২৮তম জাতীয় প্রশিক্ষণ দিবসে প্রধানমন্ত্রীর বাণী

প্রকাশিত : জানুয়ারি ২২, ২০২৪ , ৫:২৯ অপরাহ্ণ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সংগৃহীত চিত্র।

ঢাকা, ব্রডকাস্টিং নিউজ কর্পোরেশন: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মঙ্গলবার ২৮তম জাতীয় প্রশিক্ষণ দিবসে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন :
“বাংলাদেশ প্রশিক্ষণ ও উন্নয়ন সমিতি (বিএসটিডি) ২৮তম জাতীয় প্রশিক্ষণ দিবস উদ্‌যাপন করতে যাচ্ছে জেনে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। এ উপলক্ষ্যে আমি বিএসটিডি-এর সাথে সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাচ্ছি।
সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর উন্নয়ন দর্শন ও সোনার বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্নকে সফলভাবে বাস্তবায়নের অঙ্গীকার নিয়ে আওয়ামী লীগ সরকার রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে অত্যন্ত নিষ্ঠার সাথে কাজ করে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের কাতারে শামিল হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছে। উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবেও বাংলাদেশ এখন আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সমাদৃত হচ্ছে। গত ১৫ বছর ধারাবাহিকভাবে সরকার পরিচালনা করে আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছি। আমাদের বর্তমান লক্ষ্য ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ে তোলা। তাছাড়া ২০৩০ সালের মধ্যে জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের জন্য ধার্যকৃত সবক’টি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে আমরা দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাচ্ছি এবং সেই সাথে ‘বাংলাদেশ বদ্বীপ পরিকল্পনা, ২১০০’ বাস্তবায়ন শুরু করেছি। আমাদের এ সকল পরিকল্পনার মধ্যে মানবসম্পদ উন্নয়নকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।
বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারি, চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং মুক্তিকামী ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরাইলি দখলদার বাহিনীর হামলার কারণে সৃষ্ট বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকট, মিয়ানমারে গণহত্যা প্রসূত মানবিক বিপর্যয় ও প্রাণভয়ে পালিয়ে আসা ১১ লাখের ওপর রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী আমাদের স্বাভাবিক উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় বাড়তি চাপ সৃষ্টি করেছে। আমাদের সরকার বর্তমান ও ভবিষ্যতের যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে উন্নত-সমৃদ্ধ রাষ্ট্র বিনির্মাণের লক্ষ্যে সবরকম প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে।
আমরা সরকারি কর্মচারীদের কর্মক্ষেত্রে পেশাদারিত্ব, কাজের গুণগত মান ও কাজের গতি বৃদ্ধি করার উদ্দেশ্যে নানামুখী ও বাস্তবধর্মী কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছি। আমাদের জনপ্রশাসনে প্রশিক্ষণের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা অনুধাবন করে প্রশিক্ষণ খাতের উন্নয়ন ও সংস্কার কার্যক্রম আরো শক্তিশালী ও বেগবান করেছি। প্রশিক্ষণ খাতে বরাদ্দ বাড়ানোসহ প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানসমূহের অবকাঠামো উন্নয়ন করে দিচ্ছি। ক্যাডার অফিসারদের বুনিয়াদি প্রশিক্ষণের মেয়াদ চার মাস থেকে বাড়িয়ে ছয় মাস করেছি। বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসকে সেবাধর্মী, উন্নয়নবান্ধব ও আধুনিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে দেশ-বিদেশে প্রশিক্ষণের পরিসর বাড়ানোসহ নানাবিধ সংস্কার কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করছি। আমি বিশ্বাস করি, যথাযথ প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে একজন কর্মীর মনোবল, দক্ষতা ও সার্বিক মানোন্নয়ন সম্ভব; যা মানবসম্পদ উন্নয়নের মূল চাবিকাঠি।
বিএসটিডি দীর্ঘকাল ধরে মানবসম্পদ উন্নয়নের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কোর্স পরিচালনা করে আসছে। প্রতিষ্ঠানটি প্রশিক্ষণ বিষয়ক বাস্তবধর্মী কর্মসূচি উদ্ভাবন, গবেষণা পরিচালনা, সরকারি-বেসরকারি প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানসমূহের সঙ্গে সমন্বয়পূর্বক উচ্চতর প্রশিক্ষণ আয়োজন করে আমাদের মানবসম্পদ উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। তাছাড়া প্রতিষ্ঠানটি নিয়মিত প্রশিক্ষণ জার্নাল ও নিউজ লেটার প্রকাশ করছে এবং প্রশিক্ষণ ও মানবসম্পদ উন্নয়নে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ‘বিএসটিডি প্রশিক্ষণ পুরস্কার’ প্রবর্তন করেছে।
আমি আশা করি, বিএসটিডি আমাদের সরকারের গৃহীত উন্নয়ন পরিকল্পনাসমূহকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সার্বিক সহায়তা করবে, ২০৪১ সাল নাগাদ বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশের অবস্থান থেকে ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত ও সমৃদ্ধ ‘সোনার বাংলাদেশ’ তথা ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গঠনে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখবে।
আমি ২৮তম জাতীয় প্রশিক্ষণ দিবস উপলক্ষ্যে গৃহীত সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করছি।
জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু
বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।”

[wps_visitor_counter]