সঙ্গ দেয়া এবং দায়িত্ব নেওয়ায় তফাৎ আছে

প্রকাশিত : মার্চ ১, ২০২৪ , ১২:৫৭ পূর্বাহ্ণ

প্রতিকি চিত্র।

।।এক।।
নারী ভাবে তার অনেক নাম-দাম! সামনে সীমাহীন অপশন! যারা নারীর সঙ্গ চায় তাদের ক’জন দায়িত্ব নেবে?-সেই ভাবনা নারীর যে বয়সে আসে না সেই বয়সে সে বহু অপশন দেখে! প্লান এ, বি, সি…! নারী ডাকলে ফুচকা খাওয়ার সঙ্গী মিলবে না, আড্ডা দেয়ার মানুষ মিলবে না-নারী এতোটা হতভাগ্য হয়ে জন্মায় নি! সুন্দরের মাত্রা যার যত তাদের পেছনের লাইনটাও ততটাই মাত্রা ছাড়ানো! পুরুষ আসলে নারীর কাছে কি চায় সেটা পুরুষেই জানে! নারী জানে তার অধিক!

হুট-হাট যারা দায়িত্ব নিতেও চায়, ফেসবুকে-মোবাইলে খোঁজ খবর লয় তাদের সিংহভাগ দায়িত্ব কীভাবে নিতে হয় সেটাও জানে না! সুন্দর সুন্দর কমেন্ট করা আর সোনার ভরি এক লাখ বারো হাজার টাকা-এ দু’টো জানার মধ্যে তফাৎ আছে! কেনার মধ্যে তফাৎ আর কেনার মুরোদ- কে জনে? জান কোরবান করে দেয়া আর অভিভাবকের সাথে কথা বলা, মোহরানা জোগাড় করা এসব ভিন্ন বিষয়! ইনজয় করা আর কাঁধে জোয়াল টানা-এই দুইয়ের ব্যবধান কম নয়! চেক আউট করা, ইন-বক্সে নক করা, ট্রাই করা কিংবা হিট করার মাধ্যমে মনোযোগ কেড়ে লওয়া নারীরা জানেই না দায়িত্ববান পুরুষ কারে কয়! তারা পুরুষের প্রলোভনে দেবতার প্রতিশ্রুতি দেখে!

ভালোবাসা দিবসে গোলাপ দেয়া, ঘুরে-ফিরে রেস্টুরেন্টে খাওয়া আর রিকশায় ঘোরার সঙ্গী পেলেই নারী ভাবে আসল পুরুষ পেয়ে গেছে! প্রয়োজন ফুরালে পুরুষ যে পাখি হবে, বিয়ের কথা উঠলে পুরুষের যে মেজাজ খারাপ হবে-এই সমাজের অল্প নারীর এই বোধটুকু থাকে! নারীকেও নিজেকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য সংগ্রাম করা উচিত! যারা বাস্তবতা বোঝে তারা কাউকে দেবদাস বানিয়ে অন্যের পার্বতী হয় না! সঙ্গ আর স্বার্থ ফুরিয়ে গেলে প্রায় শতভাগ নারীরাই একা! নারীর শখ পূরণের সুখটুকু অর্জনের সক্ষমতা কারো ওপরে নির্ভরশীল না হোক!

।।দুই।।
বেকার পুরুষের কপালের প্রেম আর সুপ্রতিষ্ঠিত প্রেমিকের প্রেম আলাদা আলাদা হয়! রস-গন্ধ সব আলাদা আলোর! যার বেতন আছে, বাড়ি আছে আর যদি গাড়িও থেকে থাকে তবে সেখানে প্রেমিকার উষ্ণতা বেশি! নারী লোভী-একবারও বলছি না কিন্তু পুরুষের ত্যাগ পিরামিড উঁচু সে-কথা বারবার বলতে হবে! বেকার যুবক এবং চাকুরীজীবী সামনে যদি একটাই অপশন দাঁড়ায় তবে যার ব্যবহারযোগ্য ব্যাংক-চেক আছে সে অনায়াসে জিতে যাবে। বেকারের দীর্ঘশ্বাস গভীর রাত্রে অন্ধকার শোনে! চাঁদ ব্যথা বোঝে কি-না জানি না কেননা চাঁদ যে রোজ রোজ হাসে! আকাশে আসে!

পুরুষের জীবনের প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত প্রতিষ্ঠিত হওয়ার জন্য মন্ত্রের সাধন কিংবা শরীর পাতন তপস্যায় যাওয়া! পুরুষের অর্ধেক সৌন্দর্য তার মানিব্যাগে! মানিব্যাগ হানি তৈরি করতে পারে! রাণী মৌমাছির সাথে সে হানির দেখা হবেই! এই-যে আবেগে ঘর পালানো, যোগ্যতা সিকেয় তুলে রাখা, বাক-বাকুম করা এসব বিবেকহীন আবেগ। স্টিয়ারিং যার যতোটা কন্ট্রোলে থাকবে সে ততখানি দায়িত্ব পালনের যোগ্য হবে। বিবেকহীন আবেগ দুর্দশা বাড়ায়!

।।তিন।।
নারী-পুরুষের মিলেমিশে আগামীর মানুষ, ভবিষ্যতের বাসস্থান এবং কালকের জন্য পুঁজি সঞ্চয় করবে! অজস্র প্রলোভনের মাঝেও তাকে ঠিক ঠিকানা খুঁজে নিতে হবে! কারা পথে দর পাথেয় আর কে গন্তব্যের আশ্রয় সেটা দু’দফাকেই নিশ্চিত করতে হবে। বড়াই করে লড়াই করলে হেরে যেতে হবে আবেগে ভেসে গেলে ডুবে যেতে হবে। সঠিক মানুষ বাছাইয়ের বোধ থাকতে হবে। সঙের মানুষ, রঙের মানুষ পরিত্যাগ করে দায়িত্বশীল দের দরগাহে নিজেকে সঁপে দিতে হবে। সব অপশন ভুল প্রমাণিত হওয়ার আগেই পরীক্ষা শেষ করতে হবে। সৌন্দর্যের রেশ দীর্ঘদিন থেকে যায়! কিন্তু ভাঙনের ঢেউ দেখে সব আশা ফিকে হয়ে যায়! লোভ-ক্ষোভের বাইরে থেকে নিজের লক্ষ্যে এগিয়ে গেলেই দুশ্চিন্তাহীন ভোর উপহার আসবে! রেষারেষির রোষ কাটবে।

রাজু আহমেদ। প্রাবন্ধিক।
[email protected]

[wps_visitor_counter]