তোমার সাথে আমার একশো একটা ব্যাপারে মতপার্থক্য কিংবা দেখার অমিল থাকতে পারে কিন্তু সেজন্য পারস্পরিক সম্পর্ক নষ্ট হবে কেন? বিতর্ক কিংবা যুক্তিতে মতের পক্ষ-বিপক্ষ বিষয়ক যেকোন সমস্যার সমাধান হবে। যদি কোন ব্যাপারে একমত হতে নাও পারি তাতেও কিছু যায়-আসে না। ভিন্নমতকে শ্রদ্ধা জানানো জরুরি, কোনকিছু মেনে নেওয়া জরুরি নয়।
আমার মুখের কথার জবাবে যদি তোমার হাত ওঠে কিংবা তোমার মত দমাতে আমি যদি অস্ত্র খুঁজি তবে আমাদের যা ছিল সব গেছে- সহনশীলতা, মানবিকতা কিংবা বিবেকবুদ্ধি- আর কিছুই অবশিষ্ট নাই। সবার থেকে সহমত আশা করলে সে সমাজ মূর্খের সমাজে পরিণত হয়। সবার স্বাধীন চিন্তা ও অন্যের চিন্তাকে সম্মান জানানোর প্রবণতাতেই তো মানুষ বড়ত্ব সৃষ্টি হয়।
চাপিয়ে দিয়েও মানিয়ে নেওয়ানো যায় তবে তাতে কাজ হয়? যে বিশ্বাস অন্তর লালন করে না সেই বিশ্বাসে ইমান আনার স্বীকারোক্তি নিলে সেই ইমানও বেঈমানী করবে! ভিন্নমত-অন্যমতকে সবসময় স্বাগতম জানানো উচিত। চিন্তার প্রসারতা না বাড়লে মানুষের দৃষ্টিসীমা বাড়ে না। শক্তি প্রয়োগ করে কারো মুখ বন্ধ করার চেয়ে আলোচনা হোক। সহমত হতে না পারলে এড়িয়ে যাওয়া হোক- তবুও আমি ঠিক আর তুমি ভুল- এমন সিদ্ধান্ত যেন একপাক্ষিক না হয়।
হাজারো ভিন্নতার পরেও যেদিন ব্যক্তিগত যোগাযোগ বন্ধ হবে না সেদিন সম্পর্ক সুন্দরতর হবে। যুক্তি তর্কে সমাধান নাই, যুক্তির মাত্রাভেদে নাই- এমন বিতর্কিত বিষয় আমাদের সামনে খুব অল্পই আছে। ঘৃণা না ছড়িয়ে, উগ্রতা না বাড়িয়ে সমাধানের পথ খুঁজলে মিলে যাবে। কত আপন আপন মানুষের মধ্যে মতের ভিন্নতা থাকে তাই বলে কি সব ত্যাগ করতে হবে? একা হয়ে বাঁচা যায় না।
হয় মেনে নেবো নয়তো মানিয়ে যাবো- এতে যাতে জবরদস্তি ভর না করে। তোমার একমত আর আমার আরকমত এটা যতি একইসাথে এলাইভ করে তাতে দুনিয়ার কি মস্তবড় ক্ষতি হয়? মতাদর্শিক লড়াইয়ে মানুষ ভিন্নতর হতে পারে, একেকজনের দেখা ও বিবেচনার দৃষ্টিভঙ্গি ভিন্নতর হতে পারে- এটা সমস্যা নয়। সমস্যা হচ্ছে একরোখা জাজমেন্টাল হওয়া! তুমি ভুল আর আমি ঠিক- জাগতিক অকল্যাণের শুরু এভাবেই ঘটে! হাতাহাতি, জখম-খুনে মতামতের লড়াই শেষ হয় না- বরং বাড়ে।
রাজু আহমেদ, প্রাবন্ধিক।
[email protected]
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।