সবাই শান্তিচুক্তির বাস্তবায়ন চায়

প্রকাশিত : জুলাই ১৬, ২০২৩ , ১০:৫৫ অপরাহ্ণ

ঢাকা, ব্রডকাস্টিং নিউজ কর্পোরেশন: পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদক্ষ, সুদূরপ্রসারী ও প্রাজ্ঞ নেতৃত্বে কোনো তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ ছাড়া ১৯৯৭ সালের ২রা ডিসেম্বর ঐতিহাসিক পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এরই প্রেক্ষিতে ১৯৯৮ সালের ১৫ জুলাই প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় গঠিত হয়। তিনি বলেন, সবাই শান্তিচুক্তির বাস্তবায়ন চায়। সরকার শান্তিচুক্তির সকল ধারা বাস্তবায়নে আন্তরিকতার সাথে কাজ করে যাচ্ছে।
রবিবার বাংলাদেশ সচিবালয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে মন্ত্রণালয়ের ২৫ বছর পূর্তি উদযাপন উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। মন্ত্রী বীর বাহাদুর বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় গঠন হওয়ার পর থেকে বিগত ২৫ বছর যাবত পার্বত্য জেলা পরিষদ, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড ও বিদেশি দাতা সংস্থার সাথে সমন্বয় করে পার্বত্য তিন জেলার মানুষের জীবনমান উন্নয়নে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ এবং সক্রিয়ভাবে তা বাস্তবায়ন অব্যাহত রয়েছে। তিনি বলেন, বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ থাকা সত্ত্বেও পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় পার্বত্য চট্টগ্রামের সার্বিক উন্নয়নে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ এবং শান্তিচুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়নে অঙ্গীকারবদ্ধ। বীর বাহাদুর আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঐকান্তিক ইচ্ছা ও আন্তরিকতার বহিঃপ্রকাশ হিসেবে পার্বত্য চট্টগ্রামে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলায় রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং রাঙ্গামাটি মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠা যার বড় উদাহরণ। বান্দরবান পার্বত্য জেলায় উচ্চশিক্ষা লাভে বেসরকারিভাবে গড়ে ওঠেছে বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয়। এছাড়া বান্দরবান পার্বত্য জেলায় নার্সিং কলেজ, টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। তিনি বলেন, বান্দরবানের দুর্গম এলাকা থানচি উপজেলায় খুব সহজে পর্যটকরা এখন যাতায়াত করতে পারছে। বান্দরবান পার্বত্য জেলার রোয়াংছড়ি উপজেলা সদর হতে রুমা উপজেলা পর্যন্ত পল্লী সড়ক নির্মাণ, খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন পর্যটকদের আকর্ষণ করছে। পার্বত্য এলাকার ২৫ বছরের উন্নয়নের ফিরিস্তি দিতে গিয়ে মন্ত্রী বীর বাহাদুর বলেন, পাহাড়ের অধিবাসীরা এখন অন্ধকারমুক্ত। প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া উপহার সোলার প্যানেলে উৎপাদিত বিদ্যুতের মাধ্যমে দুর্গম পাহাড়ের মানুষ এখন নির্বিঘ্নে সর্বত্র নেটওয়ার্ক সেবা প্রাপ্তিসহ টিভি, মোবাইল, ফ্যান অনায়াসে চালাতে পারছে । দুর্গম পাহাড়ি এলাকার পাড়া কেন্দ্র, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ ৩ লাখ সাধারণ মানুষ সোলার প্যানেল বিদ্যুতের আওতায় এসেছে। মন্ত্রী বলেন, পাহাড়ে কাজু বাদাম, কফি চাষ, মিশ্র ফল চাষ, ইক্ষু চাষ, তুলা চাষের মাধ্যমে এখানকার কৃষকরা পার্বত্য অঞ্চল তথা দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার আমুল পরিবর্তন ঘটাতে সক্ষম হবে। পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব এর রুটিন দায়িত্বে নিয়োজিত অতিরিক্ত সচিব মো. আমিনুল ইসলামের সভাপতিত্বে এসময় অন্যান্যের মধ্যে মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব প্রদীপ কুমার মহোত্তম, যুগ্মসচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম, যুগ্মসচিব মো. হুজুর আলী, ভারত প্রত্যাগত উপজাতীয় শরণার্থী প্রত্যাবাসন ও পুনর্বাসন এবং অভ্যন্তরীণ উদ্বাস্তু নির্দিষ্টকরণ ও পুনর্বাসন সম্পর্কিত টাস্কফোর্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কৃষ্ণ চন্দ্র চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের সদস্য মো. জসীম উদ্দিন, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা টীটন খীসা, তিন পার্বত্য জেলার বিশেষ প্রতিনিধি ড. অজয় প্রকাশ চাকমা, উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা ব্র্যাকের পক্ষে সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার মো. শাখাওয়াতুল ইসলাম ও পদক্ষেপ এর সহকারী পরিচালক রফিকুল ইসলাম বক্তব্য রাখেন।

[wps_visitor_counter]