ছেলের প্রেমের অপরাধে মাকে পুড়িয়ে হত্যার দায়ে প্রেমিকার বাবা-মা গ্রেফতার

প্রকাশিত : জুলাই ৬, ২০২২ , ৬:৪২ অপরাহ্ণ

ময়মনসিংহ ব্যুরো, ব্রডকাস্টিং নিউজ কর্পোরেশন: ময়মনসিংহে প্রেম করে প্রেমিক-প্রেমিকা বাড়ি থেকে পালিয়ে যাওয়ার পর ছেলের প্রেমের অপরাধে মা লাইলী বেগম(৩৮)কে দাহ্য পদার্থ দিয়ে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িত প্রধান দুই আসামি প্রেমিকার মা নাসিমা আক্তার কনা ও বাবা খোকন মিয়া ওরফে কাজলকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। গ্রেফতারকৃত খোকন মিয়া ওরফে কাজল ও তার স্ত্রী নাসিমা আক্তার কনা ময়মনসিংহ মহানগরীর ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের পশ্চিমপাড়া এলাকার বাসিন্দা। বুধবার (৬ জুলাই) দুপুরে ময়মনসিংহের পিবিআই কার্যালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এর আগে মঙ্গলবার (৫ জুলাই) ভোররাতে নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ থেকে তাদের গ্রেফতার করে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, খোকন মিয়ার মেয়ের সঙ্গে মহানগরীর ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা আব্দুর রশিদ ও নিহত লাইলী বেগমের ছেলে সিরাজুল ইসলামের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সম্প্রতি প্রেমিক-প্রেমিকার বিষয়ে পারিবারিক-ভাবে বিয়ের কথাবার্তা চলতে থাকলে ওই মেয়ে ১৯ জুন সিরাজুলের হাত ধরে পালিয়ে যান। এরপর তারা ফিরে না এলেও বিষয়টি মীমাংসা করার চেষ্টা চলছিল। এমনকি গত ২৮ জুন দুপুরে এ বিষয়ে সালিশ হওয়ার কথা ছিল এলাকায়। কিন্তু ওইদিন সকাল ৯টার দিকে মেয়েকে ফিরে পেতে লাইলী বেগমের বাসায় যান মেয়ের মা নাসিমা আক্তারসহ চারজন। এসময় তারা লাইলী বেগমকে নির্যাতন করেন। এরই একপর্যায়ে লাইলী বেগমের হাত-পা বেঁধে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে চলে যান মেয়ের পরিবারের চার সদস্য। পরে লাইলীকে উদ্ধার প্রথমে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এতে তার শরীরের প্রায় ৬০ শতাংশ আগুনে পুড়ে যায়। পরবর্তীতে অবস্থার অবনতি হলে তাকে পাঠানো হয় ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে। সেখানে ২৮ জুন (মঙ্গলবার) সন্ধ্যার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় লাইলী বেগমের। পরে এ ঘটনায় ওইদিন রাতেই নিহতের স্বামী আবদুর রশিদ বাদী হয়ে আটজনের নামে মামলা করেন। পরে অভিযান চালিয়ে রাতেই জাহাঙ্গীর আলম ও তার স্ত্রী আছমা আক্তারকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তারা প্রেমিকার চাচা-চাচি।কিন্তু মামলার মূল আসামি খোকন মিয়া ওরফে কাজল ও নাসিমা আক্তার কনা আত্মগোপনে ছিলেন। ঘটনাটি ছায়া-তদন্তের একপর্যায়ে পিবিআই, ময়মনসিংহ জেলার টিম গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ও পিবিআই হেডকোয়ার্টার্সের এলআইসি টিমের সহযোগিতায় গতকাল মঙ্গলবার ভোরে নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ থানা এলাকা থেকে প্রধান দুই আসামি খোকন মিয়া ও তার স্ত্রী নাসিমা আক্তার কনাকে গ্রেফতার করে। এ বিষয়ে ময়মনসিংহ জেলার পিবিআই পুলিশ সুপার গৌতম কুমার বিশ্বাস বলেন, গ্রেফতারকৃতরা প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। তাদের সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে বলেও জানান তিনি।

[wps_visitor_counter]