জাতীয় পাট দিবসে প্রধানমন্ত্রীর বাণী

প্রকাশিত : মার্চ ৫, ২০২৪ , ৯:১৮ অপরাহ্ণ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সংগৃহীত চিত্র।

ঢাকা, ব্রডকাস্টিং নিউজ কর্পোরেশন: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার ৬ মার্চ ‘জাতীয় পাট দিবস-২০২৪’ উপলক্ষ্যে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন:
“‘জাতীয় পাট দিবস-২০২৪’ উপলক্ষ্যে আমি পাট চাষিসহ এখাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলকে শুভেচ্ছা জানাই। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘বঙ্গবন্ধুর সোনার দেশ, স্মার্ট পাটশিল্পের বাংলাদেশ’ প্রাসঙ্গিক ও সময়োপযোগী বলে আমি মনে করি।
পাটের সঙ্গে রয়েছে এদেশের মানুষ আর আমাদের মহান স্বাধীনতার এক নিবিড় যোগসূত্র। দেশ বিভাগের পর থেকেই তৎকালীন পাকিস্তানি ঔপনিবেশিক শাসকগোষ্ঠী দেশের পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি হতে অর্জিত মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রার ন্যায্য হিসাব থেকে আমাদের বঞ্চিত করে। এ অন্যায়, অবিচার ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৬৬ সালের ৬ দফা কর্মসূচির ৫ম দফায় বৈদেশিক মুদ্রার ওপর প্রদেশ বা অঙ্গরাজ্যগুলোর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ দাবি করেন। পাটকে জাতীয় সম্পদ হিসেবে বিকাশের পরিকল্পনা করেন তিনি। জাতির পিতা স্বাধীনতার পরে ১৯৭২ সালের ২৬ মার্চ বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল এন্টারপ্রাইজ (ন্যাশনালাইজেশন) অর্ডার এর আওতায় সব পাটকল জাতীয়করণ করেন। একই বছর তিনি বাংলাদেশ জুট মিলস করপোরেশন (বিজেএমসি) এবং ১৯৭৪ সালে পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিজেআরই) প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি পাটশিল্পের উন্নয়নে পঞ্চবার্ষিক (১৯৭৩-৭৮) পরিকল্পনার উদ্যোগ গ্রহণ করেন। পাটখাত নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের গঠনমূলক উদ্যোগের ফলে পাট মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। ১৯৭৫ সালে জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যার পর পাট খাতে নেমে আসে ভয়াবহ বিপর্যয়। লোকসানের কারণ দেখিয়ে নামমাত্র মূল্যে ব্যক্তিমালিকানায় ছেড়ে দেয়ার নামে পাট শিল্পকে ধ্বংসের মুখে ফেলে দেওয়া হয়।
জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে আওয়ামী লীগ সরকারের ধারাবাহিক পৃষ্ঠপোষকতা পাটের হারানো ঐতিহ্যকে পুনরুদ্ধার এবং অধিক সমৃদ্ধশালী করতে সক্ষম হয়েছে। বিশ্বব্যাপী পরিবেশের ওপর প্লাস্টিক ও পলিথিনের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে ব্যাপক জনসচেতনতা সৃষ্টি হওয়ায় বিকল্প প্রাকৃতিক তন্তু হিসেবে পরিবেশবান্ধব সোনালি আঁশ পাটের ব্যবহার বৃদ্ধি পেয়েছে। পাট চাষে কৃষকদের আগ্রহ সৃষ্টি, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে পাট ও পাট পণ্যের ব্যবহার বৃদ্ধি এবং বিশ্বব্যাপী সোনালি আঁশের উজ্জ্বল সম্ভাবনা তুলে ধরতে সোনালি আঁশ পাটকে কৃষিপণ্য হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। আমাদের সরকার কর্তৃক প্রণীত ‘পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার আইন-২০১০’, ‘পাট আইন-২০১৭’, ‘জাতীয় পাটনীতি-২০১৮’, ও ‘চারকোল নীতিমালা-২০২২’ পাটখাতের সার্বিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ নীতি সহয়তা হিসেবে কাজ করছে।
আওয়ামী লীগ সরকারের সময়োপযোগী ও ইতিবাচক পদক্ষেপের কারণে পাটখাত আজ দেশের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় এক অন্যতম অনুষঙ্গ। বৃদ্ধি পেয়েছে পাটের বহুমুখী মূল্যবান ব্যবহার। পাট বিষয়ে আমাদের আছে সুদক্ষ পাট চাষি, আছে উপযোগী জাত, উন্নত উৎপাদন প্রযুক্তি ও ব্যবস্থাপনা, আর আছে বহুমুখী ব্যবহারের বিভিন্ন পাটপণ্য এবং ব্যবহারের বিভিন্ন উপযোগী ক্ষেত্র। আমি মনে করি, সরকারি-বেসরকারি সকলের সমন্বিত প্রচেষ্টায় পাট চাষ ও পাটজাত পণ্যের ব্যবহার বৃদ্ধির মাধ্যম দেশের গ্রামীণ অর্থনীতি, দারিদ্র্যবিমোচন এবং সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে আরো বহুদূর।
আমি ‘জাতীয় পাট দিবস-২০২৪’ উপলক্ষ্যে গৃহীত সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করছি।
জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু
বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।”

[wps_visitor_counter]