মেক্সিকোর নাপান্তলায় স্থায়ী শহীদ মিনারের উদ্বোধন

প্রকাশিত : নভেম্বর ১১, ২০২৩ , ১২:২০ অপরাহ্ণ

মেক্সিকো সিটি, ব্রডকাস্টিং নিউজ কর্পোরেশন: মেক্সিকো সরকার এবং মেক্সিকো রাজ্যের স্থানীয় সরকারের সহযোগিতায় বাংলাদেশ দূতাবাস মেক্সিকো সিটির দক্ষিণে অবস্থিত মেক্সিকো রাজ্যের (এডোমেক্স) নেপান্তলার সোর হুয়ানা জাদুঘর চত্বরে শহীদ মিনারের একটি স্থায়ী প্রতিরূপের উদ্বোধন করেছে। মেক্সিকোতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আবিদা ইসলাম (৯নভেম্বর ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ) তারিখে এডোমেক্সের সংস্কৃতি সচিব নেলি মিনার্ভা ক্যারাস্কো গোডিনেজ, এডোমেক্সের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সমন্বয়ক হোসে পাবলো মন্টেমায়োর ক্যামাচো, আমেকামেকা সরকারী অঞ্চলের মহাপরিচালক টোনাটিউ মার্টিনেজ মারিস্কেল, আগ্নেয়গিরি উপত্যকার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও সাংস্কৃতিক সেবা বিভাগের মহাপরিচালক এস্টিবালিজ আগুয়াজো অর্টিজ, টেপেটলিক্সপার মেয়র আবেলার্দো রদ্রিগেজ গার্সিয়া, মেক্সিকো-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের প্রেসিডেন্ট রোজালিন্ডা ডোমিংগেজ ফ্লোরেস এবং মেক্সিকো-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সদস্য হোসে মিগেল দে লা ক্রুজ লিমা সহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে শহীদ মিনারের স্থায়ী প্রতিরূপটির উদ্বোধন করেন। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দানের জন্য আত্মোৎসর্গকারী ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের করে ফিতা কেটে ও পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে শহীদ মিনারের স্থায়ী প্রতিরূপটির উদ্বোধন করা হয়। এছাড়া শহীদ মিনারে বাংলাদেশের ভাষা আন্দোলন সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্যসহ কিউআর কোড সম্বলিত একটি ফলকও স্থাপন করা হয়। অনুষ্ঠানের সাংস্কৃতিক পর্বে সোর হুয়ানা জাদুঘর মিলনায়তনে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের অবগতির জন্য ভাষা শহীদ দিবসের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটের উপরে আলোকপাত করে একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। রাষ্ট্রদূত আবিদা ইসলাম জমি বরাদ্দে ও প্রতিরূপটি নির্মাণে সহযোগিতার জন্য মেক্সিকোর কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়, ডেপুটি হোসে মিগেল দে লা ক্রুজ লিমা এবং মেক্সিকো-প্রবাসী বাংলাদেশীদের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। ভাষা আন্দোলনের ঐতিহাসিক তাৎপর্যের ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি সপ্তদশ শতাব্দীর স্প্যানিশ সাহিত্যিক, মেক্সিকোর আইকন, সোর হুয়ানা ইনেস দে লা ক্রুজের জন্মস্থানে শহীদ মিনার স্থাপনের তাৎপর্য তুলে ধরেন, যিনি নারী অধিকারের স্বপক্ষে ভাষাকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছিলেন। উল্লেখ্য, দূতাবাস এর আগে ২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে, ওহাকা রাজ্যের পেটাপার সান্তো ডোমিঙ্গো শহরে, ডেপুটি রোজালিন্ডা ডোমিংগেজ ফ্লোরেসের সহায়তায় বাংলাদেশের ভাষা আন্দোলনের একটি স্মারক ফলক উন্মোচন করে। সংস্কৃতি সচিব নেলি মিনার্ভা, নেপান্তলার মেয়র, ডেপুটি জোসে মিগুয়েল দে লা ক্রুজ লিমা এবং ডেপুটি রোজালিন্ডা ডোমিনগুয়েজ ফ্লোরেস তাদের বক্তব্যে মহান ভাষা শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। তারা তাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে বাংলাদেশের ভাষা আন্দোলন এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস সম্পর্কে অবহিত হবার সুযোগ করে দেয়ার জন্য দূতাবাসের উদ্যোগের প্রশংসা করেন। সেইসাথে, মানুষের পরিচয়, অভিব্যক্তি এবং ক্ষমতায়নের জন্য মাতৃভাষা সংরক্ষণের বৈশ্বিক তাৎপর্যের উপর জোর দিয়ে তারা বলেন যে মেক্সিকোর ৬৭টি আদিবাসী ভাষা সংরক্ষণে তারাও বদ্ধপরিকর। তারা আশা প্রকাশ করেন যে, শহীদ মিনারের স্থায়ী এই প্রতিরূপটির দুই দেশের তরুণ প্রজন্মের মধ্যে সাংস্কৃতিক বিনিময় ও পারস্পরিক যোগাযোগকে উৎসাহিত করবে। অনুষ্ঠানে ৯ থেকে ১১ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ে গঠিত “প্রাইমেরো সুয়েনো” সাংস্কৃতিক দলের বাংলাদেশের একুশের গানের সাথে মনোরম নৃত্য পরিবেশনা দর্শকদের মুগ্ধ করে। উপস্থিত প্রায় ১২০ জন দর্শকদের মাঝে বাংলাদেশী ঐতিহ্যবাহী খাবার পরিবেশনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের পরিসমাপ্তি ঘটে।

[wps_visitor_counter]