বিশ্ব বেতার দিবসে প্রধানমন্ত্রীর বাণী

প্রকাশিত : ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২৩ , ১১:০৩ অপরাহ্ণ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সংগৃহীত চিত্র।

ঢাকা, ব্রডকাস্টিং নিউজ কর্পোরেশন: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোমবার ১৩ ফেব্রুয়ারি ‘বিশ্ব বেতার দিবস-২০২৩’ উপলক্ষ্যে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন :
“বিশ্ব বেতার দিবস-২০২৩’ উপলক্ষ্যে বেতারের শিল্পী, শ্রোতা, সম্প্রচারকারী ও কলাকুশলীসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।
বেতার দিবসের এবছরের প্রতিপাদ্য ‘বেতার ও শান্তি (Radio and Peace) ‘- ইউক্রেন-রাশিয়ার চলমান যুদ্ধে বিপর্যস্ত বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতিতে অত্যন্ত সময়োপযোগী হয়েছে বলে আমি মনে করি। বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ এবং প্রাচীনতম গণমাধ্যম বাংলাদেশ বেতার। ১৯৩৯ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ বেতার যাত্রা শুরু করার পর থেকে এ অঞ্চলের মানুষের জীবন মানোন্নয়ন, দারিদ্র্য বিমোচন, কৃষি উন্নয়ন, সাক্ষরতার হার বৃদ্ধি, শিক্ষার মানোন্নয়ন, নারীর ক্ষমতায়ন, শিশু ও মাতৃ মৃত্যুর হার হ্রাস, দেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য বিশ্ব দরবারে তুলে ধরাসহ সার্বিক উন্নয়নে অনবদ্য ভূমিকা রেখে আসছে। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র মহান মুক্তিযুদ্ধে দ্বিতীয় ফ্রন্ট হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছিল, যা ১৯৭১ সালে আমাদের মহান মুক্তি সংগ্রামে অনন্য ভূমিকা রাখে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ তৎকালীন স্বৈরশাসকের বাধা উপেক্ষা করে ৮ মার্চে বেতারে প্রচার মুক্তিকামী বাঙালিকে অনুপ্রাণিত করে এবং মুক্তিযুদ্ধের পুরোটা সময় বাংলাদেশ বেতার নিরলসভাবে এদেশের জনগণকে উদ্বুদ্ধ ও অনুপ্রাণিত করে। বাংলাদেশ বেতার বিনোদন ও তথ্য সমৃদ্ধ বৈচিত্র্যময় অনুষ্ঠান এবং বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ সম্প্রচারের মাধ্যমে জনগণের দোরগোড়ায় একনিষ্ঠভাবে নিরন্তর সেবা পৌঁছে দিচ্ছে। একইসঙ্গে, সমসাময়িক ও যুগের চাহিদা মেটাতে ডিজিটাল প্রযুক্তির সাথে তাল মিলিয়ে বর্তমানে অ্যাপ-এর মাধ্যমে বাংলাদেশ বেতারের সংবাদ ও অনুষ্ঠান ইন্টারনেটে দেশের পাশাপাশি বহির্বিশ্বের শ্রোতার কাছেও পৌঁছে যাচ্ছে। জনমানুষের কাছে নানা তথ্য পৌঁছে দেওয়ার মাধ্যমে তাদের জীবনমান উন্নয়নে বাংলাদেশ বেতার রেখে চলেছে তার মূল্যবান ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। আপামর জনতার শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিনোদন ও জীবনমান উন্নয়নে বাংলাদেশ বেতার জড়িয়ে আছে নিবিড়ভাবে। আওয়ামী লীগ সরকার গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে। ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে দেশে প্রথম স্যাটেলাইট বেসরকারি টেলিভিশন চালুর অনুমতি দেয় আমাদের সরকার। তথ্য অধিকার নিশ্চিত করতে প্রণয়ন করা হয়েছে ‘তথ্য অধিকার আইন- ২০০৯’। এছাড়াও প্রণয়ন করা হয়েছে ‘জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালা-২০১৪’। বেসরকারি খাতে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে অনেকগুলো টেলিভিশন চ্যানেল, এফএম রেডিও এবং কমিউনিটি রেডিও। ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১’ উৎক্ষেপণের মাধ্যমে অডিও, ভিজ্যুয়ালসহ ইলেকট্রনিক যোগাযোগে এসেছে নতুন মাত্রা। দেশে গণমাধ্যম এখন ভোগ করছে পূর্ণ স্বাধীনতা।
গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষায়, তথ্যের অবাধ প্রবাহ নিশ্চিত করতে, বৈচিত্র্য আনয়নে এবং দেশের সার্বিক উন্নয়নে জনগণের সম্পৃক্ততা বৃদ্ধিতে বাংলাদেশ বেতারের ভূমিকা প্রশংসনীয়। এছাড়াও আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার, সঠিক বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ ও প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত প্রচার এবং সৃজনশীল অনুষ্ঠান বেতারকে আরও বেশি সংখ্যক শ্রোতার কাছে নিয়ে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। স্বাধীনতার সুফল জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে আওয়ামী লীগ সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আমার প্রত্যাশা- বাংলাদেশ বেতার সরকারের চলমান ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকাণ্ড মানুষকে অবহিত করা অব্যাহত রাখবে এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ তথা জাতির পিতার আজীবন স্বপ্নের ‘সোনার বাংলাদেশ’ বিনির্মাণে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবে।
আমি ‘বিশ্ব বেতার দিবস-২০২৩’ উপলক্ষ্যে গৃহীত সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করছি।
জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু
বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।”

[wps_visitor_counter]