মেধাসম্পদের সুরক্ষা ও উন্নয়ন এসডিজি বাস্তবায়নে অবদান রাখবে: শিল্পমন্ত্রী

প্রকাশিত : আগস্ট ১, ২০২২ , ৭:০৯ অপরাহ্ণ

ঢাকা, ব্রডকাস্টিং নিউজ কর্পোরেশন: শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন এমপি বলেছেন, প্রতিযোগিতামূলক বৈশ্বিক অর্থনীতিতে এলডিসি থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ দেশের উন্নয়নের পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হয়। বাংলাদেশ ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি), ২০৩১ সালের মধ্যে উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশে উত্তরণ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত দেশে পরিণত হওয়ার পথে রয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশ সরকার মেধা সম্পদকে টেকসই উন্নয়নের অন্যতম মানদণ্ড ধরে এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা ও সূচকসমূহ নির্ধারণ করেছে। মেধাসম্পদের সুরক্ষা ও উন্নয়ন এসডিজি বাস্তবায়নে অবদান রাখবে। শিল্পমন্ত্রী বলেন, প্রাকৃতিক মেধাকে কাজে লাগিয়ে সম্পদে পরিণত করে শিল্প উন্নয়নের জন্য বিনিয়োগ করা দরকার। কারণ “ইন্টেলেকচুয়াল প্রোপার্টি”-ই একমাত্র প্রপার্টি, যার উৎস অসীম এবং সম্ভাবনা অফুরন্ত। এই সম্ভবনাকে কী-ভাবে কাজে লাগানো যায়, সেটি আমাদের মেধাসম্পদ নীতিমালা এবং শিল্পনীতিতে স্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে। সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো তাঁদের কার্যক্রমের মাধ্যমে জনগণের কল্যাণের স্বার্থে আমাদের সরকারের প্রতিশ্রুতি পূরণে এই উদ্যোগগুলো বাস্তবায়নে আরো অগ্রণী ভুমিকা পালন করবে বলে আশা করি। শিল্পমন্ত্রী আরো বলেন, যে চেতনাকে ধারণ করে রক্তক্ষয়ী মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের সৃষ্টি হয়েছে, বিশ্ব মানচিত্রে এখন প্রয়োজন তার উন্নয়ন ত্বরান্বিত করা। এক্ষেত্রে মেধাসম্পদের বিকাশ ও সংরক্ষণের কোনো বিকল্প নাই। আজ সময় এসেছে শিল্পায়নের, আজ সময় এসেছে মেধাসম্পদ বিকাশ ও সংরক্ষণের। আজ সময় এসেছে নব উদ্ভাবন সৃষ্টিকে উৎসাহিত করার। আর এজন্য দরকার একটি সুপরিকল্পিত “ভিশন” এবং প্রয়োজন একটি সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা। তাই আজকে ৭টি কর্মপরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করে Intellectual Property বিষয়ে সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত নিয়ে দেশের সীমিত সম্পদকে সমৃদ্ধ সম্পদে পরিণত করতে হবে। একাত্তরের চেতনাকে বুকে লালন করে বর্তমান বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে সুন্দর সমৃদ্ধির দিকে। সোমবার রাজধানীর রমনাস্থ তথ্য ভবনে শিল্প মন্ত্রণালয় কর্তৃক আয়োজিত “Intellectual Property Rights (IPR)” শীর্ষক সময়াবদ্ধ কৌশলপত্র Validation কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিল্পমন্ত্রী এসব কথা বলেন। শিল্প সচিব জাকিয়া সুলতানার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার এমপি এবং প্রধানমন্ত্রীর সম্মানিত মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্ত ঘোষ, তথ্য ও সম্প্রচার সচিব মোঃ মকবুল হোসেন পিএএম সংস্কৃতি সচিব আবুল মনসুর, সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন দপ্তরের প্রতিনিধি, বিভিন্ন ব্যবসায়ী চেম্বারের নেতৃবৃন্দ। প্যানেলিস্ট হিসেবে বক্তব্য রাখেন আইপিএবি’র মহাপরিচালক মো: আজিজুর রহমান এফসিএস, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের ডীন ড. সীমা জামান, ডিপিডিটির রেজিস্ট্রার খোন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান এনডিসি, বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব ফার্মাসিউটিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন এমপি। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনা করেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সম্মানিত সচিব মিজ শরিফা খান। বক্তারা বলেন, মেধাসম্পদ এমন একটি ধারণা, যা জাগতিক সকল সম্পদের মধ্যে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ। এটি এমন একটি রত্ন-ভান্ডার, যার মাধ্যমে এর স্বত্তাধিকারীই শুধু উপকৃত হননা, উপকৃত হয় পুরো মানব জাতি। “ইন্টেলেকচুয়াল প্রোপার্টি” তথা পেটেন্ট, ট্রেডমার্ক, জিআই (ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য) বা কপিরাইট নিয়ে আমাদের আরও সচেতন হতে হবে। যত বেশি মানুষ আইপি সচেতন হবে, আইপি বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করবে, ট্রেডমার্ক বা কপিরাইট লঙ্ঘনের হার তত কমে যাবে। ফলে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ এবং শিল্প বিকাশের স্বম্ভবনা তত বেড়ে যাবে। বক্তারা আরো বলেন, নতুন উদ্ভাবন ও সৃষ্টিশীলতার প্রকাশই মেধাসম্পদ, আর এই উদ্ভাবন ও সৃষ্টিশীলতাকে উৎসাহিত করার সাথে অর্থনৈতিক উন্নয়নের সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর। জাতি হিসেবে আমরা যত বেশি জ্ঞানভিত্তিক উদ্ভাবন ও সৃষ্টিশীলতাকে কাজে লাগাব, তত বেশি সমৃদ্ধির দিকে অগ্রসর হতে পারব। বিভিন্ন সংস্থার প্রতিবেদনে দেখা যায়, দেশে মেধাসম্পদের সুরক্ষা বা নিবন্ধন নিয়ে সচেতনতার কিছুটা অভাব রয়েছে। এ বিষয়ে পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্ক অধিদপ্তর, কপিরাইট অফিসসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে আমাদের আরো বিস্তৃত পরিসরে প্রচারনা চালানো দরকার। উল্লেখ্য, স্বল্পোন্নত দেশ হতে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে উত্তরণের ফলে বাংলাদেশের সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার প্রস্তুতি, পরিকল্পনা গ্রহণ, বাস্তবায়ন ও মনিটরিং সংক্রান্ত প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে “Intellectual Property Rights (IPR)” শীর্ষক সাবকমিটি গঠন করা হয়। উক্ত সাব কমিটির প্রণয়নকৃত সময়াবদ্ধ পরিকল্পনাসহ কৌশলপত্র আজকের কর্মশালায় উপস্থাপন করা হয়।

 

[wps_visitor_counter]