জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর বাণী

প্রকাশিত : মার্চ ৮, ২০২৩ , ৯:০০ অপরাহ্ণ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সংগৃহীত চিত্র।

ঢাকা, ব্রডকাস্টিং নিউজ কর্পোরেশন: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার ৯ই মার্চ ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার’ উপলক্ষ্যে নিম্নলিখিত বাণী প্রদান করেছেন :
“জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার-২০২১’ প্রদান উপলক্ষ্যে আমি চলচ্চিত্র নির্মাতা, পরিচালক, প্রযোজক, চিত্রনাট্যকার, অভিনেতা-অভিনেত্রী, কলাকুশলী এবং পরিবেশকসহ চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট সকলকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। আমি এ বছর জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত শিল্পী ও কলাকুশলীদের জানাই আন্তরিক অভিনন্দন। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রাদেশিক সরকারের শিল্প, বাণিজ্য ও শ্রম মন্ত্রীর দায়িত্ব পালনকালে ১৯৫৭ সালের ২৭ মার্চ প্রাদেশিক পরিষদে ইপিএফডিসি পূর্ব পাকিস্তান ফিল্ম ডেভেলপমেন্ট করপোরেশন বিল উপস্থাপন করেন, যা একই বছরের ৩ এপ্রিল পাস হয়। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলা চলচ্চিত্রের অগ্রযাত্রার একটি বড় মাইলফলক আজকের বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফডিসি) প্রতিষ্ঠিত হয়। দিনটিকে স্মরণ করে প্রতি বছর ৩ এপ্রিল জাতীয় চলচ্চিত্র দিবস উদযাপন করা হয়। স্বাধীনতার পর জাতির পিতা বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন সংস্থার উন্নয়ন, ফিল্ম আর্কাইভ প্রতিষ্ঠাসহ বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেন। আওয়ামী লীগ সরকার জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে গত ১৪ বছরে চলচ্চিত্র শিল্পের বিকাশে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে। এর মধ্যে ঢাকার অদূরে কালিয়াকৈরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ফিল্ম সিটি নির্মাণ, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন এবং বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভ আধুনিকায়ন প্রকল্প বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। চলচ্চিত্র শিল্পের মানোন্নয়নে আমরা ‘জাতীয় চলচ্চিত্র নীতিমালা-২০১৭’, ‘যৌথ প্রযোজনায় চলচ্চিত্র নীতিমালা-২০১৭’ ও ‘চলচ্চিত্র সংসদ নিবন্ধন আইন-২০১১’ প্রণয়ন করি এবং চলচ্চিত্র সেন্সর আইন ও চলচ্চিত্র সংসদ নিবন্ধন আইন যুগোপযোগী করি। অসচ্ছল ও দুস্থ চলচ্চিত্র শিল্পী ও কলাকুশলীদের জন্য বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী কল্যাণ ট্রাস্ট আইন ২০২১ প্রণয়ন করা হয়েছে। বিদেশি টিভি চ্যানেলে দেশি পণ্যের বিজ্ঞাপন প্রচার রোধ করা হয়েছে। এসব আইন ও নীতিগত পদক্ষেপ চলচ্চিত্র শিল্পের বিকাশে বিশেষ ভূমিকা রাখছে বলে আমি মনে করি। চলচ্চিত্র সাড়ে সাত কোটি মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণে অনুপ্রাণিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল। আকাশ সংস্কৃতির এই যুগে আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতিকে আন্তর্জাতিক পরিসরে তুলে ধরতে এই শিল্প বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে। আমাদের সরকার সব সময় সুস্থ ধারার চলচ্চিত্র নির্মাণকে উৎসাহ জোগাতে পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে আসছে। অনুদানপ্রাপ্ত চলচ্চিত্রের সংখ্যা ও অনুদানের পরিমাণ ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি করা হচ্ছে। জেলায় জেলায় আধুনিক সিনেমা হলসহ তথ্য কমপ্লেক্স স্থাপন করা হচ্ছে। সিনেমা হলসমূহের সংস্কার ও আধুনিক যুগোপযোগী সিনেমা হল ও সিনেপ্লেক্স নির্মাণের জন্য আমাদের সরকার অল্প সুদে ১০০০ কোটি টাকা বরাদ্দ প্রদান করছে। আমাদের চলচ্চিত্র দেশজ উপাদানে সমৃদ্ধ হয়ে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরার মাধ্যমে একটি জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস ও মাদকমুক্ত উন্নত-সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখতে পারে বলে আমি মনে করি। আমি আশা করি আগামী প্রজন্মের মধ্যে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছড়িয়ে দিতে জীবনঘনিষ্ঠ ও বাস্তবধর্মী চলচ্চিত্র নির্মাণেও আমাদের নির্মাতারা আরো এগিয়ে আসবেন। দেশের সীমানা পেরিয়ে আমাদের চলচ্চিত্র আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও ব্যাপক পরিচিত হবে এবং দেশের জন্য সুনাম বয়ে আনবে।
আমি ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার-২০২১’ প্রদান অনুষ্ঠানের সার্বিক সাফল্য কামনা করছি।
জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু
বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।”

[wps_visitor_counter]