ময়মনসিংহে সর্বজনীন পেনশন স্কিম বাস্তবায়নে অবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত

প্রকাশিত : এপ্রিল ৩, ২০২৪ , ৯:৫৭ অপরাহ্ণ

ময়মনসিংহ, ব্রডকাস্টিং নিউজ কর্পোরেশন: ময়মনসিংহে সর্বজনীন পেনশন স্কিম বাস্তবায়নে জেলা পর্যায়ে অবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (০৩ এপ্রিল ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ)ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসনের আয়োজনে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী। একটি কল্যাণমূলক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ক্রমবর্ধমান বয়স্ক জনগোষ্ঠীকে টেকসই ও সুসংগঠিত সামাজিক নিরাপত্তা প্রদানে জাতীয় সংসদ পেনশন ব্যবস্থাপনা আইন ২০২৩ প্রণয়ন করেছে। প্রণীত আইনের বিধান অনুযায়ী গঠিত হয়েছে ‘জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ’। সভায় জানানো হয় ১৮ বৎসর বা তদূর্ধ্ব থেকে পঞ্চাশ বছর বয়সী সকল বাংলাদেশি তবে বিশেষ বিবেচনায় ৫০ বছর ঊর্ধ্ব বয়সের নাগরিকগণ স্কিমে অংশগ্রহণের তারিখ হতে নিরবচ্ছিন্ন ১০ বছর চাঁদা প্রদান শেষে আজীবন পেনশন প্রাপ্য হবেন। প্রবাসী বাংলাদেশি নাগরিকগণ যাদের জাতীয় পরিচয় পত্র নেই তারা পাসপোর্টের ভিত্তিতে রেজিস্ট্রেশনের পর ডেবিট কার্ড ও ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রায় চাঁদা প্রদান করে পেনশন স্কিমে যুক্ত হতে পারবেন। প্রাপ্তির ক্ষেত্রে চাঁদাদাতাকে কোনো অফিসে আবেদন করতে হবে না। নিরবচ্ছিন্ন ১০ বছর চাঁদা প্রদান করলে ৬০ বছর পূর্তিতে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ইএফটি এর মাধ্যমে তার ব্যাংক একাউন্টে মাসিক পেনশন টাকা জমা হবে। এছাড়াও নিজের এবং পরিবারের সদস্যদের চিকিৎসা, গৃহনির্মাণ, গৃহ মেরামত এবং সন্তানের বিবাহের ব্যয় নির্বাহী জন্য তা ইচ্ছা করলে পেনশন ফান্ডে শুধু তার জমাকৃত অর্থের ৫০% ঋণ হিসেবে উত্তোলন করতে পারবেন, কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ধার্যকৃত ফিসহ সর্বোচ্চ ২৪ কিস্তিতে তা পরিশোধ করতে হবে এবং সমুদয় অর্থ চাঁদাদাতার হিসেবে জমা হবে। সকল স্কিমের জন্য চাঁদার কিস্তি চাঁদা প্রদানকারীর পছন্দ মাফিক মাসিক, ত্রৈমাসিক, বার্ষিক ভিত্তিতে পরিশোধ করার সুযোগ থাকবে। চাঁদাদাতাগণ ইচ্ছা করলে অগ্রিম হিসেবে চাঁদার টাকা পেনশন ফান্ডে জমা করতে পারবেন। চাঁদাদাতা পেনশনে থাকাকালীন তার বয়স ৭৫ বয়স পূর্ণ হওয়ার পূর্বে মৃত্যুবরণ করলে পেনশনের নমিনি বা নমিনিগণ বা বৈধ উত্তরাধিকারী অবশিষ্ট সময়ের জন্য উক্ত পেনশন প্রাপ্ত হবেন। সভায় আরো জানানো হয় সার্বজনীন পেনশন স্কিমকে ৪টি পেনশন স্কিমে ভাগ করা হয়েছে। প্রগতি স্কিম (সরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীগণের জন্য) ২০০০ টাকা এবং সর্বোচ্চ ৫০০০ টাকা মাসিক চাঁদা ও সর্বনিম্ন ১০ বছর থেকে সর্বোচ্চ ৪২ বছর চাঁদা প্রদানের মাধ্যমে এ স্কিমে অংশগ্রহণ করতে পারবেন। সুরক্ষা স্কিমে (সহকর্মে নিয়োজিত নাগরিকগণের জন্য) এ স্কিমে সর্বনিম্ন ১০০০ টাকা এবং সর্বোচ্চ ৫০০০ টাকা ও সর্বনিম্ন ১০ বছর থেকে ৪২ বছর চাঁদা প্রদানের মাধ্যমে এ স্কিমে অংশগ্রহণ করতে পারবেন। সমতা স্কিম (সহকর্মে নিয়োজিত স্বল্প এর নাগরিকগণের জন্য অংশ প্রদায়ক পেনশন) দারিদ্র্য সীমার নিম্নে বসবাসকারী স্বল্প আয়ের ব্যক্তিগণ এ স্কিমের অন্তর্ভুক্ত হবেন। এ স্কিমে চাঁদাদাতা ৫০০ এবং সরকারি অংশ ৫০০ টাকা প্রদান করা হবে। প্রবাস স্কিম (প্রবাসী বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য) এ স্কিমে সর্বনিম্ন ৫০০০ টাকা এবং সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা সর্বনিম্ন ১০ থেকে ৪২ বছর পর্যন্ত প্রদান মাধ্যমে এ স্কিমে অংশগ্রহণ করতে পারবেন। চাঁদাদাতাগণ চাঁদা প্রদানের ক্ষেত্রে আয়কর গণনায় কর রেয়াত সুবিধা পাবেন এবং মাসিক পেনশন বাবদ প্রাপ্ত অর্থ আয়কর মুক্ত থাকবে। এছাড়াও যে কোনো সময় চাঁদার হার ও স্কিম পরিবর্তনের সুযোগ রয়েছে। সভাপতির বক্তব্যে ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসক দিদার আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী বলেন, কর্মজীবন শেষে নিশ্চিত জীবন যাপনের জন্য প্রয়োজন সঞ্চয়। সুরক্ষিত সঞ্চয় পরিকল্পনায় আরেক নাম সর্বজনীন পেনশন। কর্মজীবনের উপার্জিত টাকার কিছু অংশ পেনশন স্কিমে বিনিয়োগ করে একজন নাগরিক নিশ্চিত করতে পারবেন বৃদ্ধ বয়সে আর্থিক নিরাপত্তা।

[wps_visitor_counter]