স্মার্ট মানবসম্পদ তৈরির জন্য ডিজিটাল পদ্ধতিতে পাঠদান করতে হবে

প্রকাশিত : মার্চ ১৫, ২০২৩ , ১১:০৯ অপরাহ্ণ

ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার, সংগৃহীত চিত্র।

বাঁশবাড়ী, সাভার, ঢাকা, ব্রডকাস্টিং নিউজ কর্পোরেশন: ডিজিটাল পদ্ধতিতে পাঠদান প্রচলিত পাঠদান পদ্ধতির চেয়ে অনেক বেশি আকর্ষণীয় এবং স্মার্ট মানবসম্পদ তৈরির জন্য কার্যকর একটি পদ্ধতি। শিক্ষার্থীরা এক বছরের পাঠ্যক্রম তিন থেকে চার মাসেই সহজে আয়ত্তে আনতে সক্ষম এবং ডিজিটাল পদ্ধতিতে পাঠ প্রদানের ফলে শিক্ষার্থী ভর্তি এবং নিয়মিত উপস্থিতির হার অনেক গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে বলে দাবি করছেন শিক্ষক, শিক্ষার্থী, শিক্ষা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা এবং ব্যবস্থাপনা কমিটির কর্মকর্তারা। ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বুধবার আশুলিয়া থানার বাঁশবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ডিজিটাল শিক্ষা কার্যক্রম পরিদর্শনকালে এসব কথা বলেন। সুবিধাবঞ্চিত প্রত্যন্ত ও দুর্গম অঞ্চলের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তরে বিটিআরসি‘র সামাজিক দায়বদ্ধতা তহবিলের অর্থায়নে এ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে। এ প্রকল্পের অধীন ৬৫০টি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের ২৮টি পাড়া কেন্দ্রে ডিজিটাল যন্ত্রে ডিজিটাল কনটেন্টে পাঠদান কার্যক্রম বাস্তবায়িত হচ্ছে। প্রকল্প কার্যক্রম পরিদর্শনকালে ডাক ও টেলিযোগোযোগ মন্ত্রী দেশের দুর্গম ও সুবিধাবঞ্চিত এলাকায় প্রাথমিক বিদ্যালয় ও পাড়া কেন্দ্রে প্রকল্পের অভিজ্ঞতা ব্যক্ত করে বলেন, আশপাশের স্কুলের শিক্ষার্থীরা অনেকে টিসি নিয়ে এই সকল স্কুলে চলে আসছে। যেসব স্কুলে কম্পিউটার আছে সেসব প্রতিষ্ঠানে ডিজিটাল কনটেন্ট দেওয়ার দাবি উঠেছে। মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, স্মার্ট মানবসম্পদ তৈরির জন্য ডিজিটাল পাঠদান পদ্ধতি খুবই ফলপ্রসূ একটি পদ্ধতি। ডিজিটাল শিক্ষার মানে পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন কিংবা শিক্ষার্থীদের জন্য টেলিভিশনে সম্প্রচারিত ক্লাস নয়। ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, শিক্ষার ডিজিটাল কনটেন্ট হচ্ছে ডিজিটাল যন্ত্রে পাঠদানের জন্য প্রচলিত পাঠ্যসূচির মানসম্মত ইন্টার একটিভিটি, ছবি, অডিও, ভিডিও, এনিমেশন, টেক্সট ও অন্যান্য মাল্টিমিডিয়া কনটেন্ট দিয়ে প্রোগ্রামিং করা সফটওয়্যার দিয়ে ডিজিটাল ডিভাইসে শিক্ষার প্রবর্তন করা। উন্নত বিশ্ব বহু আগে থেকেই এই পদ্ধতি অবলম্বনে শিক্ষা প্রদান করে আসছে। বাংলাদেশেও আনন্দ মাল্টিমিডিয়ার উদ্যোগে ১৯৯৯ সাল থেকে সীমিত পরিসরে এই পদ্ধতিতে শিক্ষা প্রদান করে শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তরের অভিযাত্রা শুরু হয়। তিনি ডিজিটাল শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তরে শিক্ষাবিদ, প্রযুক্তিবিদ, শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে সমন্বিত উদ্যোগে কাজ করার আহ্বান জানান। ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, প্রযুক্তিগত কারণে ডিজিটাল শিক্ষা শিশুদের জন্য যতটা বোধগম্য হয় প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থায় তা হয় না। প্রচলিত শিক্ষা ডিজিটাল শিক্ষায় রূপান্তর না হলে কঠিন চ্যালেঞ্জ আমাদেরকে মোকাবিলা করতে হবে। যে শিশুরা পড়তে চায় না তাদের আগ্রহ সৃষ্টিতে ডিজিটাল কনটেন্টে পাঠ প্রদানের ফলপ্রসূ অবদান তুলে ধরে তিনি বলেন, শিশুরা আনন্দের সাথে শিক্ষা গ্রহণ করে। মোস্তাফা জব্বার আরো বলেন, ১৯৮৭ সালে বাংলাদেশে আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে কম্পিউটার ব্যবহার করে পাঠদান করার পদ্ধতিটি আমি দেখি। সেই ধারণাকে বাস্তবায়ন করার বড় চ্যালেঞ্জ ছিল আমাদের পাঠ্যবইকে ডিজিটাল উপাত্তে রূপান্তর করা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচি বাস্তবায়নের ধারাবাহিকতায় ২০০৯ সাল থেকে গত ১৪ বছরে হাঁটি হাঁটি পা পা করে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠ্যক্রম ডিজিটালে রূপান্তরে সক্ষম হয়েছি। প্রচলিত শিক্ষা ডিজিটাল শিক্ষায় রূপান্তর না হলে কঠিন চ্যালেঞ্জ আমাদেরকে মোকাবিলা করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচি আমাদের এগিয়ে যাওয়ার চালিকা শক্তি। করোনাকালে উন্নত দুনিয়ার তুলনায় আমাদের ভালো করার মূলমন্ত্রটি ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচি। এরই ধারাবাহিকতায় স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের স্মার্ট মানব সম্পদ গড়ে উঠবে- প্রতিষ্ঠিত হবে বঙ্গবন্ধুর লালিত স্বপ্নের সোনার বাংলা – এ আমার দৃঢ় প্রত্যাশা। অনুষ্ঠানে টেলিযোগাযোগ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোঃ রফিকুল ইসলাম. বিজয় ডিজিটালের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জেসমিন আক্তার জুঁই, প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী আবদুল ওয়াহাব, সাভারের উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মাজহারুল ইসলাম, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার নাজমুশ শিহাব, বাঁশবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ আলী এবং প্রধান শিক্ষক মোকসেদ আলীসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

[wps_visitor_counter]