স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তর অপরিহার্য

প্রকাশিত : মে ২৫, ২০২৩ , ১১:০৮ অপরাহ্ণ

ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার, সংগৃহীত চিত্র।

ঢাকা, ব্রডকাস্টিং নিউজ কর্পোরেশন: ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তর অপরিহার্য। এই লক্ষ্যে শিক্ষার্থীদের জন্য ডিজিটাল কনটেন্টসহ ডিজিটাল ডিভাইস, ডিজিটাল সংযুক্তি এবং ডিজিটাল শ্রেণিকক্ষ অপরিহার্য। শিক্ষার অবকাঠামোগত যে পরিবর্তন হয়েছে সে পরিবর্তন শিক্ষা পদ্ধতিতেও করার বিকল্প নেই। স্মার্ট মানুষ তৈরির জন্য প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত প্রতিটি শিক্ষার্থীর হাতে ডিজিটাল কনটেন্টসহ ডিজিটাল ডিভাইস প্রয়োজন। কেবলমাত্র প্রতিষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে শিক্ষা গ্রহণের দিন শেষ। মিশ্র শিক্ষা পদ্ধতি চালুর উদ্যোগ সরকার গ্রহণ করেছে। এ উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে শিক্ষার রূপান্তরে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন। মন্ত্রী বৃহস্পতিবার তাঁর দপ্তর থেকে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে সংযুক্ত থেকে ঢাকার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে গণসাক্ষরতা অভিযান, সেভ দ্য চিলড্রেন ও ফ্রেন্ডশিপের যৌথ আয়োজনে শিখন অভিজ্ঞতা ও ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনা শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন। গণসাক্ষরতা অভিযান কাউন্সিলের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য এ্যারোমা দত্ত, এর সভাপতিত্বে এবং সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও গণসাক্ষরতা অভিযান এর নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে. চৌধুরীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোঃ ফরহাদুল ইসলাম, সেভ দ্য চিলড্রেন এর কান্ট্রি ডিরেক্টর অনো ভান ম্যানেন, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর অ্যামিরেটাস ও এডুকেশন ওয়াচ এর মুখ্য গবেষক ড. মনজুর আহমেদ, ফ্রেন্ডশিপের সিনিয়র ডিরেক্টর ও শিক্ষা কর্মসূচির প্রধান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ইলিয়াস ইফতেখার রসুল, উপজেলা ও থানা শিক্ষা অফিসারসহ ঢাকার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকবৃন্দ বক্তৃতা করেন। ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী নতুন প্রজন্মের ছেলে-মেয়েরা অত্যন্ত মেধাবী উল্লেখ করে বলেন, ডিজিটাল ডিভাইস ও কনটেন্ট দিয়ে তাদেরকে শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ দিলে, তারা শিক্ষায় বৈশ্বিক মানদণ্ড অতিক্রম করতে পারবে। তিনি বলেন, কাগজের যুগের পর শিক্ষায় ডিজিটাল যুগে যাওয়ার সময় হয়েছে। কাগজের বইয়ের পাশাপাশি ডিজিটাল কনটেন্ট এবং ডিজিটাল ডিভাইস চালু করতে পারলে জাতি অনেক বেশি সুফল পাবে। তিনি বলেন, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের উদ্যোগে সুবিধাবঞ্চিত প্রত্যন্ত ও দুর্গম অঞ্চলের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তরে গৃহীত প্রকল্পের ৬৫০টি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং পার্বত্য চট্রগ্রামের ২৮টি পাড়া কেন্দ্রে ডিজিটাল যন্ত্রে ডিজিটাল কনটেন্টে পাঠদান কার্যক্রম বাস্তবায়িত হচ্ছে। এর ফলে আশপাশের স্কুলের শিক্ষার্থীরা অনেকে টিসি নিয়ে এই সকল স্কুলে চলে আসছে। যেসব স্কুলে কম্পিউটার আছে সেসব প্রতিষ্ঠানে ডিজিটাল কনটেন্ট দেওয়ার দাবি উঠেছে। মূল প্রবন্ধে প্রকল্প মূল্যায়নে দেখানো হয়, এই কর্মসূচির আওতায় কুড়িগ্রাম এবং জামালপুরের ১২০ টি বিদ্যালয়ের চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির ১২ হাজার ৫৩৬ জন মেয়ে শিক্ষার্থীকে শ্রেণি সময়ের আগে ও পরে ভার্চুয়াল শিখন প্লাটফর্ম এর মাধ্যমে ডিজিটাল-কন্টেন্ট ব্যবহার করে বাংলা, ইংরেজি এবং গণিত শিক্ষায় সহায়তা প্রদান করা হয়। ফলস্বরুপ, কর্মসূচির উপর জরিপের মাধ্যমে অন্যান্য এলাকার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাথে তুলনা করে দেখা গেছে ইজিই কর্মসূচির আওতাধীন শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনীর সংখ্যা, প্রাথমিক শেষ করে মাধ্যমিকে ভর্তির হওয়ার সংখ্যা এবং এক শ্রেণি থেকে অন্য শ্রেণিতে সফলভাবে কৃতকার্য হওয়ার সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে প্রায় শতভাগে পৌঁছে গেছে। সেইসাথে ১৮ বছরের নিচে বাল্যবিবাহের সংখ্যা (০) শূন্যতে নেমে এসেছে। অনুষ্ঠানে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর, মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর, শিক্ষক সংগঠন, প্রকল্পের কর্ম এলাকার স্কুল শিক্ষক, অভিভাবক, গণসাক্ষরতা অভিযান এর কাউন্সিল (বোর্ড) মেম্বার, সহযোগী সংস্থা (ফ্রেন্ডশিপ), সেভ দ্য চিলড্রেনসহ অন্যান্য সংশ্লিষ্ট দেশি বিদেশি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ও সহযোগী সংগঠনের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।

[wps_visitor_counter]