বাংলার সার্বজনীন গ্রহণযোগ্যতা নিশ্চিত করতে হবে

প্রকাশিত : মার্চ ২৭, ২০২৩ , ৯:২০ অপরাহ্ণ

ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার, সংগৃহীত চিত্র।

ঢাকা, ব্রডকাস্টিং নিউজ কর্পোরেশন: ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, বাংলার সার্বজনীন গ্রহণযোগ্যতা নিশ্চিত করতে হবে। ডিজিটাল প্রযুক্তিতে বাংলা ভাষার উন্নয়নের দায়িত্ব আমাদের। পৃথিবীতে বাংলা ভাষাভিত্তিক একমাত্র রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশকেই তা করতে হবে। আমাদের দুর্ভাগ‌্য যে ইউনিকোডে বাংলা এনকোডিং করার সময় আমরা তার সদস্য ছিলাম না। প্রতিবেশী দেশের বাংলাভাষাভাষীরা বাংলাকে দেবনাগরীর মতো করে এনকোডিং করে আমাদের ভাষার স্বাতন্ত্রকে সম্পূর্ণভাবে অস্বীকার করেছে। আমরা দীর্ঘদিন যুদ্ধ করেও এর সমাধান করতে পারছি না। ইতোমধ‌্যে বাংলার প্রমিত মান তৈরি করা হয়েছে। বাংলার জাতীয় মান ইউনিকোডের মান হিসেবে নিশ্চিত করতে ইউনিকোড কনসোর্টিয়ামে তা পেশ করতে হবে। মন্ত্রী এ বিষয়ক গঠিত কারিগরি কমিটিতে বাংলাদেশের অংশগ্রহণের বিষয়টি নিশ্চত করার নির্দেশনা প্রদান করেন। মন্ত্রী সোমবার ঢাকায় বিটিআরসি মিলনায়তনে বিটিআরসি ও বিআইজিএফ এর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ডিজিটাল প্রযুক্তিতে বাংলা ভাষার স্বার্বজনীন গ্রহণযোগ‌্যতা এবং বাংলাদেশের পর্যবেক্ষণ বিষয়ক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন। বিটিআরসি চেয়ারম‌্যান শ‌্যাম সুন্দর সিকদার এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে তথ‌্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি, বিআইজিএফ সভাপতি হাসানুল হক ইনু সম্মানিত অতিথি, সংসদ সদস‌্য আফরোজা হক রীনা এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব আবু হেনা মোরশেদ জামান বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের নিবাহী পরিচালক রণজিৎ কুমার বক্তব‌্য রাখেন। টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই বাংলার ১৬টি টুলস উন্নয়নে ১৫৯ কোটি টাকার প্রকল্প গ্রহণ করেছেন যার কাজ চলমান। বাংলাদেশে প্রকাশনার জন্য বস্তুত একটিই কিবোর্ড ও সফটওয়্যার ব্যবহৃত হয়। আমাদের ভাষাকে একটি স্বতন্ত্র্য ভাষা হিসেবে গণ্য না করে আমাদেরকে ‘দেবনাগরীর’ অনুসারী করে প্রচণ্ড রকম ক্ষতি করা হয়েছে। এজন্যই এখনো আমাদেরকে নোক্তা নিয়ে যুদ্ধ করে বেড়াতে হচ্ছে। অথচ বাংলা বর্ণে কোনে নোক্তা নেই। ইউনিকোড যদি বাংলাকে বাংলার মতো দেখে এই সমস্যাগুলো সমাধান করে ফেলতো তাহলে যে সমস্যাগুলো এখন মোকাবিলা করতে হচ্ছে তা আমরা করতাম না। দেরি করে হলেও বাংলাদেশ ইউনিকোড কনসোর্টিয়ামে যোগ দিয়েছে ২০১০ সালে উল্লেখ করে মোস্তাফা জব্বার বলেন, তার আগে ইউনিকোড কনসোর্টিয়ামে ভারতীয় ভাষা পরিবারের যে এনকোডিংগুলো করা হয় তখন বাংলাভাষাভাষীরা ভূমিকা নিতে পারলে সংকট অনেকটাই উত্তরণ সম্ভব ছিল। তিনি বলেন, প্রযুক্তিতে বাংলা ভাষা ব্যবহারে আসকি, ইউনিকোড এবং প্রমিতের নির্দিষ্ট মান থাকলেও তার প্রয়োগ না থাকায় স্পেল চেকার, অভিধান, ওসিআর ইত্যাদিসহ বাংলা এনএলপি ব্যবহার বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। তাই এর প্রয়োগের বিষয়ে সংশ্লিষ্টদেরকে আরো সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
মন্ত্রী ইউনিকোডে বাংলা লিপি ঢ-ঢ়, ড-ড়, য-য়-তে সমস্যা থাকাতে বড় তথ্য বিশ্লেষণ, সার্চ ইঞ্জিন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় এবং ইন্টারনেট অব থিংসে বেশ সংকট দেখা দিচ্ছে উল্লেখ করে বলেন, মুদ্রণ জগতে রোমান লিপির সঙ্গে বাংলা লিপির এনকোডিং এর ক্ষেত্রে তারতম্য আছে। উল্লেখ্য ইউনিকোডের শুরু ১৯৮৭ সালে অ্যাপল কম্পিউটারের উদ্যোগে। পরে মাইক্রোসফটসহ বড় বড় তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান এ উদ্যোগে যুক্ত হয়ে ইউনিকোড কনসোর্টিয়াম গঠন করে। ১৯৮৮ সালে থাইল্যান্ডে অ্যাপলের একটি সম্মেলনে অংশ নেন আনন্দ কম্পিউটার্সের প্রধান নির্বাহী এবং বর্তমানে ডাক, টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী জনাব মোস্তাফা জব্বার। ইউনিকোডের বাংলায় সে সময় ড়, ঢ়, য় ও ৎ-এই চারটি বর্ণ ছিলই না। মোস্তাফা জব্বার বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন এবং এগুলো যুক্ত হয়।

[wps_visitor_counter]