যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বাংলাদেশের উষ্ণ সম্পর্কের ভিত্তি দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু:পররাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রকাশিত : এপ্রিল ৫, ২০২২ , ৮:১৮ অপরাহ্ণ

ওয়াশিংটন ডি.সি, ব্রডকাস্টিং নিউজ কর্পোরেশন : পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, ১৯৭৪ সালের অক্টোবরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের যুক্তরাষ্ট্র সফরের মধ্য দিয়ে এবং তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্টের সাথে সাক্ষাতের মাধ্যমে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক সম্পর্ক দৃঢ় ভিত্তি পায়। তখন থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের সাথে দ্বিপাক্ষিক এবং বৈশ্বিক উভয় ক্ষেত্রে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির অভিন্ন উদ্দেশ্য পূরণে পারস্পরিক সহযোগিতা সম্প্রসারিত হতে থাকে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী গতকাল বাংলাদেশ দূতাবাস ওয়াশিংটনে আয়োজিত ‘৫২তম স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস এবং বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক সম্পর্কের পঞ্চাশ বছর’ উদযাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইউএসএআইডির ডেপুটি অ্যাডমিনিস্ট্রেটর ইসোবেল কোলম্যান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য মাহবুবুল আলম হানিফ ও নাহিম রাজ্জাক।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এন্টনি জে ব্লিনকেনের সাথে বৈঠককে ফলপ্রসূ অভিহিত করে ড. মোমেন বলেন, ‘আগামী ৫০ বছরে আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরো জোরদার করার বিষয়ে আশাব্যঞ্জক আলোচনা করেছি।’ তিনি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে সমর্থনদানের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং খ্যাতিমান ব্যক্তিবর্গের ভূমিকা শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন।
মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী বাংলাদেশকে জাতিসংঘের সদস্যপদ প্রদান সংক্রান্ত রেজুলেশনের পক্ষে জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের স্থায়ী প্রতিনিধি জর্জ বুশ ১৬ বারের মধ্যে ১৫ বারই সমর্থন দেয়ার বিষয় স্মরণ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ঐতিহাসিকভাবে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র গণতন্ত্র, মানবিক মর্যাদা, আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নয়ন এবং বিশ্বশান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে একসাথে কাজ করে যাচ্ছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশে কোভিড-১৯ এর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্রের ৬ কোটির অধিক ভ্যাকসিন দিয়ে সহযোগিতা প্রদানের কথা কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করেন। এছাড়া রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধানের লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি এবং মানবিক সহায়তায় এককভাবে তাদের বৃহত্তম সহায়তা প্রদানের কথা তুলে ধরেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
ড. মোমেন বাংলাদেশের অব্যাহত উন্নয়ন ও অগ্রগতি, সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ, নারীর ক্ষমতায়ন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতার উল্লেখ করেন এবং বাংলাদেশের উন্নয়নের এই অগ্রযাত্রায় পাশে থাকার জন্য যুক্তরাষ্ট্র সরকারের প্রতি ধন্যবাদ জানান। যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক আরও জোরদারে শেখ হাসিনার সরকার দৃঢ় প্রতিজ্ঞ বলেও পররাষ্ট্রমন্ত্রী উল্লেখ করেন।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন ওয়াশিংটনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শহিদুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি-বেসরকারি ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিবৃন্দ, যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও কূটনীতিকবৃন্দ, যুক্তরাষ্ট্র সফররত বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের মধ্যে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার ওয়াকার-উজ-জামান, ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সচিব কামরুল হাসান, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক সচিব মোঃ গোলাম সারোয়ার, পররাষ্ট্র সচিব (পশ্চিম) শাব্বির আহমেদ চৌধুরী, ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটির সেন্টার ফর বে অব বেঙ্গল স্টাডিজের পরিচালক সাবেক রাষ্ট্রদূত তারিক এ করিম এবং যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বাংলাদেশি কমিউনিটির সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

[wps_visitor_counter]