নিউইয়র্কে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও ইউএন সাধারণ পরিষদ সভাপতি এর বৈঠক

প্রকাশিত : অক্টোবর ১, ২০২২ , ১০:৪০ অপরাহ্ণ

নিউইয়র্ক, ব্রডকাস্টিং নিউজ কর্পোরেশন: জাতিসংঘের বিভিন্ন ফোরামে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য অংশগ্রহণ, তাৎপর্যপূর্ণ অবদান ও ফলপ্রসু নেতৃত্বের প্রশংসা করেছেন জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভাপতি (পিজিএ) সাবা কোরোসি (Csaba Kőrösi)। শুক্রবার জাতিসংঘ সদরদপ্তরে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন এর সাথে অনুষ্ঠিত দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে জাতিসংঘে বাংলাদেশের নেতৃত্বে বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। সভায় ‘এসডিজি বাস্তবায়ন রিভিউ’ বিষয়ক ইভেন্ট আয়োজন এবং সাউথ-সাউথ কোঅপারেশন এর আওতাধীন উন্নয়নশীল দেশসমূহের অর্থ, পররাষ্ট্র ও উন্নয়ন মন্ত্রীদের সমন্বয়ে একটি ফোরাম প্রতিষ্ঠা-এ দুটি প্রস্তাব সাধারণ পরিষদের সভাপতির নিকট পেশ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। রোহিঙ্গা শিশুদের নিজ ভাষায় শিক্ষাদান, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কোভিড ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি ক্ষেত্রে বাংলাদেশ যে পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করেছে তা তুলে ধরেন মন্ত্রী। এখন পর্যন্ত কোনো রোহিঙ্গা নিজ ভূমি মিয়ানমারে ফেরত যায়নি। সাধারণ পরিষদের সভাপতি রোহিঙ্গাদের আশ্রয় ও মানবিক সহায়তা প্রদানে বাংলাদেশের ভূমিকার প্রশংসা করেন। এ সংকট কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি। পররাষ্ট্রমন্ত্রী জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলা ও এর প্রশমন ও অভিযোজনের জন্য আরো তহবিলের গুরুত্বের কথা তুলে ধরেন। এ ক্ষেত্রে প্রতিবছর ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের তহবিল প্রদানের যে প্রতিশ্রুতি রয়েছে তা শীঘ্রই বাস্তবায়নের উপর জোর দেন তিনি। সাধারণ পরিষদের সভাপতি বিষয়টির প্রতি তাঁর সমর্থন ব্যক্ত করেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও ইউএন আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেলের সাথে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠক
জাতিসংঘের পিস অপারেশন বিভাগের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল জ্যঁ পিয়েরে ল্যাক্রুয়া (Jean-Pierre Lacroix) এর সাথে বৈঠককালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের জাতিসংঘে পিস অপারেশনে অগ্রণী ভূমিকা অব্যাহত থাকবে। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশ ভবিষ্যতে কুইক রিঅ্যাকশন ফোর্স (কিউআরএফ), বেজ্‌ ডিফেন্স কন্টিনজেন্ট, পদাতিক কন্টিনজেন্ট এবং পুলিশ কন্টিনজেন্ট পদায়নের জন্য প্রস্তুত রয়েছে। এছাড়া পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের নেতৃস্থানীয় পর্যায়ে বাংলাদেশ হতে সামরিক ও বেসামরিক উর্ধ্বতন কর্মকর্তা বিশেষ করে ফোর্স কমান্ডার নিয়োগের জন্যও আহ্বান জানান এবং নারী শান্তিরক্ষীদের সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতির কথা পুর্নব্যক্ত করেন। সংঘাতপূর্ণ দেশসমূহে টেকসই শান্তি রক্ষায় বাংলাদেশের দক্ষতা, অভিজ্ঞতা ও উত্তম অনুশীলন কাজে লাগানোর অনুরোধ জানান তিনি। বাংলাদেশে অনুষ্ঠিতব্য নারী, শান্তি ও নিরাপত্তা বিষয়ক আন্তর্জাতিক সেমিনার এবং শান্তিরক্ষী প্রশিক্ষণ কেন্দ্রসমূহের ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশনের ২৬তম কনফারেন্স-এ অংশগ্রহণের জন্য আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেলকে আমন্ত্রণ জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। ল্যাক্রুয়া বাংলাদেশী শান্তিরক্ষীদের কর্তব্যপরায়নতা, দায়িত্বশীলতা ও পেশাগত দক্ষতার প্রসংশা করেন। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ হতে সুদানের আবেইতে পদাতিক ব্যাটালিয়ন প্রেরণ, মালিতে আমর্ড্‌ হেলিকপ্টার এবং কুইক রিঅ্যাকশন ফোর্স কন্টিনজেন্ট মোতায়েন, মধ্য আফ্রিকায় হাতপাতাল ইউনিট প্রেরণ এবং কঙ্গোতে এক্সপ্লোসিভ অর্ডিনেন্স ডিস্‌পোজাল (ইওডি) কন্টিনজেন্ট মোতায়েনের জন্য বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানান। ভবিষ্যতে আরো নারী শান্তিরক্ষী মোতায়েনসহ জাতিসংঘের সার্বিক শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশ অব্যাহতভাবে অবদান রাখবে মর্মে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন ল্যাক্রুয়া।

[wps_visitor_counter]