জাতির পিতার ‘বঙ্গবন্ধু’ হয়ে ওঠার পেছনে বঙ্গমাতার রয়েছে অসাধারণ ভূমিকা

প্রকাশিত : আগস্ট ৮, ২০২২ , ৮:৪৭ অপরাহ্ণ

ঢাকা, ব্রডকাস্টিং নিউজ কর্পোরেশন: সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেছেন, জাতির পিতার ‘বঙ্গবন্ধু’ হয়ে ওঠার পেছনে বঙ্গমাতার রয়েছে অসাধারণ ভূমিকা। ইতিহাসে বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব কেবল একজন রাষ্ট্রনায়কের সহধর্মিণী নন, বাঙালির মুক্তি সংগ্রামের অন্যতম এক নেপথ্য অনুপ্রেরণাদাত্রী। বাঙালি জাতির সুদীর্ঘ স্বাধিকার আন্দোলনের প্রতিটি পদক্ষেপে তিনি বঙ্গবন্ধুকে সক্রিয় সহযোগিতা করেছেন। বঙ্গবন্ধুর দৃঢ় চেতনাকে আরো শাণিত করেছিলেন এই মহীয়সী নারী। ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ গ্রন্থে বঙ্গবন্ধু লিখেছেন- ‘রেণু আমার সব দুঃখ-কষ্ট, অভাব-অনটন, কারাবরণ হাসিমুখে মেনে নিতে না পারলে আমি বঙ্গবন্ধু হতে পারতাম না।’ সোমবার রাজধানীর বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে মহীয়সী নারী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের ৯২তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে বাংলা একাডেমি আয়োজিত প্রকাশনা ও গ্রন্থালোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন। প্রতিমন্ত্রী বলেন, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব ছিলেন বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের ধারাবাহিক ইতিহাসের অবিচ্ছেদ্য অংশ। সরাসরি রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত না হয়েও বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক প্রেরণার সবচেয়ে বড়ো উৎস ছিলেন বেগম মুজিব। প্রতিমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মুক্তি এবং ছয় দফা দাবির পক্ষে তীব্র গণআন্দোলন গড়ে তোলার জন্য বঙ্গমাতা দিন-রাত পরিশ্রম করতেন। তিনি বলেন, আন্দোলন যখন তীব্র আকার ধারণ করল, তখন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খান সকল দলের সঙ্গে আলোচনার ডাক দিলেন। বন্দি শেখ মুজিবকে সাময়িক মুক্তি দিয়ে অর্থাৎ প্যারোলে পশ্চিম পাকিস্তানে নিয়ে গিয়ে আলোচনা করার উদ্যোগ গ্রহণ করেন। কিন্তু এই প্যারোলে মুক্তির তীব্র বিরোধিতা করলেন বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব। কে এম খালিদ বলেন, বঙ্গমাতার এক কথা- মামলা প্রত্যাহার করে মুক্ত মানুষ হিসেবে শেখ মুজিব আলোচনায় যোগ দিতে পারেন- প্যারোলে নয়। অবশেষে আইয়ুব খান বাধ্য হন মামলা প্রত্যাহার করে শেখ মুজিবকে মুক্তি দিতে। এমন বুদ্ধিদীপ্ত, বিচক্ষণ ও দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ব্যক্তিত্বের অধিকারী ছিলেন বঙ্গমাতা।
বাংলা একাডেমির সভাপতি বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আনোয়ারা সৈয়দ হক রচিত ‘ছোটোদের বঙ্গমাতা’ ও ‘আমার রেণু’ শীর্ষক গ্রন্থ দু’টি সম্পর্কে আলোচনা করেন যথাক্রমে সাবেক সচিব কবি আসাদ মান্নান ও বাংলা একাডেমির উপপরিচালক কবি ড. সাইমন জাকারিয়া। সূচনা বক্তৃতা করেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে বক্তব্য রাখেন বাংলা একাডেমির সচিব এ এইচ এম লোকমাস। অনুষ্ঠানে বাংলা একাডেমি প্রকাশিত ‘বঙ্গজাতিমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব : ৯২তম জন্মবার্ষিকীর শ্রদ্ধা’ শীর্ষক গ্রন্থটির আনুষ্ঠানিক মোড়ক উন্মোচন করেন প্রতিমন্ত্রী। প্রতিমন্ত্রী পরে রাজধানীর বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে মহীয়সী নারী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের ৯২তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে জাদুঘর আয়োজিত ‘মুজিব থেকে জাতির পিতা : বঙ্গমাতার অবদান’ শীর্ষক স্মারক বক্তৃতা ২০২২ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন।

[wps_visitor_counter]