অপ্রয়োজনীয় জামাকাপড়ের বদলে বই কিনুন

প্রকাশিত : মার্চ ১, ২০২৪ , ১:০১ পূর্বাহ্ণ

প্রতিকি চিত্র।

আগামী ১০ বছর পরে আপনার সংগ্রহে কতগুলো বই থাকবে সেই পরিকল্পনা করতে পারেন। আপনার টাকা আছে বলে একবারে একলক্ষ টাকার স্তূপাকৃতির বই কিনে ফেললেন-এটাতে লেখক ও প্রকাশকের কিছু লাভ হতে পারে কিন্তু আপনার কোন লাভ হবে না! মাসে একখানা বই কিনুন এবং সে খানা পড়ে শেষ করুন। প্রয়োজনে দুইবার পড়ুন। ভালো বই বারবার পড়ুন।

জীবদ্দশায় যদি ৫০ খানা ভালো বইও পড়তে পারেন তবে একটা অন্যরকম জীবনের মালিক হওয়া সম্ভব। এই-যে কারো অনুপস্থিতিতে তার সমালোচনা, কাউকে হিংসা করা, কারো ভালো সহ্য করতে না পারা কিংবা দাম্ভিক হওয়া-বই হাতে থাকলে আপনার সেই বদঅভ্যেস থাকবে না! বরং বই প্রশংসা করতে শেখাবে।

বই বলতে আপনি কেবল মলাট-বদ্ধ পৃষ্ঠা বুঝলে ভুল হবে। আপনি যেখান থেকে শিখতে পারেন সেটাই আপনার বই। সেটা বেড়াতে গিয়ে হতে পারে, কারো সাথে কথা বলে হতে পারে কিংবা কারো অভিজ্ঞতা জেনেও হতে পারে। গতানুগতিক যে বই তার মধ্য সবই বই নয় বরং অবই বেশি! আপনাকে বই বাছাই করার ক্ষমতা রাখতে হবে। বুঝতে হবে কোনটা পড়া উচিত আর কোনটা পোড়ানো উচিত। অবই আপনার পড়ার রুচি নষ্ট করবে এবং সময় হত্যা করবে।

শুধু নিজের জন্য নয়, খাদ্য কেনার মত, সঞ্চয় করার মত বই কিনে পরবর্তী প্রজন্মের জন্য ঘর-ভর্তি করে রেখে যান। আপনার স্পর্শ দিয়ে যান বইয়ের পৃষ্ঠায়। উত্তরসূরীদের চিন্তা স্পষ্ট হবে। বই কেনা অপচয় নয় বরং সেরা বিনিয়োগ। প্রতিমাসে কম হলেও ৫০০ পৃষ্ঠা পড়ার চেষ্টা করুন। জীবন ধীরে ধীরে বদলাবে!

বই পড়ার পথে, কেনার পথে, সংরক্ষণের পথে অনেক বাঁধা। পাগল খেতাবও জুটে যেতে পারে! কেউ কিছু বললে রাগ না হয়ে হেসে দিয়েন! হাসির চেয়ে বড় কোন প্রতিশোধ নাই। আপনাকে দমাতে এসে সে নিজেই দমে যাবে। দু’চার পৃষ্ঠা পড়লেই আপনার মধ্যে আলাদা জগত সৃষ্টি হবে। একটু ব্যতিক্রম হোন না-ফল পাবেন! মাছ কম কিনে, বেশি না খেয়ে, অপব্যয় না করে, বেশি না জমিয়ে দু’খানা বই কিনুন। মস্তিষ্ক-আত্মার খোরাকি দরকার। পড়তে পড়তে নিজেই দক্ষ সরকার হয়ে উঠুন।

জীবনের প্রত্যেক-মাসে একখানা করে বই কেনার শপথ নিন। দশ বছর পর আপনার সংগ্রহ কি পরিমাণ ঋদ্ধ হবে ভাবতে পারেন? একজনের মস্তিষ্ক ভর্তি আবর্জনা আর আপনার বস্তা ভরা বই-এগিয়ে থাকবেন। বই পড়ুন। আলোকিত জীবন গড়ুন। নিজেকে জানার জন্যও পড়াটা জরুরি। ভালো বইয়ে সান্নিধ্যে থাকুন। পাল্টে যাবেন। সমাজ পাল্টে দিবেন।

রাজু আহমেদ। প্রাবন্ধিক।
[email protected]

[wps_visitor_counter]