ষক জুড়োন ছাত্রের নিকট থেকে পরীক্ষার খাতা লেখাবস্থায় টান দিয়ে নিতে গিয়ে ছিঁড়ে ফেলেন। তখন শিক্ষক সিরাজুল কবির জুড়োন ছাত্রকে বলে তুই খাতা ছিঁড়লি ক্যান এবং শিক্ষক খাতার ছেঁড়া অংশটুকু নিয়ে ফেলে দেবার জন্য হাতের মধ্যে মোচড়াতে থাকে। শিক্ষক ছাত্রকে দোষারোপ করার জন্য তার মাথায় পর পর ৬/৭টি বেপরোয়া ভাবে চর মারে। ঘটনার দিনই সেসময় ৩০ মিনিটের বহু-নির্বাচনী পরীক্ষা ছিল কিন্তু উক্ত ছাত্রের পরীক্ষায় ৬/৭ মিনিট দেরি হয়ে যাওয়ার কারণে ৩০ মিনিটে ৩০টি উত্তর দিতে তার পক্ষে সম্ভব হয়নি। উক্ত শিক্ষকের অনাঙ্ঘাঙ্কিত ঘটনার কারণে যে কোন মুহূর্তে ছাত্র রিদওয়ানুল ইসলাম সম্রাটের মানসিক বিপর্যয় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ছাত্রের অভিভাবক কোন অঘটন ঘটনার আশংকা করছেন। পিতা রবিউল ইসলাম তার সন্তানের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রতিষ্ঠানের সভাপতি ও জেলা প্রশাসকের বরাবর লিখিত আবেদন করেছেন। অনুসন্ধানে জানা যায়, উক্ত শিক্ষক সিরাজুল কবির জুড়োন প্রতিষ্ঠানের ক্লাসে ঠিকমত না পড়িয়ে অতিরিক্ত ক্লাসে তিনি প্রাইভেট পড়ানো ছাত্রদের আগ্রহ সহকারে পড়ান। উক্ত শিক্ষক কেসি কলেজের পাশে প্রাইভেট পড়ান। যা বিধিবহির্ভূত এবং উক্ত প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন পরীক্ষায় নকল সরবরাহ করে। তার বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠানেরও অনেকের নানাবিধ অভিযোগ রয়েছে। যা তদন্ত পূর্বক বেরিয়ে আসবে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে শিক্ষক সিরাজুল কবির জুড়োন একটি চড় মারার কথা শিকার করেন এবং এ বিষয়ে আর কোনও বক্তব্য দিতে রাজি হননি। এ বিষয়ে জেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ মনিরুল ইসলাম এবং ঝিনাইদহ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আব্বাস উদ্দীন বলেন, ছাত্রকে পেটানোর ঘটনাটি ন্যক্কারজনক। এ ঘটনায় ছাত্রের পক্ষ থেকে তার বাবা জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন। ক্লাসের সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ দেখলে সব জানা যাবে এবং ঘটনা তদন্ত করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।