জনগণের কাছে যেতে হলে বিএনপিকে অপরাজনীতির জন্য ক্ষমা চাইতে হবে

প্রকাশিত : জানুয়ারি ৩১, ২০২৩ , ৮:২৮ অপরাহ্ণ

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহ্‌মুদ, সংগৃহীত চিত্র।

চট্টগ্রাম, ব্রডকাস্টিং নিউজ কর্পোরেশন: তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহ্‌মুদ বলেছেন, ‘বিএনপি জনগণের কাছ থেকে অনেক দূরে সরে গেছে। আবার জনগণের কাছে যেতে হলে ২০১৩, ১৪ ও ১৫ সালে তারা যে অপরাজনীতি করেছে, পেট্রোলবোমা নিক্ষেপ করে জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে এবং মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে, সেগুলোর জন্য মানুষের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।’মঙ্গলবার চট্টগ্রামের হোটেল রেডিসন ব্লু বে ভিউতে চট্টগ্রামে মেট্রোরেল নির্মাণের লক্ষ্যে ফিজিবিলিটি স্টাডির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা শেষে সমসাময়িক রাজনীতি নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এবিএম আমিন উল্লাহ নূরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অনলাইনে সংযুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। বিএনপির পদযাত্রা কর্মসূচি নিয়ে ড. হাছান মাহ্‌মুদ বলেন, ‘সম্ভবত বিএনপির দম ফুরিয়ে গেছে, এজন্য হাঁটা শুরু করেছে। তারা তো আগে মিছিল করতো, এখন মিছিলের পরিবর্তে হাঁটা শুরু করেছে। বিএনপি যে পদযাত্রা শুরু করেছে সম্ভবত তারা কারো কাছ থেকে নকল করছে।’ ‘তবে বিএনপি পদযাত্রা করুক আর যেই যাত্রায় করুক না কেনো, তাদের এই যাত্রায় জনগণ তো দূরের কথা তাদের সাধারণ কর্মীরাও পদযাত্রায় শামিল হয়নি’ বলেন ড. হাছান মাহ্‌মুদ। বিএনপির তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি প্রসঙ্গে মন্ত্রী আবারও বলেন, ‘এই দেশে আর কখনো তত্ত্বাবধায়ক সরকার হবে না। ভারত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কন্টিনেন্টাল ইউরোপ, জাপান, অস্ট্রেলিয়াসহ সমস্ত সংসদীয় গণতন্ত্রের দেশে যেভাবে নির্বাচন হয় সেভাবেই নির্বাচন হবে। সংসদীয় গণতন্ত্রের সব দেশেই যে সরকার ক্ষমতায় থাকে তারাই নির্বাচনকালীন দায়িত্ব পালন করে। আমাদের দেশেও তাই করবে।’ মন্ত্রী বলেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই নির্বাচনকালীন প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করবেন। তার সরকারই তখন নির্বাচনকালীন সরকার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে। এবং নির্বাচন হবে নির্বাচন কমিশনের অধীনে। বিএনপির এই পদযাত্রা, কিংবা কদিন পরে ‘বসার যাত্রা’ করবে- যে যাত্রাই করুক না কেনো, কোনো লাভ হবে না।’ তবে বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে আশা প্রকাশ করে মন্ত্রী বলেন, আমরা চাই বিএনপিসহ সব রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক। প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ একটি সুষ্ঠু সুন্দর নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের মানুষ আগামী দিনের সরকার পছন্দ করুক সেটিই আমরা চাই। এর আগে চট্টগ্রামে মেট্রোরেলের সম্ভাব্যতা যাচাই কাজের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ড. হাছান মাহ্‌মুদ বলেন, ‘আজকে চট্টগ্রামবাসীর জন্য একটি শুভদিন, আনন্দের দিন। কারণ চট্টগ্রামে মেট্টোরেল হবে চট্টগ্রামের মানুষও অনেকে ভাবেনি, এটি আমার জন্যও আনন্দের দিন। বেশ কয়েকবছর ধরে চট্টগ্রামে মেট্টোরেল নির্মাণের জন্য প্রধানমন্ত্রী এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রীর কাছে বহুবার নিবেদন করেছি। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় আজকে কোরিয়ান সরকার এবং বাংলাদেশ সরকারের যৌথ অর্থায়নে ফিজিবিলিটি স্টাডি শুরু হতে যাচ্ছে।’ চট্টগ্রামকে নান্দনিক শহর উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রামের উন্নয়নকে যে কি পরিমাণ গুরুত্ব দেন, সেটি একটি প্রজেক্টের কথা আলোচনা করলেই বুঝতে পারবেন। জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য তিনটা প্রজেক্ট মিলিয়ে ব্যয় ১ দশমিক ২ মিলিয়ন ডলার তিনি দিয়েছেন। সেই কাজগুলো চলছে, তিনটা প্রজেক্টের কাজের সমন্বয়ের প্রয়োজন রয়েছে। সেই প্রজেক্টগুলো যদি সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়িত হয়, আমি আশা করি আগামী বছর থেকে চট্টগ্রাম শহরে পানি উঠবে না। মন্ত্রী বলেন, অনেকগুলো পাহাড় কাটা হয়েছে, পাহাড় কাটার কারণে নান্দনিকতা নষ্ট হয়েছে, পরিবেশ নষ্ট হয়েছে। চট্টগ্রাম শহরকে আরো নান্দনিক করার ক্ষেত্রে মেট্রোরেল প্রজেক্টটি অত্যন্ত সহায়ক হবে। এই শহরের লোকসংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। আগামী পাঁচ-দশ বছর পরে এই শহরের লোকসংখ্যা এক কোটি ছাড়িয়ে যাবে। এই শহর ঘনবসতিপূর্ণ শহর। সুতরাং এখানে মেট্রোরেলের কোনো বিকল্প নেই। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশে নিযুক্ত দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত লি ঝাং কিউন, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি অধ্যক্ষ রওশন আরা মান্নান, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী, ইআরডি সচিব শরিফা খান, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এম জহিরুল আলম দোভাষ, ডিটিসিএ’র নির্বাহী পরিচালক সাবিহা পারভীন ও কোইকা বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ইয়াং আহ দোহ। অনুষ্ঠানে জানানো হয়, কোরিয়ান পরামর্শক প্রতিষ্ঠান কোইকা চট্টগ্রাম মেট্রোরেলের সম্ভাব্যতা যাচাই করবে। ৭০ কোটির বেশি টাকা ব্যয়ে পরিচালিত এই স্টাডিতেই চট্টগ্রামে মেট্রোরেলের প্রয়োজনীয়তা, ব্যবহার উপযোগিতা, মেট্রোরেলের রুটসহ নানা বিষয় উঠে আসবে। একই সাথে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে কত অর্থের প্রয়োজন তারও হিসাব দেবে কোইকো।

[wps_visitor_counter]