চাঁপাইনবাবগঞ্জে নতুন জাতের আমের সন্ধান পেয়েছে উদ্যান তত্ত্ববিদরা

প্রকাশিত : আগস্ট ২৩, ২০২২ , ৭:১৮ অপরাহ্ণ

মোঃ আশরাফুল ইসলাম, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি, ব্রডকাস্টিং নিউজ কর্পোরেশন: চাঁপাইনবাবগঞ্জে নতুন জাতের একটি আমের সন্ধান পেয়েছে উদ্যান তত্ত্ববিদরা। বরেন্দ্র অঞ্চলের জৈটাবটতলা এলাকার দিঘা গ্রামে হাসমত আলীর বাগানে আমটির খোঁজ পাওয়া গেছে। আমটিকে গত ৪ বছর ধরে পর্যবেক্ষণে রেখেছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ হর্টিকালচার সেন্টারের উদ্যান তত্ত্ববিদরা। নাবি জাতের এ আমটি পর্যবেক্ষণ করছেন হার্টিকালচার সেন্টারের সহকারী উদ্যান উন্নয়ন কর্মকর্তা শাহিন সালেহউদ্দিন। তার কথামতে – ‘গাছটি প্রায়ই ক্ষিরশাপাত আম গাছের মতো দেখতে। মাঘ-ফাল্গুন মাসের মধ্যে মুকুল আসে। সাধারণত এ আম ৫-৬ মাস পর পাকে। আমের খোসা মাঝারী মসৃণ। আমটি পাকলে বোটার দিকে লালচে বর্ণের হয়। আঁটি পাতলা আর আমে কোন আঁশ নেই।’ সালেহউদ্দিন জানান; ‘আমটি সর্বোচ্চ ওজন এক কেজিরও বেশি হয় আর সর্বনিম্ন প্রায় ৪০০ গ্রাম। এ আমের মিষ্টতার পরিমাণ প্রায় ২৪ শতাংশ। ৩-৪ বছর পর গাছে ফলন হবে। ছোট-গাছে প্রায় ২০ কেজি আম উৎপাদন হয়। গাছের বয়সের সাথে আমের ফলনও বাড়বে শাহিন আলী এ বাগানের মালিক। তিনি বছর তিনেক ধরে এ বাগান দেখভালের কাজ করেন। তিনি ‘সাধারণত অন্যান্য আমের মুকুলের সময় এ গাছেরও মুকুল দেখা দেয়। মুকুল আশার ৫ থেকে ৬ মাস পর আম পাকতে দেখা যায়।’ তিনি আরও বলেন; ‘এ নতুন জাতের আমের গাছটি ভারত থেকে আনা হয়েছে। ক্ষিরশাপাত আম গাছের সাথে এ গাছটির প্রায় মিল আছে। আমের ফলন ভালো, খেতে খুব মিষ্টি। নতুন জাতের আমটি যারা চাষাবাদ করবে তারা সফল হবে।’
চাঁপাইনবাবগঞ্জের আম বাগান চাষি মেহেদী হাসান বলেন ‘আমটি নতুন জাতের, স্বাদও ক্ষিরশাপাতের মতো। এ আম যেহেতু দেরিতে (বিলম্ব) পাকে তাই লেট ক্ষিরশাপাত নামে আঞ্চলিক ভাবে ডাকা হয়। আমটির আকার আকৃতি অন্যান্য আমের চেয়ে বড়, গোলাকার। এ আমে রোগ বালাই খুব কম।’ ৭ বিঘা জমি লিজ আমের বাগান গড়েছেন হাসমত আলী (বাবু)। বাবু বলেন; ‘পাঁচ বছর পূর্বে আমার ভাই মাইনুল ইসলামের এক বন্ধু ভারতে এ আম খেয়ে মুগ্ধ হয়। ওই গাছের সায়ন (চারা তৈরির উপযোগী ডগা) সংগ্রহ করে দেশে আনেন। ওই সায়ন দিয়ে একটি কলম বাঁধি। এ আমের চাষাবাদ করে ভালো ফলন পেয়েছি। বাগানে এখন প্রায় ৩০ টি গাছ আছে।’ তিনি আরও বলেন; ‘নতুন জাতের আমটি এখনও বাজারে গিয়ে বিক্রি করতে হয়নি। বাগানের আম বাগানে বেঁচে শেষ হয়ে যায়। এ বছরে প্রায় পাঁচশ টাকা কেজি করে প্রায় ১০ হাজার টাকার এ আম বিক্রি করেছি। এ নতুন জাতের আম গাছের চারা নেওয়ার জন্য অর্ডার দিলে, চারা বিক্রি করা হয়। প্রতিটি চারার মূল্য ১ হাজার টাকা।’
চাঁপাইনবাবগঞ্জ হর্টিকালচারের উপপরিচালক কুমার প্রামাণিক বলেন ‘আমটির স্বাদগুণ ক্ষিরশাপাত আমের সাথে তুলনা করা যায়।বলা চলে অসময়ের ক্ষিরশাপাত আম। জেলা প্রশাসক মহোদয়ের কাছে আমটির ‘কল্যাণ ভোগ’ নাম রাখার জন্য প্রস্তাব পাঠিয়েছি।

[wps_visitor_counter]