অ্যান্টিবায়োটিকের অপব্যবহার বন্ধে কঠোর অবস্থানে সরকার

প্রকাশিত : নভেম্বর ২৩, ২০২৩ , ৮:৪১ অপরাহ্ণ

ঢাকা, ব্রডকাস্টিং নিউজ কর্পোরেশন: অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স প্রতিরোধের জন্য বর্তমান সরকার অ্যান্টিবায়োটিকের অপব্যবহার বন্ধে কঠোর অবস্থানে রয়েছে বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।
বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ) রাজধানীর ফার্মগেটে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল মিলনায়তনে বিশ্ব অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স সপ্তাহ-২০২৩ উপলক্ষ্যে আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এ কথা জানান।
মন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার অ্যান্টিবায়োটিকের অপব্যবহার রোধে কঠোর থেকে কঠোরতর ব্যবস্থা নিচ্ছে। অ্যান্টিবায়োটিকের অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহার রোধকল্পে বর্তমান সরকার আইন প্রণয়ন করেছে। এ আইনের যথাযথ ও কঠোর প্রয়োগ নিশ্চিত করতে বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে কোনও আপসের সুযোগ নেই। মানুষের স্বাস্থ্য-ঝুঁকি তৈরি করে এমন মানহীন অ্যান্টিবায়োটিক বা অন্য ঔষধ যারা তৈরি করবে, ব্যবহার করবে বা এটি নিয়ে যারা ব্যবসা করবে তাদের বিশেষ আদালতে বিচার করা হবে। এজন্য সরকার বিশেষ আইন ও বিশেষ কোর্টের ব্যবস্থা করেছে। এভাবেই সরকার অ্যান্টিবায়োটিকের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। এরপরও কিছু ফার্মেসিতে ব্যবস্থাপত্র ছাড়াই অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রি করা হচ্ছে, কিছু চিকিৎসক অ্যান্টিবায়োটিকের যথেচ্ছ ব্যবহার করছেন। আইনানুগ-ভাবে তাদের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হচ্ছে। এভাবে অ্যান্টিবায়োটিকের অপব্যবহার বন্ধই শুধু না মানব-স্বাস্থ্য, প্রাণিস্বাস্থ্য বা পরিবেশের জন্য যা কিছু ক্ষতিকর সেটি নিয়ে সরকার কাজ করছে। মন্ত্রী আরও বলেন, ওয়ান হেলথ ধারণা সারা বিশ্বে জনপ্রিয়। বর্তমান সরকার ওয়ান হেলথ ধারণা কার্যকর করার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর সরকার সমন্বিত-ভাবে ওয়ান হেলথ বাস্তবায়নে কাজ করছে। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে। মানুষের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করা ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। সে দায়িত্ব পালনে কোনও শৈথিল্য বা গাফিলতি সরকার মেনে নিচ্ছে না। এ বিষয়ে তিনি আরও যোগ করেন, মানুষের সুস্বাস্থ্য, নিরাপদ খাবার এবং জীবনমান উন্নত করার জন্য চিকিৎসা ব্যবস্থা, ঔষধের যথাযথ ব্যবহার, গুণগত মানের ঔষধ তৈরি এবং এটি তৈরিতে নজরদারির ক্ষেত্রে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে। আমাদের সবাইকে স্ব স্ব জায়গা থেকে সচেতন থাকতে হবে, দায়িত্বশীল হতে হবে। মন্ত্রী বলেন, একসময় মানসম্পন্ন ঔষধ উৎপাদন না করার কারণে সরকার বিপুল সংখ্যক ঔষধ কোম্পানির লাইসেন্স বাতিল করেছে। ঔষধে ভেজাল দেওয়ার কারণে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। বর্তমানে দেশে তৈরি হওয়া অনেক ঔষধ গুণগত মানসম্পন্ন হওয়ায় বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে। তাই ঔষধের আন্তর্জাতিক মান বজায় রাখার জন্য সরকার নজরদারি করছে, পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মোঃ এমদাদুল হক তালুকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আইইডিসিআর’র পরিচালক ডা. তাহমিনা শিরিন, বাংলাদেশে এফএও-একটাড’র কান্ট্রি লিড এরিক ব্রাম, এফএও-একটাড’র জ্যেষ্ঠ কারিগরি উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মোঃ রফিকুল ইসলাম, বিশ্ব প্রাণিস্বাস্থ্য সংস্থার কনসালটেন্ট নূর ই আলম সিদ্দিকী, বাংলাদেশে যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক ফ্লেমিং ফান্ড কান্ট্রি গ্র্যান্ট’র টিম লিড ডা. নীতিশ চন্দ্র দেবনাথ প্রমুখ। স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক ডা. মোহাম্মদ রেয়াজুল হক।

[wps_visitor_counter]