একশ বছর পরে আমাদের চিনবে

প্রকাশিত : মার্চ ২৯, ২০২৪ , ৫:৫৬ অপরাহ্ণ

প্রতিকি চিত্র।

যিনি চেয়ারে এবং যিনি ধূলায়-কোন পার্থক্য রইবে না কেবল কর্ম ছাড়া। তবুও অহমিকা, আমিত্ব আমাদের নিঃশেষ করে দিচ্ছে। রোজ ক্ষুদ্র হচ্ছি কিংবা বড়ত্বের তাপে ঝলসে দিচ্ছি চারপাশ। একটা ৬০-৭০ বছরের জীবনের গল্প শুরু হওয়ার আগের সময়টা এবং শেষ হওয়ার পরের সময়টাই আসল সময়। মধ্যখানে ধোঁকাবাজি, মোহ, হিংসা-বিদ্বেষ এবং বেদনার বালুচর।

আজ যে খেতে পারেনি এবং যে খাওয়ার পরেও বিশাল অংশ নষ্ট করেছে, যে কিছুই পায়নি এবং যে রাশি রাশি জমা করেছে-সবার সময় কেটে যাবে । মানবিকতার গল্পে কেউ মহান হবে আর কেউ গল্পের কোন চরিত্রই পাবে না৷ মিথ্যা, অসততা, ঘুষ এবং লোভ আমাদের মানুষের প্রতিযোগী বানিয়েছে। তবে কি আমরা মানুষ নই? আকৃতিতে অবশ্যই তবে আচরণে মানুষ কি-না সে বিচার আপন আপন!

আমরা রুচির দুর্ভিক্ষের কথা বলে মানুষকে দমিয়ে দিতে চাই। বিভাজনের ভেদ টানতে চাই সভ্য ও অসভ্যতার। অথচ আমরাই আমির আর ফকিরের সাথে আচরণে পার্থক্য দেখাই। একই ধরনের অপরাধে কখনো চুপ থাকি এবং কখনো সীমাতিক্রম করে বেশিই শোনাই। হিরো আলম আর মাহফুজুর রহমানের নাম আলাদা করে উচ্চারণ করতে হবে না নিশ্চয়ই। চেয়ারের অপরাধ আর বেকারের অপরাধ নতুন করে আর না বলি!

১০০ বছর পরে যে প্রজন্ম রাজ্য শাসন করবে তাদের ৯৯% আমাদের নাম জানবে না। যে দু’চারজনের নাম চর্চিত হবে তাদের বহুলাংশের ইতিহাস ঘৃণায় উচ্চারিত হবে। অথচ আমাদের দম্ভ-অহংকারে বাতাস বিষিয়ে তুলেছি৷ ধন-জ্ঞানের দম্ভে ধরাকে সরা জ্ঞান করছি। নিজের স্বার্থে যা অনুকূল সবকিছুকে বৈধতা দিচ্ছি। মানুষ হওয়ার প্রতিযোগিতা নিম্নমুখী। প্রযুক্তি আমাদের দানব হিসেবে তৈরি করছে। আবেগ-মমত্ববোধ কোথায় এসব? চিন্তার বিপুল অংশ ব্যবসা আর লোক ঠকানোতে বিনিয়োগ হয়েছে। অপরকে দমিয়ে রাখা, চেপে রাখা, হিংসা ছড়ানো, গিবত-শেকায়েতে আমাদের পুণ্য উজাড় করে ফেলছি৷

একদিন সত্যের মুখোমুখি দাঁড়াতে হবে। কৃতকর্মের জন্য আফসোস হবে কিন্তু প্রায়শ্চিত্তের সুযোগ থাকবে না। ছোট্ট এই জীবন। মহাকালের সময়-পঞ্জির কয়েক মুহূর্ত মাত্র। সংযমের বিকল্প নাই। যাদের জন্য এতোসব অন্যায়-কেউ ভাগীদার হবে না; কেউ না।

রাজু আহমেদ। কলাম লেখক।
[email protected]

[wps_visitor_counter]