বিএনপির নির্বাচন বর্জনের ডাক ‘ফিউজ’ হয়ে গেছে

প্রকাশিত : ডিসেম্বর ২৩, ২০২৩ , ৮:২৮ অপরাহ্ণ

আশিষ চৌধুরী, বিশেষ প্রতিনিধি, ব্রডকাস্টিং নিউজ কর্পোরেশন: তথ্য ও সম্প্রচার-মন্ত্রী ড. হাছান মাহ্‌মুদ বলেছেন, বিএনপি অগ্নি-সন্ত্রাস করেও নির্বাচনের উৎসাহ-উদ্দীপনা ও আমেজকে কোনভাবেই ম্লান করতে পারেনি। অগ্নি-সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। কার্যত: বিএনপি’র নির্বাচন বর্জনের ডাক ফিউজ হয়ে গেছে।’ তিনি বলেন, ‘এগুলো দেখে বিএনপি এখন দিশেহারা হয়ে অসহযোগ কর্মসূচি দিয়েছে। কিন্তু বিএনপি’র নেতাকর্মীরাই এই অসহযোগ কর্মসূচিতে তাদের সহযোগিতা করছে না।’ শনিবার (২৩ ডিসেম্বর ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ) চট্টগ্রাম নগরীর দেওয়ানজি পুকুর লেনের ওয়াইএনটি সেন্টারে সাংবাদিকদের সাথে সমসাময়িক বিষয়ে মতবিনিময়কালে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন। দেশের নিবন্ধিত ৪৪টি রাজনৈতিক দলের মধ্যে ৩০টি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে এবং প্রতি আসনে গড়ে সাড়ে ৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন উল্লেখ করে হাছান মাহ্‌মুদ বলেন, যে সমস্ত বিদেশিদের কাছে বিএনপি বারে বারে ধর্ণা দিত, সেই বিদেশিরাও এখন নির্বাচন যাতে সুষ্ঠু হয়, নির্বাচনে যাতে কেউ বাধা না দেয়, সেই কথাই বলছে। অর্থাৎ, নির্বাচনে তত্ত্বাবধায়ক সরকার, নিরপেক্ষ সরকার, নির্বাচনকালীন সরকার, এই সমস্ত বিষয় এখন আর নেই। এখন নির্বাচনটা কিভাবে সুষ্ঠু করা প্রয়োজন সেটি নিয়েই সবাই পরামর্শ দিচ্ছে। মন্ত্রী বলেন, গতকাল এবং এর আগেও জাতিসংঘের বিবৃতি ব্রিফিংয়ে বলা হয়েছে, নির্বাচনে যাতে কেউ বাধা না দেয়, অর্থাৎ সহিংসতা না হয়। একই সাথে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও বলেছে, দেশে একটি সুষ্ঠু ও সুন্দর নির্বাচন তারা দেখতে চাই। বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবাইকে হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন নির্বাচনকালে যেন কেউ সহিংসতা না করে এবং অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন করার জন্য। সত্যিকার অর্থে, দেশে অত্যন্ত সুন্দর ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। সেজন্য সরকার নির্বাচন কমিশনকে সর্বোচ্চ সহায়তা করছে। নির্বাচন সুষ্ঠু ও উৎসবমুখর হবে এটি অনুধাবন করতে পেরে বিএনপি তাদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও অগ্নিসন্ত্রাসকে ভিন্নমাত্রায় নিয়ে গেছে মন্তব্য করে মন্ত্রী বলেন, ‘তারা এখন ট্রেনে হামলা চালানো শুরু করেছে, কয়েকদিন আগে যেভাবে ট্রেনে ঘুমন্ত মানুষের ওপর পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে মা এবং শিশু সন্তানসহ চারজনকে হত্যা করেছে এগুলো মধ্যযুগীয় বর্বরতাকেও হার মানিয়েছে। সবচেয়ে বড় ব্যাপার, সেটি যত না নৃশংস ও বীভৎস ছিল, তার চেয়েও নৃশংস ও বীভৎস মিথ্যাচার করেছে বিএনপি নেতা রিজভী আহমেদসহ অন্যরা। চট্টগ্রামের কয়েকটি নির্বাচনি এলাকায় ইতোমধ্যে সহিংস ঘটনা ঘটেছে, সামনে আরো বেশি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান মাহ্‌মুদ বলেন, নির্বাচনে সহিংসতা কোনভাবেই কাম্য নয়। যে বা যারা করছে তারা নির্বাচনি আচরণবিধি ভঙ্গ করছে। নির্বাচন কমিশন সেক্ষেত্রে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। আমাদের দলেরও কেউ করলে সেটি আমরা বরদাস্ত করব না। প্রয়োজনে তাদের বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা হতে পারে। নির্বাচনের দিন ভোটকেন্দ্রে জনগণকে না আসার জন্য বিএনপি লিফলেট বিতরণসহ প্রচারণা চালাচ্ছে, এটি কাটিয়ে জনগণকে কিভাবে ভোটকেন্দ্রে নিয়ে আসবেন সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপির এ ধরনের লিফলেট বিতরণ করে মূলত ঢাকা শহরে ফটোসেশন করা হয়। সকালবেলা যখন মানুষ ঘুম থেকে উঠে না, তখন দৌড় দিয়ে একটা মিছিল করা হয়, আর একটা ছবি তোলা হয়। এগুলোর কোন ইমপ্যাক্ট নির্বাচনে নেই।’ চট্টগ্রাম মেডিকেলে আইসিইউ বেডের সংকট রয়েছে, আগামী ২৭ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগ নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করবেন, স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতের জন্য সেখানে কোন উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে কি না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, আমাদের সরকার প্রতিটি জেলা শহরে আইসিইউ বেড স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে, অনেক জেলা শহরে স্থাপন করা হয়েছে। চট্টগ্রাম মেডিকেলের জন্য একটি বড় প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে, সেটি হলে সেখানে শুধু আইসিইউ নয়, সমস্ত সুযোগসুবিধা বৃদ্ধি পাবে। মন্ত্রী বলেন, ‘আরেকটি বিষয় হচ্ছে, স্বাস্থ্য সেবার সাথে যুক্ত একটি চক্র চায় না সরকারি সুযোগসুবিধা বৃদ্ধি পাক। তারা মনে করে, সরকারি সুযোগসুবিধা বৃদ্ধি পেলে যেসব প্রাইভেট ক্লিনিক, হাসপাতাল আছে সেগুলোর ব্যবসা কমে যাবে। এই চক্রটা সরকারি হাসপাতালগুলোকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করার ক্ষেত্রে এবং সুযোগসুবিধা বৃদ্ধি করার ক্ষেত্রে একটি প্রতিবন্ধক। পত্র-পত্রিকায়ও রিপোর্ট বেরিয়েছে, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজসহ বিভিন্ন মেডিকেলে ইকুইপমেন্ট কেনা হয়েছে, সেগুলো বছরের পর বছর তালাবদ্ধ থাকার কারণে নষ্ট হয়ে গেছে। সরকার কিনে দেয়ার পরও যারা সরকারি সুযোগসুবিধা বৃদ্ধি করতে চাই না, সেগুলোকে চালু করে না, এরা আসলে জনগণের বিপক্ষে কাজ করছে, এবং এটি কোনভাবেই কাম্য নয়, বলেন- তথ্যমন্ত্রী।

[wps_visitor_counter]