পঞ্চগড়ে সরকারি ঘর দেয়ার নামে টাকা নিয়ে প্রতারণার অভিযোগ

প্রকাশিত : আগস্ট ২৯, ২০২২ , ৮:৩১ অপরাহ্ণ

ডিজার হোসেন বাদশা, পঞ্চগড় জেলা প্রতিনিধি, ব্রডকাস্টিং নিউজ কর্পোরেশন:আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর পাইয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে পঞ্চগড়ের হরদেব চন্দ্র বর্মন নামে এক গ্রাম পুলিশের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় অভিযোগ পেয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে উপজেলা প্রশাসন। অভিযুক্ত গ্রাম পুলিশ হরদেব চন্দ্র বর্মন আটোয়ারী উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়ন পরিষদে কর্মরত রয়েছেন। অভিযোগে ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের কৃষ্ণনগর গ্রামের পাশে ৬নং ধামোর ইউনিয়নের জুগিকাটা ওয়ার্ডে ৭১ এর গ্রাম উন্নয়নে সরকারি ঘর হতে যাচ্ছে। ওই ৭১ গ্রামে গরীব দুঃখী সাধারণ মানুষকে আবাসিক ঘর দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে স্থানীয় বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে ঘরসহ বিভিন্ন সরকারি সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে অর্থ আদায় করে গ্রাম পুলিশ হরদেব। এদিকে কৃষ্ণনগর ওয়ার্ডে রোহিতা রানী নামে এক স্বামী পরিত্যক্ত মহিলার কাছ থেকে গ্রাম পুলিশ হরদেব চন্দ্র বর্মন গত ৬ আগস্ট ৩১ হাজার টাকা নেন। যা পরবর্তীতে আত্মসাৎ করে সাধারণ মানুষকে ঘর ও সরকারি সুযোগসুবিধা না দিয়ে হয়রানী করার অভিযোগ উঠে তার বিরুদ্ধে। একসময় ঘর না পেয়ে স্বামী পরিত্যক্ত রোহিতা রানী অসহায় হয়ে পড়লে স্থানীয়রা বিষয়টি জানতে পেরে ইউপি চেয়ারম্যানকে অবহিত করে। পরে গত ৮ আগস্ট মির্জাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের মাধ্যমে হরদেবের উপর চাপ প্রয়োগ করলে ওই নারীকে ৩১ হাজার টাকা ফেরত দেয় গ্রাম পুলিশ। তবে সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণা মূলক কর্মকাণ্ড করায় এবং টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগে গ্রাম পুলিশ হরদেব চন্দ্রের বিচার দাবী করেন এলাকাবাসী। অভিযোগের বিষয়ে কথা হয় স্বামী পরিত্যক্ত রোহিতা রানীর সাথে। তিনি বলেন, আমাকে খবর দেয় সরকারি ঘর দেয়া হবে। এর পর আমার কাছে টাকা চায়। স্বামী না থাকায় কোন ভাবে ৩১ হাজার টাকা ম্যানেজ করে ওই গ্রাম পুলিশকে দেই। কিন্তু ঘর পাওয়াতো দূরের কথা কোন খবরই পাই নি। পরে বিষয়টি স্থানীয়দের মাধ্যমে চেয়ারম্যানকে জানালে সে টাকা ফেরত দেয়। সাদেকুল ইসলাম, আব্দুল আলী, এনামুল হকসহ আরও অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, হরদেব চন্দ্র বর্মন সরকারি বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা নিয়ে দেওয়ার নাম করে অনেকের কাছে অবৈধভাবে টাকা নিয়েছে। যার কোন হিসেব নেই। অভিযোগ করলে রোহিতা রানীর টাকা ফেরত দেয় সে। তবে তার এমন কর্মকাণ্ডে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে স্থানীয়রা। কোন কাজ থাকলেও তাকে আর বিশ্বাস করা যাচ্ছে না। সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণা করার জন্য আমরা তার বিচার দাবী করছি। একই দাবী তুলেন অভিযোগকারী অন্য সদস্যরাও। এ বিষয়ে গ্রাম পুলিশ হরদেব চন্দ্র বর্মন সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, স্থানীয় কিছু কুচক্র মহলের মাধ্যমে আমাকে ফাঁসাতে মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে। যে ২৫৭জন স্বাক্ষর করে অভিযোগ করেছে তাদের অনেকের স্বাক্ষরই জাল। রোহিতা রানী আমার চাচাতো বোন। আমার ২০ শতক জমি বন্ধক চেয়েছিলো। সে হিসেবে তার সাথে কথা হয়। এবং বন্ধক হিসেবে ৫০ হাজার টাকার কথা হলে সে ৩০ হাজার টাকা আমাকে দেয়। কিন্তু তার ৩১ হাজার টাকা দাবী ছিলো। তাই চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে পুরো টাকা ফেরত দেই। মির্জাপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আব্দুস সামাদ আজাদ বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর থেকে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এ বিষয়ে আটোয়ারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুসফিকুল আলম হালিম বলেন, একটি লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর আটোয়ারী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে তদন্ত কমিটির প্রধান করে এ বিষয়ে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তদন্ত কমিটিকে আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

[wps_visitor_counter]