ডিজিটাল সংযুক্তির প্রসার ও বিস্তারে সমন্বিত উদ্যোগে কাজ করতে হবে

প্রকাশিত : মে ১২, ২০২২ , ১১:১১ অপরাহ্ণ

ঢাকা, ব্রডকাস্টিং নিউজ কর্পোরেশন:ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, ডিজিটাল সংযুক্তি ডিজিটাল প্রযুক্তি কাজে লাগাতে দক্ষ মানব সম্পদ অপরিহার্য দেশব্যাপী উচ্চগতির ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগের পাশাপাশি দক্ষ মানব সম্পদ এবং ডিজিটাল সংযোগ সহজলভ্য করতে সরকার কাজ করছে। তিনি বলেন, ডিজিটাল সংযুক্তির প্রসার ও বিস্তারে সমন্বিত উদ্যোগে কাজ করতে হবে। ডিজিটাল প্রযুক্তি খাতের ট্রেডবডিসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে এই লক্ষ্যে সমন্বিত উদ্যোগে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি। মন্ত্রী বৃহস্পতিবার ঢাকায় সোনারগাঁও হোটেলে আন্তর্জাতিক সংস্থা এলায়েন্স ফর অ্যাফোর্ডেবল ইন্টারনেট আয়োজিত বাংলাদেশে অন্তর্ভুক্তিমূলক ডিজিটাল অর্থনীতিতে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অবদান বিষয়ক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন। মন্ত্রী ডিজিটাল যুগে ইন্টারনেটকে শ্বাস-প্রশ্বাসের সাথে তুলনা করে বলেন, পৃথিবীর কোনো কোনো দেশ ইন্টারনেটকে মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। তিনি বলেন, ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট কেবলমাত্র শহরের মানুষের জন্য নয় দেশের প্রত্যন্ত প্রতিটি বাড়ি-বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ বাস্তবায়নের কাজ চলছে। দেশের ১৬৩টি ইউনিয়ন পরিষদ ছাড়া দেশের প্রতিটি ইউনিয়ন অপটিক্যাল ফাইভার সংযোগের আওতায় আসছে। ইন্টারনেটের মূল্য সম্পর্কে মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে ইন্টারনেটের দাম অনেক কম। ৬০ টাকায় এক এমবিপিএস ব্যান্ডউইথ পাওয়া যায়। অথচ ২০০৬ সালে এক এমবিপিএস ইন্টারনেটের দাম ছিলো ৭৮ হাজার টাকা। তিনি দেশে ইন্টারনেট প্রসারের তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদৃষ্টি সম্পন্ন উদ্যোগ ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচির ধারাবাহিকতায় দেশের প্রায় প্রতিটি ইউনিয়নে উচ্চগতির ব্রডব্যান্ড নেটওয়ার্ক পৌঁছে দেওয়ার পাশাপাশি দেশের শতকরা ৯৮ ভাগ এলাকায় ৪জি নেটওয়ার্ক পৌঁছে দেয়া হয়েছে। তিনি দেশের দুর্গম ও প্রত্যন্ত অঞ্চলে কানেক্টিভিটির প্রসারের দৃষ্টান্ত উল্লেখ করে বলেন যে এখন মধুপুরের পাহাড় বা হাওরে বসে ইন্টারনেটের সহায়তায় তরুণ তরুণীরা বিদেশে আউটসোর্সিং এর কাজ করতে পারে। মোবাইল ইন্টারনেটের দাম তুলনামূলক একটু বেশি উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, টেলিটকের মাধ্যমে ব্যবসায়ী প্রতিযোগিতা তৈরি করে সেটিও গ্রাহকের স্বার্থের অনুকূলে আনার চেষ্টা আমরা করছি। ইতোমধ্যে মোবাইল ইন্টারনেটের আনলিমিটেড প্যাকেজও চালু হয়েছে। মোবাইলের কলড্রপ কমিয়ে আনতে অপারেটরসমূহকে সম্প্রতি অতিরিক্ত বেতার তরঙ্গ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, আগামী ডিসেম্বর থেকে গ্রাহকগণ এই সুবিধা পাবে। দেশে মোবাইল ফোনের সহজলভ্যতা প্রসঙ্গে কম্পিউটারে বাংলা ভাষার উদ্ভাবক মোস্তাফা জব্বার বলেন, দেশে গত চার বছরে সরকারের প্রযুক্তিবান্ধব নীতি কাজে লাগিয়ে স্যামসাংসহ ১৪টি ব্র্যান্ডের মোবাইল কারখানা স্থাপিত হয়েছে। এর ফলে দেশের মোট চাহিদার শতকরা সত্তরভাগ এই সব কারখানার উৎপাদিত মোবাইল থেকে মেটানো সম্ভব হচ্ছে। তিনি মোবাইল কারখানার পাশাপাশি ল্যাপটপ ও কম্পিউটার কারখানা স্থাপনে উদ্যোক্তাদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। মন্ত্রী দেশে প্রযুক্তির লেটেস্ট ভার্সন ফাইভ-জি চালু করাকে ডিজিটাল সংযুক্তি বিকাশের যুগান্তকারী উদ্যোগ উল্লেখ করে বলেন, শিক্ষা, শিল্প ও বাণিজ্যিক কাজে এই প্রযুক্তি কাজে লাগাতে পারলে দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির বিকাশে মাইলফলক স্থাপিত হবে। মন্ত্রী এ সময় এলায়েন্স ফর অ্যাফোর্ডেবল ইন্টারনেটের ২০১৮ সালের তথ্যনির্ভর প্রতিবেদনটি আপডেট ভার্সন প্রকাশের মাধ্যমে ২০২২ সালে বাংলাদেশের অগ্রগতির প্রকৃত চিত্র বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন এর ফলে ডিজিটাল সংযুক্তি, ইন্টারনেট সহজলভ্যতা এবং ডিজিটাল ডিভাইস ও ডিজিটাল অর্থনীতিতে বাংলাদেশের অর্জনের প্রকৃত চিত্র বিশ্ববাসী জানতে পারবে। এলায়েন্স ফর অ্যাফোর্ডেবল ইন্টারনেটের বাংলাদেশ বিষয়ক সমন্বয়ক শহীদ উদ্দিন আকবরের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বেসিস-এর সভাপতি রাসেল টি আহমদ এলায়েন্স ফর অ্যাফোর্ডেবল ইন্টারনেটের গ্রোবাল পলিসি বিষয়ক কর্মকর্তা এলিনোর এবং এশীয় প্রশান্তমহাসাগরীয় অঞ্চলের সমন্বয়কারী আনজু মাংগল বক্তৃতা করেন।

[wps_visitor_counter]