গত একযুগে দেশে ইলিশ আহরণ দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে

প্রকাশিত : অক্টোবর ৬, ২০২২ , ৭:১০ অপরাহ্ণ

ঢাকা, ব্রডকাস্টিং নিউজ কর্পোরেশন: গত একযুগে দেশে ইলিশ আহরণ দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও পানিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে মৎস্য ও প্রানীসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান ২০২২ বাস্তবায়ন উপলক্ষ্যে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী একথা জানান। এ সময় মন্ত্রী বলেন, ইলিশের উৎপাদনে একসময় খারাপ অবস্থা হয়েছিল। রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা, ইলিশ সমৃদ্ধির জন্য সুনির্দিষ্ট গবেষণা ও বর্তমান সরকারের গৃহীত ব্যবস্থাপনায় ইলিশের উৎপাদন ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। যার ফলে গত ১২ বছরে ইলিশ আহরণ প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। ইলিশের উৎপাদন ক্রমান্বয়ে এমনভাবে বৃদ্ধি পাবে যে প্রান্তিক পর্যায় থেকে শুরু করে সকল মানুষ ইলিশের স্বাদ গ্রহণ করতে পারবে।
মৎস্য ও প্রানীসম্পদ মন্ত্রী আরো বলেন, সরকারের কঠোর ব্যবস্থাপনা, ইলিশের জন্য অভয়া-শ্রম তৈরি, মা ইলিশ ধরতে না দেওয়া, জাটকা আহরণ বন্ধ রাখা এবং ইলিশ যেখানে ডিম দেয় সে জায়গায় উপযোগী পরিবেশ রক্ষার ফলে ইলিশের উৎপাদন এভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। ইলিশ আহরণ বন্ধ রাখাকালে ইলিশ আহরণে সম্পৃক্ত মৎস্যজীবীদের যাতে কোনও ক্ষতি না হয়, সেজন্য তাদের সরকার চাল দেয়, বিকল্প কর্মসংস্থানের জন্য সহযোগিতা দেয়। মা ইলিশ আহরণে বিরত থাকা মৎস্যজীবীদের অতীতে পরিবার প্রতি ২০ কেজি করে চাল দেওয়া হতো। এ বছর এটি ২৫ কেজিতে উন্নীত করা হয়েছে। ক্রমান্বয়ে এর পরিমাণ আরো বৃদ্ধি পাবে। মন্ত্রী আরো যোগ করেন, নিষেধাজ্ঞা চলাকালে কেউ মাছ আহরণ করে কি না সেটা বিমানবাহিনীর মাধ্যমে আকাশপথে মনিটর করা হবে। নৌ-পুলিশ, কোস্টগার্ড, নৌবাহিনী, জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশ ও মৎস্য অধিদপ্তর সম্মিলিতভাবে কাজ করবে। মা ইলিশ ধরা বন্ধ রাখতে কোথাও কোথাও বরফকল বন্ধ রাখা হবে। এছাড়া নিষেধাজ্ঞার সময় যারা আইন অমান্য করবে তাদের তাৎক্ষণিক সাজা প্রদানে মোবাইল কোর্টের ব্যবস্থা থাকবে। সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কিছু ইলিশ বিদেশে রপ্তানি করা হয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী আরও বলেন, চলতি বছর এ পর্যন্ত ইলিশ রপ্তানি হয়েছে ১ হাজার ৩৫২ মেট্রিক টন। এর ফলে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন হয়েছে ১ কোটি ৩৬ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার। এই মুহূর্তে আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি না পেলে আমরা রপ্তানি করে এ বৈদেশিক মুদ্রা আনতে পারতাম না। এ সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, মিয়ানমার অথবা অন্য কোনও দেশের কেউ এসে আমাদের ভৌগলিক এলাকায় মৎস্য আহরণের কোনও সুযোগ নেই। যদি কেউ এ ধরনের পদক্ষেপ নিতে চায় আমরা তাদের গ্রেফতার করবো। এ ব্যাপারে আমরা কঠোরভাবে নজরদারি করছি। মৎস্য ও প্রানীসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নাহিদ রশীদ, অতিরিক্ত সচিব মোঃ আব্দুল কাইয়ূম, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খ. মাহবুবুল হক এ সময় উপস্থিত ছিলেন। উল্লেখ্য, প্রতি বছরের ন্যায় এবছরও ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে আগামী ৭ হতে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত মোট ২২ দিন সারা দেশে ইলিশ আহরণ, পরিবহন, বাজারজাতকরণ, ক্রয়-বিক্রয়, মজুত ও বিনিময় নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

[wps_visitor_counter]