বগুড়ায় নওফেল হত্যা রহস্য উন্মোচন: বান্ধবীসহ ২ জন গ্রেফতার

প্রকাশিত : জুন ২৮, ২০২২ , ৭:৫৬ অপরাহ্ণ

নজরুল ইসলাম মিন্টু, বগুড়া জেলা প্রতিনিধি, ব্রডকাস্টিং নিউজ কর্পোরেশন: মোবাইল ফোনের জন্যই সপ্তম শ্রেণির কিশোর নওফেলকে খুন করে তারই বন্ধু। খুনের অভিযোগে নওফেলের বন্ধুকে গ্রেফতারের পর এসব বিষয় জানতে পারে পুলিশ। মঙ্গলবার বেলা ১২ টার দিকে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান বগুড়া জেলা পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী। গত ২০ জুন সন্ধ্যায় বগুড়ার শাজাহানপুরের দাড়িগাছা ফুলবাড়িয়া এলাকায় নওফেল শেখের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার হয়। এর আগে ১৮ জুন থেকে সে নিখোঁজ ছিল। ১৪ বছরের নওফেল একই এলাকার ইসরাইল শেখের ছেলে এবং দাড়িগাছা ইসলামী উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। মরদেহ উদ্ধারের পরপরই পুলিশ তদন্তে নামে। তদন্তে তার বন্ধুর সংশ্লিষ্টতা বেরিয়ে আসে। পরে ২৭ জুন দুপুর দেড়টার দিকে ঢাকার টঙ্গী পশ্চিম থানা এলাকা থেকে অভিযুক্ত ওই কিশোরকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত থাকায় বগুড়ার শেরপুরের বাসিন্দা জাকিয়া খাতুন বৃষ্টি নামে এক তরুণীও গ্রেফতার রয়েছে। জেলা পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার বলেন, ১৮ জুন নওফেলের জন্মদিন ছিল। ওই দিন তার বাবা ইসরাইল ১৮ হাজার টাকা ব্যয়ে একটি স্মার্ট-ফোন উপহার দেন। সেই মোবাইল নিয়ে নওফেল ওই ঘনিষ্ঠ বন্ধুর সাথে বাড়ি থেকে প্রায় ২ কিলোমিটার দূরে ধূমপান করতে একটি জঙ্গলে যায়। এ সময় অভিযুক্ত কিশোর পূর্বপরিকল্পনা মোতাবেক সঙ্গে একটি মাফলার নিয়েছিল। জঙ্গলে গিয়ে ধূমপানের ফাঁকে মাফলার গলায় প্যাঁচানো গল্প তুলে এই কিশোর। কিন্তু বন্ধু হওয়ার কারণে নওফেল এসবের কারণ বুঝতে পারেনি। এরই এক পর্যায়ে নওফেলের গলায় মাফলার দিয়ে প্যাঁচ দিয়ে পেছন থেকে টান দেয়। এতে কিছুক্ষণ ছটফট করে নওফেল মারা যায়। পরে পাশে থাকা একটি বাঁশ দিয়ে মাথায় পরপর দুবার আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত হলে সেখান থেকে ১৫ হাত দূরে ঝোপের ভিতরে নওফেলের মরদেহ টেনে নিয়ে গিয়ে গুম করে। এসপি সুদীপ কুমার বলেন, অভিযুক্ত কিশোর তার বান্ধবীর সঙ্গে শারিরীক সম্পর্কের জন্য অর্থের প্রয়োজন ছিল। কিন্তু তার কাছে দ্রুত এ টাকা যোগাড় করতে পারেনি অভিযুক্ত ছেলেটি। এ জন্য এই পথ বেছে নেয়। মোবাইল বিক্রির সূত্র ধরে জাকিয়া খাতুন বৃষ্টি নামে ওই তরুণীকেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ। নওফেলের মোবাইলটি হাতিয়ে নিয়ে অভিযুক্ত কিশোর জাকিয়া খাতুনের সঙ্গে দেখা করে। পরে তারা দুজনে শহরের সাতমাথায় একটি দোকানে গিয়ে ওই মোবাইল ৫ হাজার টাকায় বিক্রি করে শহরের গালাপট্টিস্থ হোটেল টুইন ব্রাদার্সে রুম ভাড়া করে সময় কাটায়। ওই কিশোরের আরেক বন্ধুও সেখানে এসে মেয়েটির সঙ্গে সময় কাটায়। পরে মেয়েটিকে দেড় হাজার টাকা দিয়ে অভিযুক্ত কিশোর চলে যায়।

[wps_visitor_counter]