বিশ্ব হাইড্রোগ্রাফি দিবসে প্রধানমন্ত্রীর বাণী

প্রকাশিত : জুন ২০, ২০২৩ , ৫:১০ অপরাহ্ণ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সংগৃহীত চিত্র।

ঢাকা, ঢাকা, ব্রডকাস্টিং নিউজ কর্পোরেশন: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার ‘বিশ্ব হাইড্রোগ্রাফি দিবস-২০২৩’ উপলক্ষ্যে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন:
“বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও ‘বিশ্ব হাইড্রোগ্রাফি দিবস-২০২৩’ উদ্যাপন করা হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। বাংলাদেশ নৌবাহিনী দিবসটি উদ্যাপনের আয়োজন করায় আমি এর সকল সদস্যকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাচ্ছি।
এবছর দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘Hydrography- Underpinning the Digital Twin of the Ocean’, যা অত্যন্ত সময়োপযোগী হয়েছে বলে আমি মনে করি যা বর্তমান সরকারের ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ ধারণার সমার্থক। নিরাপদ নৌ চলাচল নিশ্চিত করার মাধ্যমে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে হাইড্রোগ্রাফির তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রয়েছে। ‘বিশ্ব হাইড্রোগ্রাফি দিবস- ২০২৩’ উদ্যাপনের মাধ্যমে হাইড্রোগ্রাফিক কর্মকাণ্ড ও সমুদ্র বিজ্ঞানের বিভিন্ন দিক দেশের জনগণের সামনে সহজভাবে উপস্থাপন করা সম্ভব হবে বলে আমার বিশ্বাস। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশকে শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড় করাতে দেশের সমুদ্র এলাকা ও সমুদ্রসম্পদ এর গুরুত্ব উপলব্ধি করেন। তিনি ‘টেরিটোরিয়াল ওয়াটারস্ এন্ড মেরিটাইম জোনস্ এ্যাক্ট-১৯৭৪’ প্রণয়ন করেন, যা ছিল আমাদের সমুদ্র এলাকার ওপর সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ। এরই ধারাবাহিকতায়, আওয়ামী লীগ সরকার ২০১২ সালে মিয়ানমারের সাথে এবং ২০১৪ সালে ভারতের সাথে সামুদ্রিক বিরোধ মিটিয়ে বঙ্গোপসাগরের ১ লাখ ১৮ হাজার ৮১৩ বর্গকিলোমিটার সমুদ্র এলাকার ওপর বাংলাদেশের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠিত করে। ২০২১ সালে আমরা ‘টেরিটোরিয়াল ওয়াটারস্ এন্ড মেরিটাইম জোনস্ এ্যাক্ট-১৯৭৪’ কে সংশোধন ও হালনাগাদ করি। বঙ্গোপসাগরের সুবিশাল নতুন এই সমুদ্র এলাকা এবং এর অযুত সম্পদ আমাদের জন্য উন্মুক্ত করেছে সম্ভাবনার নতুন দুয়ার। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনে বাংলাদেশে স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট ইকোনমি, স্মার্ট গভর্নমেন্ট ও স্মার্ট সোসাইটি গড়ে তোলার প্রয়াসে বর্তমান সরকার সুনীল অর্থনীতিকে প্রাধান্য দিয়েছে। সমুদ্র তলদেশের বিজ্ঞানভিত্তিক তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর হাইড্রোগ্রাফিক সার্ভিস নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আমরা ২০১০ সালে যুক্তরাজ্য থেকে নৌবাহিনীর জন্য প্রথম হাইড্রোগ্রাফিক সার্ভে জাহাজ সংগ্রহ করি। ২০২০ সালে দেশীয় প্রযুক্তিতে স্থানীয়ভাবে তৈরি আরো দুইটি কোস্টাল সার্ভে জাহাজ নৌবাহিনীতে কমিশন লাভ করে। এছাড়া নৌবাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধির প্রয়াসে যুগোপযোগী প্রযুক্তি, জাহাজ, এয়ারক্র্যাফট, ওশানোগ্রাফিক রিসার্চ ভেসেল সংযুক্ত করাসহ ফোর্সেস গোল ২০৩০ বাস্তবায়ন দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে। নৌবাহিনীর নেতৃত্বে বাংলাদেশের হাইড্রোগ্রাফিক কর্মকাণ্ড ও প্রশিক্ষণের মান আজ সারা বিশ্বে স্বীকৃত। আমরা সমুদ্র ও হাইড্রোগ্রাফির বিভিন্ন ক্ষেত্রে বৈশ্বিক, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ফোরামে নেতৃত্বশীল ভূমিকা রেখে চলেছি। আমার প্রত্যাশা, দেশের সীমিত সম্পদ ও কষ্টার্জিত অর্থকে কাজে লাগিয়ে নৌসদস্যগণ মাতৃভূমির জন্য সর্বশক্তি দিয়ে কাজ করে যাবেন। সুনীল অর্থনীতিকে আরো বেগবান করার লক্ষ্যে হাইড্রোগ্রাফি পেশার সঙ্গে যুক্ত সকলকে আমি কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করার আহ্বান জানাই। বাংলাদেশ আজ উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হয়েছে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, সুনীল অর্থনীতির সকল সম্ভাবনা কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশকে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশে পরিণত করতে সক্ষম হব।
আমি ‘বিশ্ব হাইড্রোগ্রাফি দিবস-২০২৩’ উপলক্ষ্যে গৃহীত সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করছি।
জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু
বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।”

[wps_visitor_counter]