ঠাকুরগাঁওয়ে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের হলরুমে ভাড়ায় পরিচালিত হচ্ছে হাসপাতাল

প্রকাশিত : আগস্ট ১৪, ২০২২ , ৮:৪২ অপরাহ্ণ

বিধান দাস, ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি, ব্রডকাস্টিং নিউজ কর্পোরেশন: ঠাকুরগাঁওয়ে সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের হলরুমে এখন আয়শা জেনারেল নামে একটি বেসরকারি হাসপাতাল ভাড়ায় পরিচালিত হচ্ছে। এতে বিরূপ মন্তব্য করছেন জেলার মুক্তিযোদ্ধারা। চলতি আগস্ট মাস থেকে একলাখ টাকা জামানত নিয়ে মাসিক আঠারো হাজার টাকায় রুমটি ভাড়া দেয়া হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন সদর উপজেলা মুক্তি যোদ্ধা কমান্ডার সুবোধ চন্দ্র রায়। সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ঠাকুরগাঁও জেলা শহরের টাংগন নদীর তীরে অবস্থিতি তিনতলা বিশিষ্ট ভবনটির নিচতলা ও দ্বিতীয় তলার অধিকাংশ দোকানঘর ভাড়ায় পরিচালিত হচ্ছে। আর তৃতীয় তলা ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য হলরুম ও বসার সু-ব্যবস্থা। সেখানে সভা, সমাবেশসহ বিশেষ দিবসগুলোতে অনুষ্ঠান পরিচালিত হতো। কিন্তু সেই হলরুমটি এখন বেসরকারি হাসপাতাল হিসেবে পরিচালিত হচ্ছে। এ বিষয়ে জেলার বেশকিছু মুক্তিযোদ্ধার সাথে কথা বলে মন্তব্য জানতে চাইলে তারা বলেন, ভবনের তিন তলায় মুক্তিযোদ্ধাদের বসার পরিবেশ ও সভা সেমিনারের জন্যই সরকার ডিজাইন করে ভবনটি নির্মাণ করেন। তবে সেখানে বে সরকারি হাসপাতাল ভাড়া দেয়ায় সভা সমাবেশ করা যাবে না। অন্য কোথাও করতে হবে। যারা দায়িত্বে আছেন তারাই ভাল জানেন হাসপাতাল ভাড়া দেয়া ঠিক হয়েছে কি না।
এদিকে স্থানীয়রা বলছেন, একটি ক্লিনিক বা হাসপাতাল ভাড়া দেয়ার আগে এলাকার পরিবেশ নিয়েও ভাবার প্রয়োজন ছিল। যেহেতু ভবনটি সম্মানী ব্যক্তিদের তাই তারা এ বিষয়ে আরেকটু ভেবে দেখতে পারতেন। আর কমপ্লেক্স ভবনের নীচতলা ও উপর তলায় দোকান ভাড়া নেয়া প্রশান্ত কুমার ও বিধান দাসসহ কয়েকজন জানান, হাসপাতাল ভাড়া দেয়ার কারনে এলাকার পরিবেশ নষ্ট হবে। এছাড়া ভবনের তৃতীয় তলায় টাঙ্গন রুফটপ রেস্টুরেন্ট নামে একটি ফাস্টফুড ভাড়ায় পরিচালিত হচ্ছে। সেখানে পরিবার পরিজন নিয়ে আসেন জেলার সকল শ্রেণির মানুষ। তারা প্রবেশের সময় যদি দেখেন হাসপাতালে রোগীদের কান্না বা রক্তাক্ত অবস্থায় উঠানামা করছেন রোগীরা, তাহলে তারা কিভাবে সেখানে যাবে এটাই প্রশ্ন থেকে যায়। এছাড়া মুক্তিযোদ্ধারাও তো সেখানে আর সভা সমাবেশ করতে পারবেন না। তাই হলরুমটি ভাড়া দেয়া কোন ভাবেই ঠিক হয়নি। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তা সিভিল সার্জন ডাঃ নুর নেওয়াজ আহমেদ জানান, সব জায়গায় হাসপাতাল স্থাপনের সুযোগ নেই। এক্ষেত্রে অবশ্যই পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র লাগবে। বিষয়টি আমার নজরে এসেছে দ্রুত সময়ে হাসপাতালটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ বিষয়ে সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সুবোধ চন্দ্র রায় জানান, অর্থের প্রয়োজন মেটাতে হলরুমটি হাসপাতালকে ভাড়া দেয়া হয়েছে। প্রয়োজনে সভা সমাবেশ অন্যত্র করা হবে। বর্তমান সরকার মুক্তিযোদ্ধাদের সকল ধরণের সুযোগ-সুবিধা দিয়ে আসছেন, আবার কমপ্লেক্সের ১৩টি দোকান থেকে মাসিক ভাড়া আয় থাকা সত্ত্বেও কেনো অর্থের প্রয়োজন-এমন প্রশ্ন সাধারণ মানুষের!
তবে সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিট প্রশাসক আবু তাহের মোঃ সামসুজ্জামান জানান, হাসপাতাল ভাড়া দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মুক্তিযোদ্ধা-গন। তবে আমাকে অবগত করেছেন।

[wps_visitor_counter]