চরিত্রের আলো আঁধার

প্রকাশিত : মার্চ ১২, ২০২৪ , ৯:৫৬ অপরাহ্ণ

প্রতিকি চিত্র।

আপনার আমলনামা দুনিয়াতে কেউ দেখে? বাহিরের কেউ জানে? আপনি জানেন আপনি গোপনে কি করেন এবং প্রকাশ্যে কি বলেন! ফেসবুকের ইন-বক্সও আপনার গোপন আমলনামা! কি বলেন, কি ডিলিট করেন, কতজনের সাথে কতভাবে ফ্লাট করেন সেটা আপনিই কেবল জানেন! আপনি দিনের ২৩.৫৮ মিনিটের ভালো মানুষ কিন্তু যদি মাত্র ২ মিনিটের জন্য খারাপ হয়ে যান এবং সেটার দলিল-দস্তাবেজ জনসম্মুখে প্রকাশিত তবে সেটার রেশ কাটাতে কতযুগ লাগবে একবারও ভাবতে পারেন? কিছু কিছু পেশা আছে যেখানে সকল নেশা করা যায় না! সব কথা সবার সাথে শেয়ার করাও যায় না!
ডিলিট দেওয়া তো আর তওবা নয়! যাতে সবকিছু ধুয়ে যাবে! অক্ষর মুছে যায় কিন্তু পাপ কি মুছে? ইসলামে অবিবাহিত লোকের যেনার শাস্তির চেয়ে বিবাহিত অভিযুক্তের শাস্তি বেশি। ভাবছেন বিনা যুক্তিতে এমন সিদ্ধান্ত? আপনার মানসিকতার বিকৃতির আগে আপনার অবস্থান, শিক্ষা, সামাজিক মর্যাদা এবং পরিবারের কথা ভাবা উচিত। প্রশ্নের উত্তর দেওয়া, আলাপ জমিয়ে তোলা কখনো কখনো কোনভাবেই উচিত নয়। যেখানে প্রলোভন আছে, নিজেকে-ব্যক্তিত্ব খোয়ানোর আশঙ্কা আছে তা থেকে দূরে থাকাই শ্রেয়! আপনি খেলতে খেলতে বজ্জাত একসময় আপনাকে নিয়ে খেলতে শুরু করবে। যা কিছু অর্জন তা হারিয়ে ফেলবেন!
শারীরিক উত্তেজনা, মানসিকতার অসুস্থতা লুকাতে না পারলে সারাবছর রোজা রাখুন। কুমিরের মত খেয়ে ঘোড়ার মত আচরণ করবেন না! নিজের পশুত্ব ভেতর থেকে দমন করুন। লাম্পট্যের ক্ষুধা নিজের মধ্যেই দমিয়ে রাখুন। প্রয়োজনে বিয়ে করুন তবুও ভালো থাকুন। যে দূরত্ব আপনার চরিত্রের অনিষ্টকর শঙ্কা জাগায় সেখান থেকে বেঁচে থাকুন। কারা কারা বাড়ি থেকে বেশিদিন দূরে সেটা বের করে প্রাক ইসলামি যুগে তাদেরকে যুদ্ধের ময়দান থেকে অব্যাহতি দিয়ে পরিবারের কাছে প্রেরণ করা হয়েছিল। কাজেই সঞ্চয় ধরে রেখে, অধিকার নিশ্চিত করে তবেই আগামীর জন্য পা ফেলুন!
বউয়ের সাথে যে আলাপ হবে বান্ধবীর সাথে তেমন আলাপ ঠিক নয়! ছাত্রীর সাথে রাত্রিভর আড্ডা দেওয়ার, গল্প করার কিংবা অবান্তর চ্যাটিং করার কোন প্রশ্নই ওঠে না। মানুষ যখন তার কর্মকাণ্ডে শয়তানকে ছাপিয়ে যায় তখন বিবেকহীনতায় সে সবকিছু করতে পারে! পশুত্ব মাথাচাড়া দিয়ে জাগতে পারে। ইজ্জত খুইয়ে সে নিজেও মরতে পারে এবং বহুলোক মারতে পারে! যে মানুষের ইজ্জত নাই তার অনেককিছু থাকার মধ্যে কোন ফায়দা নাই! আগে চরিত্র তারপরে শিক্ষা। অতঃপর সম্পদ!
আত্ম-সম্মান ব্যক্তিত্বের সম্পত্তি। আপনি ধরে রাখবেন কি-না সেটা একান্তই আপনার এবং আইনের ব্যাপার কিন্তু যে পেশার সাথে আপনি সম্পর্কিত, যে সমাজে আপনি বাস করেন কিংবা খাস করে স্ত্রী-সন্তান এবং বাবা-মায়ের মুখগুলো পাপের পথে পা বাড়ানোর সময় আপনার সামনে ভেসে ওঠা উচিত। কি লিখেন, কি বলেন এবং কি দেখান-সেই বোধ যদি ঠিক না থাকে তবে আপনার মানসিকতার দীনতা সারাতে ডাক্তারের কাছে যাওয়া উচিত। ভেতরে রিপু লালন করে নীতিকথা বলে বেড়ানো বড্ড হাস্যকর লাগে। অসুস্থ শুধরে গেলে সমাজের অনেক ক্ষত পালিয়ে যাবে।

রাজু আহমেদ। প্রাবন্ধিক।
[email protected]

[wps_visitor_counter]