আমাদের পররাষ্ট্রনীতির মূল প্রতিপাদ্য হচ্ছে সবার সাথে বন্ধুত্ব কারো সাথে বৈরিতা নয়

প্রকাশিত : জানুয়ারি ১৪, ২০২৪ , ৯:১৬ অপরাহ্ণ

ঢাকা, ব্রডকাস্টিং নিউজ কর্পোরেশন: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহ্‌মুদ বলেছেন, আমাদের পররাষ্ট্রনীতির মূল প্রতিপাদ্য হচ্ছে সবার সাথে বন্ধুত্ব কারো সাথে বৈরিতা নয়। বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটের বিভক্তি অবশ্যই আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জ কিন্তু আমরা আমাদের নীতিতে অবিচল আছি এবং থাকব। বিভিন্ন দেশের নানা মত থাকে কিন্তু দিন শেষে আমরা সবাই একসাথে কাজ করব। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে পূর্ব-পশ্চিম সমস্ত রাষ্ট্রগুলো আমাদের সরকারের সাথে কাজ করার আগ্রহ ব্যক্ত করেছে, অভিমত প্রকাশ করেছে। সবাই আমাদের উন্নয়ন সহযোগী। সবাইকে সাথে নিয়ে আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাব। এটিই হচ্ছে শেষ কথা।’ নানা দেশের নানা মত থাকবে, কিন্তু দিন শেষে সবাইকে নিয়ে আমরা একসাথে কাজ করব। পাশাপাশি পশ্চিমা বিশ্বসহ সমগ্র পৃথিবীর বহু দেশ নতুন সরকারকে অভিনন্দন জানিয়েছে এবং নির্বাচন নিয়ে কোনো চাপ নেই উল্লেখ করেন তিনি। রবিবার (১৪ জানুয়ারি ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে দায়িত্ব গ্রহণের পর মন্ত্রণালয়ের মিলনায়তনে গণমাধ্যমের সাথে মতবিনিময় সভায় মন্ত্রী এ কথা বলেন। পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, সচিব (সামুদ্রিক বিষয়ক ইউনিট) রিয়াল এডমিরাল (অবঃ) মোঃ খুরশেদ আলম, অতিরিক্ত পররাষ্ট্র সচিব ড. মোঃ নজরুল ইসলাম এবং মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাবৃন্দ ও গণমাধ্যম প্রতিনিধিরা সভায় যোগ দেন। ‘মতবিনিময়ে মন্ত্রী অর্থনৈতিক কূটনীতির ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। তিনি বলেন, আমাদের দেশ এখন রেমিটেন্স আয়ের ক্ষেত্রে পৃথিবীর যে সমস্ত দেশ উচ্চ আয় করে তাদের মধ্যে একটি এবং যারা বেশি জনশক্তি রপ্তানি করে সেই দেশগুলোর মধ্যে একটি। কোনো কোনো দেশে কিছু সমস্যা আছে আমরা সেগুলোর দিকে আমরা অবশ্যই নজর দেব যাতে জনশক্তি শুধুমাত্র সংখ্যায় নয়, দক্ষ জনশক্তি রপ্তানি বৃদ্ধি পায়। আমাদের যে জনশক্তি বিদেশে কাজ করে সেই প্রবাসী বাংলাদেশিদের বৈধ পথে রেমিটেন্স পাঠানোকে উৎসাহিত করা এবং ব্যাংকিং চ্যানেলগুলোকে অবারিত এবং সহজলভ্য করা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। দক্ষিণ আমেরিকা, আফ্রিকাসহ নতুন জনশক্তির বাজার উন্মুক্ত করাও আমাদের লক্ষ্য।
রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের জন্য আমাদের কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। আশা করি খুব সহসা কূটনৈতিকভাবে এর সমাধান হবে। রোহিঙ্গারা যে শুধু এখন এসেছে তা নয়, দেশ বিভাগের আগে থেকে তারা আসা শুরু করেছে। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরও কয়েক দফা এসেছে। কিছু কিছু সমস্যার সমাধান হয়েছে এবং আশা করি অন্যান্য রাষ্ট্রের সহযোগিতায় এই সমস্যা সহসাই সমাধান হবে। নির্বাচন নিয়ে কোনো চাপ আছে কি না, এ প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা কারো চাপ অনুভব করছি না, নির্বাচন নিয়ে বহু চাপ, গভীর, মধ্যম নানা ধরনের চাপ ছিল, সব চাপ উতরে নির্বাচন হয়ে গেছে। আমরা কারো চাপ অনুভব করছি না। আমরা সবার সাথে একযোগে কাজ করব।’ ড. হাছান আরো বলেন, ‘৭ জানুয়ারির নির্বাচনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত, ওআইসিভুক্ত, সার্কভুক্ত দেশগুলো এবং এর বাইরেও আন্তর্জাতিক সংস্থা থেকে বিপুল সংখ্যক পর্যবেক্ষকরা এসেছিল। তারা অকপটে শিকার করেছে এবং প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায় জানিয়েছে, দেশে একটি সুষ্ঠু অবাধ, জনগণের ব্যাপক অংশগ্রহণে উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং ইতিমধ্যেই বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান, সরকারপ্রধান প্রধানমন্ত্রীকে নতুন সরকার গঠন করার জন্য অভিনন্দন জানিয়েছে। মন্ত্রিপরিষদের শপথ গ্রহণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো, ভারত, রাশিয়া, চীন এবং বিভিন্ন দেশের বিপুল সংখ্যক রাষ্ট্রদূতরা উপস্থিত ছিলেন। অর্থাৎ তারা নতুন সরকারকে সম্ভাষণ জানানোর জন্য সেখানে উপস্থিত ছিলেন এবং সবাই আমাদের নতুন সরকারের সাথে কাজ করার অভিমত ব্যক্ত করেছে।’ মতবিনিময় শেষে এ দিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হন ও বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দেন।

[wps_visitor_counter]