All Menu/p>

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত

ঢাকা, ব্রডকাস্টিং নিউজ কর্পোরেশন: মহান বিজয় দিবস কুচকাওয়াজ – ২০২২ উপলক্ষ্যে শুক্রবার (১৬ ডিসেম্বর ২০২২) জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে অত্যন্ত জাঁকজমক-পূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে কুচকাওয়াজের সালাম গ্রহণ করেন। প্রধান অতিথি জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে পৌঁছালে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী আ. ক. ম. মোজাম্মেল হক, এমপি, তিন বাহিনী প্রধানগণ, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব তাঁকে অভ্যর্থনা জানান। কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের মাননীয় স্পিকার, মন্ত্রী পরিষদের মাননীয় সদস্যগণ, মাননীয় সংসদ সদস্যগণ, ঊর্ধ্বতন সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তাগণ, বাংলাদেশে নিযুক্ত বৈদেশিক কূটনৈতিক ব্যক্তিবর্গ, মিডিয়া ব্যক্তিবর্গ এবং আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ। এর আগে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে (ভোর ০৬ টা ৩৩ মিনিট) তোপধনির মধ্য দিয়ে শুরু হয় মহান বিজয় দিবসের আনুষ্ঠানিকতা। ঢাকা পুরাতন বিমান বন্দর এলাকায় (তেজগাঁও) বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৪৬ স্বতন্ত্র পদাতিক ব্রিগেডের ব্যবস্থাপনায় একটি আর্টিলারি রেজিমেন্টের ০৬ টি গান ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী বীর শহিদদের প্রতি গান স্যালুট প্রদর্শন করে। মহান বিজয় দিবস কুচকাওয়াজ – ২০২২ মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের তত্ত্বাবধানে এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৯ পদাতিক ডিভিশনের ব্যবস্থাপনায় অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, বাংলাদেশ নৌ বাহিনী, বাংলাদেশ বিমান বাহিনী, বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ, বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড, বাংলাদেশ পুলিশ, বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী, বাংলাদেশ জেল এবং ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এই কুচকাওয়াজে অংশগ্রহণ করে। মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং তিন বাহিনী প্রধান পৃথক পৃথক বাণী প্রদান করেন। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে মহামান্য রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ মহান বিজয় দিবস কুচকাওয়াজ-২০২২ অবলোকন করেন। কুচকাওয়াজে মহামান্য রাষ্ট্রপতির উপস্থিতি সকল সদস্যদের মাঝে উৎসাহ ও উদ্দীপনার সঞ্চার করে। উল্লেখ্য, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বে দেশ ও জাতির উন্নয়ন, সশস্ত্র এবং আধা সামরিক বাহিনীগুলোর আধুনিকায়নের বিষয়টি এই কুচকাওয়াজে উপজীব্য হয়ে উঠে। বিজয় দিবস কুচকাওয়াজে প্যারেড কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন জেনারেল অফিসার কমান্ডিং, ৯ পদাতিক ডিভিশন মেজর জেনারেল মোহাম্মদ শাহীনুল হক, ওএসপি, বিএসপি, এনডিসি, এইচডিএমসি, পিএসসি এবং প্যারেড উপ-অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন কমান্ডার, ৭১ মেকানাইজড ব্রিগেড, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ খালেদ কামাল, বিএসপি, এনডিসি, পিএসসি। উক্ত কুচকাওয়াজে বিভিন্ন বাহিনীর সর্বমোট ২৩ টি কন্টিনজেন্ট মহামান্য রাষ্ট্রপতিকে সালাম প্রদান করে। কুচকাওয়াজে অংশগ্রহণকারী সম্মিলিত যান্ত্রিক বহরের অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন কমান্ডার, ৯ আর্টিলারি ব্রিগেড, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তৌফিক হামিদ, পিএসসি, জি এবং জাতিসংঘ কন্টিনজেন্টের অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন কমান্ডার, ৮১ পদাতিক ব্রিগেড, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আ ব ম আব্দুল বাতিন ইমানী, এনডব্লিউসি, এএফডব্লিউসি, পিএসসি। কুচকাওয়াজের শুরুতেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর মুর‌্যাল ও সাতজন বীরশ্রেষ্ঠ’র প্রতিকৃতি প্রদর্শনীর পরই সুসজ্জিত বাহনে মুক্তিযোদ্ধা কন্টিনজেন্ট মহামান্য রাষ্ট্রপতিকে অভিবাদন জানায়। এসময় চিত্রাকর্ষক যান্ত্রিক বহরে সুসজ্জিত সশস্ত্র বাহিনীর উল্লেখযোগ্য সমরাস্ত্রসমূহ প্রদর্শন করা হয়। প্রদর্শনীর মাধ্যমে আধুনিক সমরাস্ত্রে সুসজ্জিত সশস্ত্র বাহিনীর বিশ্বমানের সক্ষমতা ও দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার প্রত্যয়ে রণপ্রস্তুতির বাস্তব প্রতিফলন ঘটে। এছাড়াও, আর্মি এভিয়েশন, নেভাল এভিয়েশন ও র‌্যাব ফোর্সেস এর ফ্লাইপাষ্ট, দুঃসাহসিক প্যারা কমান্ডো সদস্যদের ফ্রিফল জাম্প কুচকাওয়াজকে আরো আকর্ষণীয় করে তোলে। যান্ত্রিক বহরের প্রদর্শনীর পরপরই শুরু হয় বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর এক মনোজ্ঞ ফ্লাইপাস্ট ও এরোবেটিক ডিসপ্লে। বিমান বাহিনীর ফ্লাইপাস্টের নেতৃত্ব দেন গ্রুপ ক্যাপ্টেন মোঃ মনিরুজ্জামান হাওলাদার, এএফডব্লিউসি, এসিএসসি, পিএসসি, জিডি(পি)। কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানটি বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারসহ অন্যান্য বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ও রেডিও’তে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। নতুন প্রজন্মের নিকট মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরার লক্ষ্যে জাতীয় প্যারেড স্কয়ারসহ প্যারেড গ্রাউন্ডে আসার পথে ঢাকা শহরের সড়কগুলোতে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ ও বিজয় দিবসের চেতনা সম্বলিত উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ব্যানার ও বিলবোর্ড স্থাপন করা হয়। এই সকল ব্যানার ও বিলবোর্ড সমূহের মাধ্যমে মহান মুক্তিযুদ্ধ তথা বাঙালি জাতির অমর ইতিহাস ও ঐতিহ্যের প্রতিফলন ঘটানো হয়েছে। মহান বিজয় দিবস কুচকাওয়াজ সুষ্ঠু ও সার্থক করতে, আইএসপিআর পরিদপ্তর, গণপূর্ত অধিদপ্তর, পিডিবি, ঢাকা ওয়াসা, সিটি কর্পোরেশন, টিএন্ডটি, ডেসকো, জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তর, গণযোগাযোগ অধিদপ্তর, পিডব্লিউডি ও স্থাপত্য অধিদপ্তর অত্যন্ত প্রশংসনীয় ভূমিকা পালন করে। দিবসটি পালনের অংশ হিসেবে সকল সেনানিবাসসমূহে বাদ জুম্মা শহিদ মুক্তিযোদ্ধাদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত/যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের সুস্বাস্থ্য এবং দেশ ও জাতির শান্তি, সমৃদ্ধি, অগ্রগতি এবং সশস্ত্র বাহিনীর উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top