জাতীয় নিরাপদ খাদ্য দিবসে প্রধানমন্ত্রীর বাণী

প্রকাশিত : ফেব্রুয়ারি ১, ২০২৩ , ৮:১৪ অপরাহ্ণ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সংগৃহীত চিত্র।

ঢাকা, ব্রডকাস্টিং নিউজ কর্পোরেশন: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ব্রিহস্পতিবার ২ ফেব্রুয়ারি ‘জাতীয় নিরাপদ খাদ্য দিবস’ উপলক্ষ্যে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন :
“বাংলাদেশের জনগণের জন্য পুষ্টিকর ও নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করার লক্ষ্য নিয়ে ষষ্ঠবারের মতো ‘জাতীয় নিরাপদ খাদ্য দিবস-২০২৩’ পালিত হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। দিবসটির এ বছরের প্রতিপাদ্য ‘নিরাপদ খাদ্য, সমৃদ্ধ জাতি; স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার চাবিকাঠি’ যথাযথ হয়েছে বলে আমি মনে করি। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের সংবিধানে মৌলিক বিষয়গুলি যেমন: অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা ও শিক্ষার উপর গুরুত্ব দিয়েছিলেন। সেখানে তিনি খাদ্যকেই সব থেকে বেশি গুরুত্ব প্রদান করেন। খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধিতে জাতির পিতা এ দেশে কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠানসমূহ প্রতিষ্ঠা ও কৃষি প্রযুক্তি সম্প্রসারণের লক্ষ্যে উল্লেখযোগ্য কার্যক্রম হাতে নিয়েছিলেন যা আজ পর্যন্ত দেশের কৃষি উৎপাদন এবং খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তায় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখে চলছে। আওয়ামী লীগ সরকার জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে সবার জন্য খাদ্য নিরাপত্তা অর্জনের পাশাপাশি জনগণের জন্য নিরাপদ খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করতে নিরলস কাজ করে চলেছে। নিরাপদ খাদ্য প্রাপ্তি মানুষের সাংবিধানিক অধিকার। মানুষের এই অধিকার পূরণ করতে আমাদের সরকার ‘নিরাপদ খাদ্য আইন-২০১৩’ প্রণয়ন করেছে এবং বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠাসহ সংশ্লিষ্ট আইন ও বিধিবিধান তৈরি করেছে। পাশাপাশি, ভেজাল খাদ্য প্রতিরোধে অন দ্য স্পট স্ক্রিনিং, মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হচ্ছে এবং যারা খাদ্যে ভেজাল দিচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক শাস্তির ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়াও নিরাপদ খাদ্য প্রাপ্তির বিষয় মাথায় রেখে ‘কৃষি সম্প্রসারণ নীতি-২০২০’ প্রণয়ন করা হয়েছে এবং এসডিজি বাস্তবায়নের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে আমাদের অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় কৃষি সংশ্লিষ্ট যাবতীয় বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। আমাদের সরকার সারাদেশে ১০০ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলছে যেখানে কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প গড়ে ওঠার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। কৃষি, খাদ্য নিরাপত্তা ও পুষ্টি অর্জনে কৃষি গবেষণা এবং উন্নয়ন, কৃষি উপকরণ সরবরাহ, কৃষি সম্প্রসারণ, সেচ কাজে পানির সাশ্রয়ী ব্যবহার, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত প্রভাব মোকাবিলা এবং প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি ও মানব সম্পদ উন্নয়ন এই ৬টি থিম্যাটিক বিষয়গুলো লক্ষ্য রেখেই প্রতিটি উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। একই সঙ্গে দেশের মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমাদের সরকার সার, বীজ ও সেচের সঙ্গে সঙ্গে কৃষিতে যান্ত্রিকীকরণের ওপর ব্যাপক জোর দিয়েছে। এতে করে খাদ্যের অপচয় এবং অনিরাপদ খাদ্যের ঝুঁকি হ্রাস পাচ্ছে। বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে বৈশ্বিক খাদ্য সংকটের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এই পরিস্থিতি থেকে বাংলাদেশকে রক্ষার জন্য সকলকে সচেতন হতে হবে এবং যার যেখানে যতটুকু পতিত জমি আছে তা চাষের আওতায় এনে খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে হবে। আমি মনে করি, খাদ্যের উৎপাদন থেকে ভোক্তা পর্যন্ত প্রতিটি ধাপে খাদ্যের নিরাপদতা ও পুষ্টিমান বজায় রাখা জরুরি। যিনি উৎপাদন প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত, তাঁর যেমন সচেতনতা প্রয়োজন; তেমনি যিনি ভোগ করবেন, তাঁর ক্ষেত্রেও নিরাপদতা প্রত্যয়টি অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। তাই সরকারি-বেসরকারি সকল প্রতিষ্ঠানকে একযোগে কাজ করতে হবে। আমি আশা করি, জনসাধারণের সচেতনতা বৃদ্ধি এবং অংশীজনদের প্রায়োগিক ভূমিকার মাধ্যমে আমরা খাদ্য উৎপাদন, আমদানি, প্রক্রিয়াকরণ ও বাজারজাতকরণে সর্বোচ্চ মান নিশ্চিত করে সবার জন্য নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে সক্ষম হবো, ইনশাআল্লাহ।
আমি ‘জাতীয় নিরাপদ খাদ্য দিবস-২০২৩’ উপলক্ষ্যে গৃহীত সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করছি।
জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু
বাংলাদেশ চিরজীবী হোক ।”

[wps_visitor_counter]