গুজব ও অপপ্রচার প্রশমনে নীতিমালা করা হচ্ছে : ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী

প্রকাশিত : আগস্ট ১৩, ২০২২ , ১০:৫৫ অপরাহ্ণ

ঢাকা, ব্রডকাস্টিং নিউজ কর্পোরেশন: ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম আমাদের উদ্বেগের বড় একটি জায়গা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব ও অপপ্রচার প্রশমনে সকলের মতামত ও পরামর্শের ভিত্তিতে এই লক্ষ্যে নীতিমালা প্রণয়ন করা হচ্ছে। এই বিষয়ে আদালতের আদেশ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ ডিজিটাল মিডিয়ায় নিজ নিজ অধিক্ষেত্র নিয়ে দু’টি পৃথক নীতিমালা প্রণয়ন করছে।
মন্ত্রী শনিবার ঢাকায় এফবিসিসিআই মিলনায়তনে এফবিসিসিআই আয়োজিত ‘রেগুলেশন অভ্ ডিজিটাল, সোস্যাল মিডিয়া এন্ড ওটিটি প্লাটফর্ম: দ্য নিড টু স্ট্রাইক দ্য রাইট ব্যালেন্স’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন। তথ্য ও সম্প্রচার সচিব মোঃ মকবুল হোসেন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন।
এফবিসিসিআই‘র সভাপতি মোঃ জসীম উদ্দিনের সভাপতিত্বে প্যানেল আলোচক হিসেবে সিঙ্গাপুর থেকে ডিজিটাল প্লাটফর্মে মেটা’র (ফেসবুক) হেড অভ্ পাবলিক পলিসি, বাংলাদেশ সাবহানাজ রশিদ দিয়া ও এশিয়া ইন্টারন্যাশনালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জেফ পেইনি, অনুষ্ঠানে সরাসরি উপস্থিত থেকে এফবিসিসিআই’র পরিচালক সৈয়দ আলমাস কবির, বিটিআরসি’র ডিজি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ নাসিম পারভেজ, ঢাকা ট্রিবিউনের নির্বাহী সম্পাদক রিয়াজ আহমেদ, আরটিভি’র সিইও সৈয়দ আসিক আহমেদ এবং বঙ্গবিডি’র পরিচালক নাবিদুল হক বক্তৃতা করেন। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ব্যারিস্টার রশনা ইমাম। ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী ফেসবুক ব্যবহার করে নাসির নগরসহ বিভিন্ন জায়গায় সাম্প্রদায়িক অস্থিরতা হয়েছে উল্লেখ করে বলেন, এর আগে মিডিয়াকে ব্যবহার করে কখনো তা হয়নি। তিনি বলেন, প্রত্যেক মানুষের জাতীয় আইডি আছে। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঠিকানাহীনদের কীভাবে শনাক্ত করবো এই প্রশ্ন রাখেন। ২০১৮ সালে স্পেনের বার্সেলোনায় ফেসবুকের সাথে দ্বিপাক্ষিক একটি বৈঠকের পর আমরা সম্পর্কের দূরত্ব কমিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি। ডিজিটাল অপরাধ দমনে তিনি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা করে বলেন, সকল পক্ষের সাথে আলোচনা করেই এই আইনের খসড়া চূড়ান্ত করা হয়। তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বিষয়ক নীতিমালায় যে সব জায়গায় পরিবর্তন করা দরকার সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের পরামর্শের ভিত্তিতেই করা হবে বলে উল্লেখ করেন। তিনি ডিজিটাল কনটেন্ট নির্মাতাদেরকে কপি রাইট নিবন্ধন করার পরামর্শ ব্যক্ত করে বলেন, আমি মনে করি আমার বড় সম্পদ হচ্ছে মেধা। মেধা রক্ষা করতে না পারলে উন্নত জাতি হতে পারবো না। ডিজিটাল প্রযুক্তি উদ্ভাবনের এই অগ্রদূত বলেন, কপি রাইট, লেভেল ডিজাইন ও ট্রেডমার্ক একই ছাতার অধীন থাকা উচিত। ডিজিটাল প্রযুক্তিতে বাংলা ভাষার উদ্ভাবক মোস্তাফা জব্বার বলেন, ২০০৮ সালে ঘোষিত ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচির ধারাবাহিকতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ বিশ্বের অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল বিপ্লবের এই কর্মসূচির আট বছর পর চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের ধারণাটি ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরাম ঘোষিত হয় বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন। তিনি ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের উদ্দেশ্যে বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের যুগ শেষ। তিনি তাদেরকে পঞ্চম শিল্প বিপ্লবের প্রস্তুতি গ্রহণের আহ্বান জানান। তথ্য ও সম্প্রচার সচিব স্বাধীন মত প্রকাশে বাংলাদেশকে পৃথিবীর অনন্য দৃষ্টান্ত উল্লেখ করে বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোনটা প্রকাশ করা যাবে আর কোনটা যাবে না, নিজের বিবেক এপ্লাই করে তা করা উচিত। ডিজিটাল মাধ্যমের জন্য কনটেন্ট তৈরি এবং প্রচার বিষয়ে সচেতনতা তৈরির প্রয়োজনীয়তার ওপর তিনি গুরুত্বারোপ করেন। তিনি ওটিটি প্লাটফর্ম নীতিমালা প্রসঙ্গে বলেন, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের ওটিটি প্লাটফর্ম বিষয়ে সম্পুর্ণভাবে পৃথক দুটি কাজ সম্পাদন করে থাকে। তিনি বলেন, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের কাজ কনটেন্ট ফেসিলেট করা। আমরা এই নিয়েই কাজ করছি। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে আদালতের নির্দেশনা আলোকে স্ব স্ব এখতিয়ার ফোকাস করেই অত্যন্ত সতর্কতার সাথে কাজ করা হচ্ছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধে ওটিটি প্লাটফর্ম নীতিমালার সম্ভাব্য বিরূপ প্রভাব ও সুফল সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হয়।

 

[wps_visitor_counter]