নজরুলের গান ও কবিতা ছিল মুক্তিকামী বাঙালির অফুরন্ত প্রেরণার উৎস

প্রকাশিত : মে ২৫, ২০২৩ , ১০:৫৭ অপরাহ্ণ

সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, সংগৃহীত চিত্র।

ময়মনসিংহ, ব্রডকাস্টিং নিউজ কর্পোরেশন: সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেছেন, নজরুলের গান ও কবিতা ছিল মুক্তিকামী বাঙালির অফুরন্ত প্রেরণার উৎস। মহান মুক্তিযুদ্ধে তাঁর গান ও কবিতা বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ আপামর বাঙালিকে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে, উদ্বুদ্ধ করেছে। নজরুলের কালজয়ী গান ও কবিতা আমাদের জাতীয় সত্তার সঙ্গে মিশে আছে বলেই তিনি বাঙালির জাতীয় কবির মর্যাদায় অভিষিক্ত। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে কবি নজরুলের সম্পর্ক ছিল অত্যন্ত নিবিড়। বঙ্গবন্ধু হলেন বাংলাদেশের স্বাধীনতার মহানায়ক আর নজরুল বাংলা সাহিত্যের। প্রতিমন্ত্রী বৃহস্পতিবার বিকালে জাতীয় কবির স্মৃতিধন্য ময়মনসিংহ জেলার ত্রিশালের দরিরামপুর শহিদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মিলনায়তনে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসনের যৌথ আয়োজনে তিন দিনব্যাপী (২৫-২৭ মে) জাতীয় পর্যায়ে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৪তম জন্মবার্ষিকী উদ্যাপনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তৃতা করেন বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের সংসদ উপনেতা বেগম মতিয়া চৌধুরী। প্রধান অতিথি বলেন, নজরুল কাব্যপ্রেমীদের নিকট চির অম্লান, চির ভাস্বর হয়ে আছেন। তিনি ক্ষুদ্রতাকে অতিক্রম করে গেছেন। তাই তাঁকে সংকীর্ণ গণ্ডিতে আবদ্ধ করা যাবে না, খণ্ডিত রূপে উপস্থাপন করা যাবে না। মতিয়া চৌধুরী বলেন, নজরুল সমস্ত সত্তা দিয়ে দ্রোহকে লিপিবদ্ধ করেছেন যা সমসাময়িক অনেক বিখ্যাত কবিই পারেননি। তাই তিনি বিদ্রোহী কবি।
বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেন, নজরুল সবকিছুকে ছাপিয়ে স্বমহিমায় আবির্ভূত হয়েছেন। তিনি কালোত্তীর্ণ কবি। তাঁর সৃজনশীলতা তাঁকে মহিমান্বিত করেনি বরং এর মধ্য দিয়ে আমরা মহিমান্বিত হয়েছি। রাখালের বাঁশির সুর থেকে উচ্চাঙ্গসংগীত- এমন বৈচিত্র্যময় সৃজনশীলতা শুধুমাত্র তাঁর কাব্যে প্রস্ফুটিত হয়েছে। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি সিমিন হোসেন রিমি, ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি মোঃ হাফেজ রুহুল আমিন মাদানী, ময়মনসিংহ-৩ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা নাজিম উদ্দিন আহমেদ। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ বলেন, নজরুল বাঙালির গর্ব ও অহংকার। তিনি ছিলেন সাম্যের কবি, বিদ্রোহের কবি। শোষিত, নির্যাতিত মানুষের কাণ্ডারি। নতুন চিন্তা-চেতনার মাধ্যমে তিনি বাংলা ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে সমৃদ্ধ করেছেন। সর্বোপরি, তিনি ছিলেন বিশ্বমানবতার কবি। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব খলিল আহমদ। স্মারক বক্তা হিসাবে বক্তৃতা করেন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় এর উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর দে। সম্মানীয় বক্তা হিসাবে বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট সংগীত শিল্পী ও নজরুল গবেষক খিলখিল কাজী। বিশেষ অতিথি হিসাবে আরো বক্তৃতা করেন ময়মনসিংহের বিভাগীয় কমিশনার মোঃ শফিকুর রেজা বিশ্বাস, ময়মনসিংহ রেঞ্জ এর ডিআইজি দেবদাস ভট্টাচার্য্য বিপিএম, ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক মোঃ মোস্তাফিজার রহমান, পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভূঞা পিপিএম, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ময়মনসিংহ জেলা শাখার সভাপতি মোঃ এহতেশামুল আলম, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ত্রিশাল উপজেলা শাখার সভাপতি আবুল কালাম মোঃ শামছুদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইকবাল হোসেন। পরে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিল্পীদের পরিবেশনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়। উল্লেখ্য, এবছর জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মবার্ষিকী উদ্যাপনের প্রতিপাদ্য বিষয় নির্ধারণ করা হয়েছে- ‘অগ্নিবীণার শতবর্ষ: বঙ্গবন্ধুর চেতনায় শাণিতরূপ’।

[wps_visitor_counter]