মহেশপুরে কাঠ পুড়িয়ে কয়লা তৈরিতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পরিবেশ ও জীব বৈচিত্র্য

প্রকাশিত : আগস্ট ১৯, ২০২২ , ৫:০০ অপরাহ্ণ

হেলালী ফেরদৌসি, ঝিনাইদহ জেলা প্রতিনিধি, ব্রডকাস্টিং নিউজ কর্পোরেশন: বিশেষ ধরণের চুলায় অবাধে কাঠ পুড়িয়ে তৈরি করা হচ্ছে কয়লা। এই কয়লা ট্রাকে ভরে পাঠানো হচ্ছে দেশের বিভিন্ন জায়গায়। প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে বিভিন্ন বনজ ও ফলজ গাছ কেটে এসব চুলায় কাঠ সরবরাহ করা হচ্ছে। এসব চুলা থেকে নির্গত ধোঁয়ায় পরিবেশ ও জীব বৈচিত্র্যের মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। হুমকিতে পড়ছে জনস্বাস্থ্য, কমে যাচ্ছে জমির উর্বরতা। ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার যাদবপুর ইউনিয়নের পাথরা গ্রাম। এই গ্রামের বাসিন্দা মৃত ওমর আলীর ছেলে আলা উদ্দিন বাড়ির পাশের জমিতে অভিনব কায়দায় কাঠ পুড়িয়ে কয়লা বানাচ্ছেন। তিনি সেখানে স্থানীয় প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় চারটি কয়লা বানানোর চুলা তৈরি করেছেন। এসব চুলায় কাঠ পুড়িয়ে কয়লা বানানো হয়। কাঠ পুড়ানোর সময় প্রচুর কালো ধোঁয়া নির্গত হয়। এতে একদিকে যেমন বনজ সম্পদ নষ্ট হচ্ছে, অপর দিকে ধোঁয়ার কারণে শ্বাস প্রশ্বাস-জনিত নানা রোগব্যাধি দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা বাড়ছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, প্রতিদিন শত শত মণ কাঠ পোড়ানো হচ্ছে এই চুলায়। তারা প্রশাসনকে ফাঁকি দিয়ে এই ব্যবসা করছেন। তবে প্রভাবশালীদের ভয়েও কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস দেখান না। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মাটি, ইট ও কাঠের গুঁড়া মিশিয়ে তৈরি করা হয়েছে বড় আকারের বিশেষ ধরনের চুলা। চুলার মধ্যে সারিবদ্ধভাবে কাঠ সাজিয়ে একটি মুখ খোলা রেখে অন্য মুখগুলো মাটি এবং ইট দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়। খোলা মুখ দিয়ে আগুন দেওয়া হয় চুলাতে। আগুন দেওয়া শেষে সেটিও বন্ধ করে দেওয়া হয়। প্রায় ৭ থেকে ১০ দিন পোড়ানোর পর চুলা থেকে কয়লা বের করা হয়। প্রতিটি চুলাতে প্রতিবার ২০০ থেকে ৩০০ মণ কাঠ পোড়ানো হয়। পরে সেই কয়লা ঠান্ডা করে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক শ্রীরুপ মজুমদার বলেন, জানতে পেরেছি বিশেষ ধরনের চুলায় বনজ সম্পদ নষ্ট করে কাঠ পুড়িয়ে অবৈধ ভাবে কয়লা তৈরি করা হচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে খুব দ্রুতই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মহেশপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সেলিম মিয়া বলেন, খবর পেয়েছি কয়লা তৈরির সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

[wps_visitor_counter]